আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর সেনা প্রত্যাহারের পর আফগানিস্তানের নারীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ। জার্মান গণমাধ্যম ডয়চে ভেলেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বাইডেন প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে ভুল হিসেবে অভিহিত করেছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষিতে ২০০১ সালে আফগানিস্তানে সেনা পাঠায় জর্জ ডাব্লিউ বুশ প্রশাসন। দুই দশক পর সেখান থেকে সব সৈন্য প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। একে ভুল হিসেবে অভিহিত করে ডয়চে ভেলেকে বুশ বলেন, আফগান নারীরা যে অবর্ণনীয় ক্ষতির মুখোমুখি হতে যাচ্ছে তা নিয়ে আমি ভীত।
তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিদেশি সেনাদের সঙ্গে কাজ করা আফগান অনুবাদকদের নিয়ে। বুশ বলেন, তাদেরকে এইসব নিষ্ঠুর মানুষের হাতে মৃত্যুর জন্য ঠেলে দেয়া হচ্ছে, যা আমার হৃদয়কে ভেঙে দিচ্ছে।
সাক্ষাৎকারে বুশ জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মার্কেলের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, সৈন্য প্রত্যাহার নিয়ে তিনিও একই মনোভাব পোষন করেন বলে তার ধারণা। আফগানিস্তান নিয়ে বুশের এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কাবুল ভিত্তিক সাংবাদিক আলী লতিফি তার প্রতিক্রিয়া জানান।
এতে তিনি বলেন, এটা খুবই কৌতুহলোদ্দীপক ব্যাপার যে তিনি হঠাৎ আফগান নারী ও শিশুদের নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। অথচ তার সময়ে অনেক নারী বিধবা হয়েছে মার্কিনিদের হামলায়।
গত মে মাস থেকেই আফগানিস্তান থেকে সেনা সরিয়ে নিতে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো। মার্কিন সামরিক বাহিনীর সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী এরই মধ্যে দেশটি থেকে ৯০ ভাগ সেনা তারা প্রত্যাহার করেছে। ৩১ আগস্টের মধ্যেই অবশিষ্ট সেনাদের ফিরিয়ে আনা হবে বলে উল্লেখ করেছেন বাইডেন। জুনেই আফগানিস্তান থেকে নিজেদের সমস্ত সেনা প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জার্মানি। উত্তর আফগানিস্তানের মাজার-ই-শরিফে জার্মানির কনস্যুলেট জেনারেলও এরই মধ্যে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আফগানিস্তান অভিযান সমাপ্তি ঘোষণা করেছে ইতালি। পোল্যান্ডও সম্প্রতি তাদের সব সেনা ফিরিয়ে এনেছে।
দেশটিতে মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদর দপ্তর হিসেবে পরিচিত কাবুলের বাগরাম বিমান ঘাঁটি থেকে ২ জুলাই সব সৈন্য প্রত্যাহারের মাধ্যমে সেখানকার কার্যক্রম গুটিয়ে ফেলে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো। এরিমধ্যে দেশটির রাজনৈতিক ও সামরিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব আফগান সরকারের হাতে ন্যাস্ত করেছে তারা। অন্যদিকে আফগানিস্তানের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে দেশটির উল্লেখযোগ্য একটি অংশের নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে তালেবানের হাতে।
এমডব্লিউ/