মোস্তফা ওয়াদুদ
নিউজরুম এডিটর
আল-হাইআতুল উলইয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়া বাংলাদেশের ১৪৪২ হিজরি/২০২১ খ্রিস্টাব্দের কেন্দ্রীয় পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। পরীক্ষার গড় পাসের হার ৭৩.২৫। ছাত্রদের পাশের হার ৭৯.৪২। ছাত্রীদের পাশের হার ৬৩.৬৩।
প্রকাশিত ফলাফলে রাজধানীর জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদরাসা অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে। এবছর বারিধারা মাদরাসা থেকে তাকমিল পরীক্ষায় অংশ নেওয়া মোট শিক্ষার্থী ছিলো ২১৩ জন। এর মাঝে সারাদেশের মেধা তালিকায় স্থান লাভ করেছে ২জন। মুমতায পেয়েছেন ২৪ জন, জায়্যিদ জিদ্দান পেয়েছেন ১০০ জন ও জায়্যিদ পেয়েছেন ৬৩ জন।
আরও পড়ুন: তাকমিলে সারাদেশে দ্বিতীয় ও চতুর্থ হয়েছেন গোলাপবাগ মহিলা মাদরাসার নাজিয়া ও এশা
প্রতি বছরই বারিধারা মাদরাসা ইর্ষণীয় ফলাফল অর্জন করে। এবছর বেফাকের পরীক্ষায়ও বেশ কয়েকটি সিরিয়ালসহ ১০০% পাস করেছে এ মাদরাসার ছাত্ররা।
এদিকে মাদরাসার ছাত্রদের এমন ফলাফলে শুকরিয়া জ্ঞাপন করে মাদরাসার শায়খুল হাদিস ও নাজিমে তালীমাত মুফতি মকবুল হোসাইন কাসেমী আওয়ার ইসলামকে বলেছেন, প্রথমেই আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করি, যার মেহেরবানিতে আমাদের ছাত্ররা এমন ভালো রেজাল্ট করেছে। তারপর শুকরিয়া আদায় করি, মাদরাসার সম্মানিত শিক্ষক ও ছাত্রদের প্রতি, যাদের মেহনতের ফলে এমন রেজাল্ট সম্ভব হয়েছে।
আরও পড়ুন: তাকমিল পরীক্ষায় সারাদেশে প্রথম হয়েছেন মাদানীনগর মাদরাসার মাকতুম
সবশেষে সবার কাছে দোয়ার আবেদন করে তিনি বলেন, আমরা যেন এ ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ভবিষ্যতে আরো ভালো ফলাফল দেশবাসীকে উপহার দিতে পারি এবং আমলওয়ালা দক্ষ আলেম তৈরী করতে পারি। সেজন্য সবাই দোয়া করবেন।
জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদরাসাটি রাজধানীর বারিধারা এলাকায় অবস্থিত। এ মাদরাসাটি ১৯৮৮ সালে প্রতিষ্ঠিত। এর আমরণ প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল ছিলেন আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী রহ.। তিনি গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর ইন্তেকাল করেছেন। বর্তমানে মাদরাসার প্রধান শায়খুল হাদিস হিসেবে আছেন আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী রহ. এর দীর্ঘদিনের সহকর্মী ও ইতিহাসবীদ আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক। আর ভারপ্রাপ্ত মুহতামিমের দায়িত্ব পালন করছেন মাওলানা মাসউদ আহমদ।
আরও পড়ুন: তাকমিল পরীক্ষায় সারাদেশে প্রথম হয়েছেন মিফতাহুল জান্নাত মাদরাসার মাসুমা
এদিকে সারাদেশে মেধাতালিকায় পুরুষ শাখায় প্রথম হয়েছেন আল-জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানীনগর মাদরাসা সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জের শিক্ষার্থী মো. মাকতুম আহমেদ। তার মোট প্রাপ্ত নম্বর ৯৩৫। পুরুষ শাখায় দ্বিতীয় হয়েছেন জামিয়া রাব্বানিয়া আরাবিয়া, জালকুড়ি, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ মাদরাসার ছাত্র রেজাউল করীম নাঈম। তার মোট প্রাপ্ত নম্বর ৯৩১।আর তৃতীয় হয়েছেন জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম (দিলুরোড মাদরাসা) এর ছাত্র মো. গালিব আনোয়ার সিদ্দীকী। তার মোট প্রাপ্ত নম্বর ৯২৯।
