শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
কাল যাত্রাবাড়ী মাদরাসায় মজলিসে দাওয়াতুল হকের ইজতেমা শেখ হাসিনা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন: মজলিস মহাসচিব ডেঙ্গুতে এক সপ্তাহে ৩১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৬২৩০ মসজিদে নববীর আদলে হবে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ: ধর্ম উপদেষ্টা খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত নতুন নির্বাচন কমিশনকে বিগত কমিশন থেকে শিক্ষা নিতে হবে: মুফতী ফয়জুল করীম লালপুরে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে জমি দখল ও বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ জনতার চেয়ারম্যান সৈয়দ তালহাকে সুনামগঞ্জ ৩ আসনে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা কুরআন-হাদিসের ভিত্তিতেই হতে হবে সংস্কার: বায়তুল মোকাররমের খতিব ইসলামী সঙ্গীত সম্রাট আইনুদ্দীন আল আজাদ রহ.-এর বাবার ইন্তেকাল

করোনাকালে কিভাবে কাটছে মাদরাসা শিক্ষকদের জীবন!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

বিশ্বব্যাপী চলছে করোনা মহামারী। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ করোনা থেকে বাঁচতে লকডাউনের আশ্রয় নিয়েছে। তাতে পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, ‘একদিকে করোনা, অন্যদিকে লকডাউন’। এ যেন ‘মরার উপর খাড়ার ঘা’। গরীবরা এমনেই মরা। লকডাউনে আরও মরছেন তারা। মাদরাসা শিক্ষকরা অধিকাংশই মধ্যবিত্তের ফ্যামিলির। করোনার একালে কেমন আছেন তারা। কিভাবে কাটছে তাদের দিনকাল? এ বিষয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদনে আজ থাকছে দেশের দুই মাদরাসার দু’জন শিক্ষকের হালচাল। তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন আওয়ার ইসলামের নিউজরুম এডিটর মোস্তফা ওয়াদুদ।।


আর্থিক অবস্থা ভালো থাকলে, মুহতামিমদের উচিত করোনাকালে কোন শিক্ষকের বেতন বাকি না রাখা:মুফতি আরিফ জব্বার, শিক্ষক, জামিয়া উলুমে শরইয়্যাহ, গাজীপুর

গাজীপুর জেলার জামিয়া উলুমে শরইয়্যাহ মাদরাসার সিনিয়র শিক্ষক মুফতি আরিফ জব্বার। ভারতের দেওবন্দ থেকে দেশে এসে গত দুই বছর আগে শিক্ষক হিসেবে এ মাদরাসায় নিয়োগ পান তিনি। নিয়োগের পর থেকেই অন্তত সুনামের সাথে পাঠদান করাচ্ছেন তিনি। পড়িয়েছেন একাধিক কিতাব। বর্তমানে বুখারী শরীফের দ্বিতীয় খণ্ডের কিতাবুল ফিতান থেকে শেষ পর্যন্ত দরস দিচ্ছেন। তবে মাদরাসা বন্ধ থাকায় নিয়মিত দরস দিতে পারছেন না তিনি।

নিয়মিত ক্লাস করাতে না পারার বেদনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে দীর্ঘদিন মাদরাসা বন্ধ থাকায় ইলমের সাথে সেভাবে চর্চা হচ্ছে না। আমরা পড়তে ও পড়াতেই ভালবাসি। সুতরাং মাদরাসায় তালিম না দিয়ে যতটা ভালো থাকা যায়, আমরা তেমনই আছি।’

বেতনের কথা উল্লেখ করে মুফতি আরিফ জব্বার বলেন, ‘গতানুগতিক অন্যান্য মাদরাসার মতোই আমাদের বেতন কিছুটা বাকি থাকে। প্রতি মাসের বেতন প্রতি মাসে ক্লিয়ার হয় না। তবে আমাদের মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আশেকে মোস্তফা  গাজীপুরের একজন শীর্ষস্থানীয় মুরব্বি আলেম। তার আরও মাদরাসা রয়েছে। আমাদের মাদরাসায় শিক্ষক বেশি হওয়ার কারণে তিনি সব সময় বেতন পরিশোধ করতে পারেন না। তবে শিক্ষকদের বেতন পরিশোধ করার বিষয়ে তিনি খুবই সচেতন ও আন্তরিক।’

