রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের বিকল্প নেই: তারেক রহমান জমিয়তের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হলেন শায়খ মাওলানা আবদুর রহীম ইসলামাবাদী কুমিল্লায় আন্তর্জাতিক ইসলামী মহাসম্মেলন আগামীকাল মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরীর ইন্তেকালে চরমোনাই পীরের শোক প্রকাশ জমিয়ত সভাপতি মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরী রহ.-এর বর্ণাঢ্য জীবন কওমি সনদকে কার্যকরী করতে ছাত্রদল ভূমিকা রাখবে: নাছির বড় ব্যবধানে জিতে প্রথমবারের মতো পার্লামেন্টে যাচ্ছেন প্রিয়াঙ্কা আইফোনে ‘টাইপ টু সিরি’ ফিচার যেভাবে ব্যবহার করবেন  স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণের দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক: ধর্ম উপদেষ্টা আল্লাহকে পেতে হলে রাসূলের অনুসরণ অপরিহার্য: কবি রুহুল আমিন খান

হাদীসের প্রমাণিকতা ও তার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতি আব্দুর রহিম: এব্যপারে উম্মতে মুহাম্মাদিয়া একমত যে, কোরআনে কারিমের পর দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ উৎস হাদীস। কিন্তু বিংশ শতাব্দির শুরুতে যখন মুসলমানদের উপর পাশ্চাত্য জাতিসমূহের রাজনৈতিক মতবাদের প্রভাব বেড়েছে, তখন স্বল্প জ্ঞানসম্পন্ন মুসলমানদের এমন একটি শ্রেণির উদ্ভব হয়েছে যারা পাশ্চাত্যের চিন্তা-গবেষণা দ্বারা সীমাহীন প্রভাবিত ছিলো। তারা মনে করতো পৃথিবীতে পশ্চাত্যের অনুসরণ ব্যতিত উন্নয়ন সম্ভব নয়। কিন্তু ইসলামের অনেক বিধিবিধান এই পথে প্রতিবন্ধক। এজন্য তারা ইসলামের বিকৃতির ধারা আরম্ভ করে। যাতে এটাকে পাশ্চাত্য চিন্তাধারা মোতাবেক তৈরি করা যায়।

এই শ্রেণিটিকে আহলে তাজাদ্দুদ বা আধুনিকতাবাদী বলে। হিন্দুস্তানে স্যার সৈয়্যদ আহমদ খান, মিসরে ত্বাহা হোসাইন, তুর্কিতে জিয়া পোগ আলফ এই শ্রেণির পথ প্রদর্শক। এই শ্রেণির উদ্দেশ্য ততোক্ষণ পর্যন্ত অর্জিত হতে পারেনি যতোক্ষণ পর্যন্ত হাদীসকে পথ থেকে না সরানো যায়। কারণ, হাদীসসমূহে জীবনের প্রতিটি শাখার সাথে সংশ্লিষ্ট এরূপ বিস্তারিত দিক-নির্দেশনা রয়েছে, সেগুলো পাশ্চাত্য চিন্তাধারার সাথে সুস্পষ্ট সাংঘর্ষিক। এ কারণে এই শ্রেণির কেউ কেউ হাদীসকে প্রমাণ হিসেবে মানতে অস্বীকার করে।

এ ডাক হিন্দুস্তানে সর্বপ্রথম স্যার সৈয়্যদ আহমদ খান ও তার বন্ধু মৌলভি চেরাগ দেয়। কিন্তু তারা হাদীস অস্বিকারের মতবাদ প্রকাশ্যে ও সুস্পষ্ট ভাষায় পেশ করার পরিবর্তে এ পদ্ধতি অবলম্বন করে যে, যেখানে কোন হাদীস নিজের দাবি পরিপন্থি পরিলক্ষিত হয়েছে, সেখানে এর বিশুদ্ধতাকে অস্বিকার করেছে। চাই এর সূত্র যতই শক্তিশালী হউক না কেন এবং সাথে সাথে কোথাও কোথাও এ বিষয়টিও প্রকাশ করে যে, এই হাদীসগুলো বর্তমান যুগে প্রমাণ নয়। এর সাথে সাথে কোন কোন স্থানে মতলব উদ্ধারে সহায়ক ও উপকারী হাদীসগুলো দ্বারা প্রমাণও দিতে আরম্ভ করে। এর মাধ্যমেই তারা বাণিজ্যিক সুদকে হালাল বলে মত প্রকাশ করেছে, মু’জিজাগুলোকে অস্বীকার করে, পর্দাকে অস্বীকার করে এবং বহু পাশ্চাত্য মতবাদকে বৈধতার সার্টিফিকেট দেয়।

হাদীস অস্বীকারের মতবাদ তাদের পর আরো উন্নতি হয় এবং এই মতবাদ কিছুটা সাংঘঠনিকভাবে আব্দুল্লাহ চকরালবির নেতৃত্বে সামনে অগ্রসর হয়। তিনি ছিলেন একটি ফিরকার প্রতিষ্ঠাতা। নিজেকে যিনি আহলে কুরআন বলতেন। তার উদ্দেশ্য ছিলো হাদীসকে পুরোপুরি অস্বীকার করা। এরপর আসলাম জয়রামপুরি আহলে কুরআন থেকে সরে এসে এই মতবাদকে আরো সামনে এগিয়ে নেয়। এমনকি গোলাম আহমদ পারভেজ এই ফিতনার নেতৃত্বে হাতে নেন এবং এটাকে একটি সুশৃঙ্খল মতবাদ ও চিন্তাধারার রূপ দেয়। যুবকদের জন্য তার লেখায় বিরাট আকর্ষণ ছিলো। এজন্য তার যুগে এই ফিতনা সবচেয়ে বেশি ছড়ায়। আমরা এখানে এই ফিতনার মৌলিক মতবাদের উপর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা করবো।

লেখক: সিনিয়র মুহাদ্দিস, জামিয়া ইসলামিয়া জহিরুদ্দিন আহমদ মাদরাসা মানিকনগর, ঢাকা।

-এএ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