আবদুল্লাহ তামিম।।
পাকিস্তানের প্রসিদ্ধ আলেম, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া পাকিস্তানের সভাপতি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম পাকিস্তানের শুরা সদস্য ও বিন্নুরী টাউন মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা ড. আব্দুর রাজ্জাক ইস্কান্দারের ইন্তেকালে শোকে স্তব্ধ হয়ে গেছে পাকিস্তানের আলেম সমাজ।
তার মৃত্যুতে আল্লামা তাকি উসমানি বলেন, ড. আব্দুর রাজ্জাক ইস্কান্দারের মৃত্যুতে শুধু পাকিস্তানের আলেম সমাজ নয় বরং গোটা পাকিস্তান একজন অভিভাবক হারিয়েছেন।
দ্বিতীয়বারের মত ৫ বছরের জন্য বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার পাকিস্তানের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার ১৩ দিন পরই তিনি আল্লাহর ডাকে সাড়া দিলেন তিনি।
১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া পাকিস্তান। বিশ্বের বৃহত্তম ইসলামী শিক্ষা বোর্ডসমূহের অন্যতম। পাকিস্তানের ১০ হাজারেরও বেশি মাদরাসা এবং প্রায় ৮ হাজার ইকরা স্কুল এই বোর্ডের অধিনে আছে। দেওবন্দের চিন্তাধারায় পরিচালিত এ বোর্ড সকল মাদরাসাগুলিকে দীর্ঘ দিনব্যাপী নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। হানাফি মাজহাবের অন্যতম আলেম ও স্কলার মাওলানা ড. আব্দুর রাজ্জাক ইস্কান্দের বোর্ডটির সভাপতি ছিলেন দীর্ঘ ৬ বছর।
ডা. আবদুর রাজ্জাক ইস্কান্দার (১৯৩৫-৩০ জুন ২০২১) বেফাকুল মাদারিস পাকিস্তানের সভাপতি, জামিয়াতুল উলুমিল আলইসলামিয়া বিন্নুরী টাউনের মুহতামিম আজ দুপুরে ইন্তিকাল করেন, ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
তিনি একজন পাকিস্তানী ইসলামী আলেম, গবেষক ও লেখক ছিলেন। তিনি আন্তর্জাতিক তাহাফফুজে খতমে নবুওয়াত পাকিস্তানের আমির ছিলেন।
প্রাথমিক জীবন এবং শিক্ষা
মাওলানা আবদুর রাজ্জাক ইস্কান্দার, ১৯৩৩ সালে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের একটি জেলা অ্যাবটাবাদের কোকালের একটি ধর্মপ্রাণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। মাদরাসা দারুল উলূম ছোহর শরীফ, হরিপুর ও সিকান্দারপুরের মাদরাসায় পড়াশোনা করেন।
তিনি দারুল উলূম করাচি অধ্যয়ন করেন। ১৯৫৬ সালে জামিয়া উলূম-উল-ইসলামিয়া থেকে দরস-ই-নিজামিতে স্নাতক লাভ করেন। তিনি জামিয়া উলূম-উল-ইসলামিয়া- এর প্রথম ছাত্র ছিলেন। পরে তিনি ১৯৬২ সালে মদিনার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। চার বছর ধর্মতত্ত্ব অধ্যয়ন করেন। তিনি ১৯৭২ সালে আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে ডক্টরাল পড়াশোনা শেষ করেন। তিনি মুহাম্মদ ইউসুফ লুধিয়ানভির অন্যতম ছাত্র ছিলেন।
কর্মজীবন
মাওলানা আবদুর রাজ্জাক ১৯৫৫ সালে তার শিক্ষার কর্মজীবন শুরু করেন। জামিয়া উলুম-উল-ইসলামিয়াতে শাইখুল হাদিস ও মুহতামিমের দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯৭ সালে বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া পাকিস্তানের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য নিযুক্ত হন। ২০০১ সালে সহকারি মহাপরিচালক হিসেবে নিযুক্ত হন। পরে তিনি আল্লামা সলিমুল্লাহ খানের মৃত্যুর পরে নয় মাসের কার্যনির্বাহী সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ৫ অক্টোবর ২০১৭-এ সভাপতি নিযুক্ত হন।
সাহিত্যকর্ম
তিনি বহু গ্রন্থ রচনা করেন। এর মধ্যে তাবলীগী জামায়াত ও এর দাওয়াতের নীতি ও পদ্ধতি আত তারিকাতুল আসরিয়া ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। সূত্র: ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাকিস্তান, উইকিপিডিয়া
-এটি