আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: আফগানিস্তান থেকে বিদেশি বাহিনী প্রত্যাহারের কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিচ্ছে তুরস্ক। এ ব্যাপারে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সমঝোতা হয়েছে হয়েছে আঙ্কারার।
তুর্কি সেনারা কীভাবে এই বিমানবন্দরের নিরাপত্তা রক্ষা করবে তার সব দিক সম্পর্কে বিস্তারিত চুক্তি হয়েছে। শুক্রবার এমন মন্তব্য করেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান।
৩১ আগস্টের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তার আগেই কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দায়িত্ব নিতে সম্মত হয়েছে তুরস্ক। এর মাধ্যমে ওয়াশিংটন ও আঙ্কারার মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের মধ্যে কথা হয়েছে। সেখানে আমরা জানিয়ে দিয়েছি, আমরা কতটুকু দায়িত্ব গ্রহণ করবো এবং কতটুকু করতে পারবো না।
এর আগে গত মাসে ব্রাসেলসে ন্যাটো জোটের শীর্ষ সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে কথা বলেন এরদোয়ান। সেখানে তুরস্ককে কাবুল বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে সম্মত হয় তুরস্ক। এজন্য এরদোয়ানকে ধন্যবাদ জানান বাইডেন।
আফগানিস্তানে কর্মরত পশ্চিমা কূটনীতিক ও কর্মীদেরকে নিরাপদে দেশটি থেকে বের করে নেওয়ার প্রধান রুট হচ্ছে কাবুল বিমানবন্দর। ন্যাটো ও মার্কিন সেনাদের প্রত্যাহার করে নেওয়া হলে তালেবানের হাতে বিমানবন্দরটির পতন হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে এটির নিরাপত্তা রক্ষার ওপর বাইডেন প্রশাসন ব্যাপক জোর দিচ্ছে।
২০০১ সালে মার্কিন হামলায় তৎকালীন তালেবান সরকারের পতন ঘটলে ন্যাটো জোটের অধীনে দেশটিতে কয়েকশ’ সেনা মোতায়েন করে তুরস্ক। তখন থেকে গত ২০ বছর দেশটিতে শত শত তুর্কি সেনা মোতায়েন ছিল। তবে কাবুল বিমানবন্দর পরিচালনার দায়িত্বে তুরস্ক বা কোনও বিদেশি শক্তিকে দেখতে চায় না তালেবান।
তালেবানের মুখপাত্র সুহেল শাহীন সম্প্রতি বলেছেন, ২০২০ সালের স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুসারে তুরস্কের উচিত নিজেদের সেনাদের আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার করা। দলটির দোহাভিত্তিক একজন মুখপাত্র রয়টার্সকে বলেছেন, ২০ বছর ধরে তুরস্ক ন্যাটোর অংশ ছিল। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ২০২০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারিতে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী তুর্কি সেনাদের আফগানিস্তান ছাড়তে হবে।
তালেবান মুখপাত্র আরও বলেন, তুরস্ক একটি মুসলিম দেশ। আফগানিস্তানের সঙ্গে তাদের ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। ভবিষ্যতে যখন আমরা নতুন ইসলামি সরকার গঠন করবো তখন তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ও ভালো সম্পর্ক প্রত্যাশা করি।
তালেবান বলছে, মার্কিন ও ন্যাটো সেনা প্রত্যাহারের পর বিদেশিদের আফগানিস্তানে সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখার ‘কোনও আশা’ রাখা উচিত নয়। দূতাবাস ও বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আফগানদেরই দায়িত্ব। তালেবানের এমন বিরোধিতার মুখেই শুক্রবার কাবুল বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দিলেন এরদোয়ান। সূত্র: রয়টার্স
-এটি