আর মেধাতালিকায় সারাদেশে মহিলা শাখায় প্রথম হয়েছেন মিফতাহুল জান্নাত (মহিলা মাদরাসা) ৫৩ গলগন্ডা, মোমেনশাহীর ছাত্রী মাসুমা। তার মোট প্রাপ্ত নম্বর ৯০৩। দ্বিতীয় হয়েছেন জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মহিলা মাদরাসা, ৩৫/সি, উত্তর গোলাপবাগ, যাত্রাবাড়ী, ঢাকার ছাত্রী নাজিয়া সুলতানা। তার মোট প্রাপ্ত নম্বর ৮৯৩। একই মাদরাসার ছাত্রী কানিজ ফাতেমা এশা ৮৮৭ পেয়ে চতুর্থ হয়েছেন। তৃতীয় হয়েছেন আয়েশা রা. মহিলা মাদরাসা, লালখান বাজার, খুলশী, চট্টগ্রামের ছাত্রী মাইমুনা বিনতে রহীম উদ্দীন। তার মোট প্রাপ্ত নম্বর ৮৯১।
আরও পড়ুন: এসএমএসের মাধ্যমে জানা যাবে তাকমিল পরীক্ষার ফলাফল
আজ (১৮ জুলাই) রবিবার ফলাফল ঘোষণা করেন হাইআতুল উলইয়ার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মাওলানা মাহমুদুল হাসান। এসময় সভায় উপস্থিত ছিলেন হাইয়াতুল উলইয়ার সদস্য মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, মুফতি রুহুল আমিন, মাওলানা মাহফুজুল হক, মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা শামছুল হক, মাওলানা আব্দুল বছীর, মাওলানা আরশাদ রাহমানী, মুফতি মুহাম্মদ আলী, মাওলানা সাজিদুর রহমান, মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া, মাওলানা মুশতাক আহমদ খুলনা, মাওলানা নূরুল আমিন, মাওলানা নূরুল হুদা ফয়েজী, মাওলানা উবায়দুর রহমান মাহবুব, মাওলানা মুসলেহুদ্দীন গওহরপুরী, মাওলানা ফুরকানুল্লাহ খলীল, মুফতি জসীমুদ্দীন প্রমূখ।
আরও পড়ুন: হাইয়াতুল উলিয়ার ফল প্রকাশ, গড় পাশ ৭৩.২৫ শতাংশ
হাইয়াতুল উলইয়ার কেন্দ্রীয় পরীক্ষা উপকমিটির সদস্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মাওলানা মুহাম্মদ যুবায়ের, মুফতি আমিনুল হক, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মুফতী নাসীরুদ্দীন, মুফতি আহমদ আলী, মুফতী নূরুল ইসলাম, মুফতী ওবায়দুল্লাহ হামজা, মাওলানা মুহিব্বুলহ হক গাছবাড়ী, মুফতি এনামুল হক কাসেমী, মুফতি এমদাদুল্লাহ কাসেমী, হাইয়াতুল উলইয়ার পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাওলানা মুহাম্মদ ঈসমাইল বরিশালী, অফিস সম্পাদক মাওলানা অছিউর রহমান প্রমুখ।
আরও পড়ুন: হাইয়ার ফলাফল প্রকাশে চূড়ান্ত মিটিং চলছে
এবারের পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ছিল ২২,৩৪২ জন। উত্তীর্ণ হয়েছে ১৬,২৩২ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১১,৩৮০ জন এবং ছাত্রী ৪,৮৫২ জন। পাসের হার ছাত্র ৮২.১০, ছাত্রী ৫৭.২১। মুমতায (স্টার মার্ক) পেয়েছে ছাত্র ৯৩৩ জন এবং ছাত্রী ৫৬ জন। জায়্যিদ জিদ্দান (১ম) বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছে ছাত্র ৩,৫০০ জন, ছাত্রী ৭৭১ জন। জায়্যিদ (২য়) বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছে ছাত্র ৪,৮৯১ জন, ছাত্রী ২,২৮১ জন এবং মাকবূল (৩য়) বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছে ছাত্র ২,০৫৬ জন, ছাত্রী ১,৭৪৪ জন।
এমডব্লিউ/