মাদরাসার এ শিক্ষক করোনাকালে কিতাব মুতালায়া, আবাসিক ছাত্রদের হাতের লেখা ও বিভিন্ন ইসলামী গবেষণায় সময় পার করছেন বলে জানালেন।

সাধারণ মুহতামিমদের প্রতি আহবান করে এ মাদরাসা শিক্ষক বলেন, ‘যদি মাদরাসার আর্থিক অবস্থা ভালো থাকে। তাহলে যেন করোনাকালের এই কঠিন মুহূর্তে অন্তত সাধারণ শিক্ষকদের পরিবার চলার মতো বেতন পরিশোধ করেন। অন্যান্য সময় বেতন পরিশোধ করতে না পারলেও করোনাকালে যেন কেউ বেতন বাকি না রাখেন।’


মাদরাসা থেকে আমার গত চার মাসের বেতন বাকি: মাওলানা সাইফুল ইসলাম
শিক্ষক, আনোয়ারুল উলুম ইসলামিয়া মাদ্রাসা, লস্করদিয়া, নগরকান্দা, ফরিদপুর

তিনি বলেন, মাদরাসা বন্ধ থাকায় বেশ মনক্ষুন্ন অবস্থায় পার হচ্ছে করোনাকাল। যদি মাদরাসাগুলো খোলা থাকতো তাহলে ছাত্রদের ক্লাস করাতে পারতাম। এর মাধ্যমে মন প্রফুল্ল থাকতো। পড়ালেখা বন্ধ থাকায় আমাদের আগের সেই প্রফুল্লতা নেই।

তিনি বলেন, এ মাদরাসায় (আনোয়ারুল উলুম ইসলামিয়া) আমি গত ৫ বছর পূর্বে সাধারণ শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাই। তাকমিল পর্যন্ত মাদরাসায় বর্তমানে আমি জালালাইন জামাতের হেদায়া কিতাব পড়াই। আমার মাদরাসা থেকে গত চার মাসের বেতন বাকি। আমার মতো আমাদের মাদরাসায় এমন অনেক শিক্ষকই আছেন, যাদের গত তিন থেকে চার মাসের বেতন বাকি।

তিনি বলেন, করোনাকালে মাদরাসার বেতন না পাওয়ায় আমরা বেশ সমস্যাতেই আছি। পরিস্থিতি এমন তৈরি হয়েছে যে, আমরা আমাদের সমস্যার কথা না পারি কারো কাছে মুখ ফুটে বলতে। আর না পারি সইতে। তবে আমরা সব সময় আল্লাহর উপরই ভরসা করে ধৈর্য ধারণ করি। আল্লাহ তায়ালাই আমাদের উত্তম ব্যবস্থা করবেন ইনশাআল্লাহ!

তবে এ শিক্ষক বলেন, আমাদের মাদরাসার মুহতামিম বেতন দেয়ার ক্ষেত্রে আন্তরিক। কিন্তু করোনাকালে ঐভাবে কালেকশন না হওয়ায় তিনি শিক্ষকদের বেতন দিতে পারছেন না।

তিনি বলেন, আমাদের মাদরাসায় বছরের তিন মৌসুমে কালেকশন করা হয়। প্রথমত: বাৎসরিক যাকাত। দ্বিতীয়তঃ কোরবানির চামড়া ও মৌসুমী ফসল। এবছর করোনার কারণে এর কোনটাই সঠিকভাবে আদায় হয়নি। তাই শিক্ষকদের বেতন দিতেও হিমশিম খাচ্ছেন মাদরাসার মুহতামিম।

এমডব্লিউ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