জুলফিকার জাহিদ।।
করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বৃহস্পতিবার থেকে সাত দিনের জন্য কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত সারা দেশে এই লকডাউন কার্যকর থাকবে। এ সময় সাধারণ মানষকে ঘরে থাকতে বলা হয়েছে। লকডাউন বিষয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর পক্ষ থেকে জরুরি বার্তা দিয়েছেন সংগঠননের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান।
জরুরি বার্তায় তিনি বলেন, দেশের সংকটকালে জনগণের দল হিসেবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর পক্ষ থেকে কিছু জরুরী কথা বলা প্রয়োজন বলে মনে করছি। আপনার জানেন জুলাই- এর ১ তারিখ থেকে নতুন করে কঠোর লোকজনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আমরা জানি লকডাউন মানে সীমাহীন দুর্ভোগ। অতএব এই লকডাউনকে কেন্দ্র করে জনমনে নতুন করে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
একটা বিষয় আমাদের ভাবতে অবাক লাগছে, লকডাউন করোনা প্রতিরোধের একমাত্র মাধ্যম নয়, অথচ সরকার বারবার লকডাউন-এর পথে হাঁটছে। সরকারের কর্মকাণ্ডে বারবার প্রমাণিত হয়েছে, করোনা থেকে সুরক্ষায় অন্য যত পন্থা রয়েছে সেগুলো অবলম্বন করতে সরকার ব্যর্থ হচ্ছে। বিশেষ করে গোটা বিশ্বে যখন করোনার ভ্যাকসিন ব্যাপকভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে ,এমনকি গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে ইতালিতে মাস্ক পরার বাধ্যবাধকতা উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। এসবের মাধ্যমে প্রমাণিত হচ্ছে অন্যান্য দেশ যখন সঙ্কট উতরিয়ে উঠছে আমাদের দেশ তখনও করোনার প্রাথমিক অবস্থায় পার করতে পারছে না।
তিনি বলেন, ভাবতে অবাক লাগে আমরা এখন করোনার ভ্যাকসিনের জন্য বিভিন্ন জায়গায় ধরনা দিচ্ছে এবং ভ্যাকসিন নিয়ে নানা ধরনের কেলেঙ্কারির কথাও শোনা যাচ্ছে। আমরা জানি শুরুতে চীন বাংলাদেশে ভ্যাকসিনের ট্রায়াল' দিতে চেয়েছিল, কিন্তু সরকারের একটি মহল প্রস্তাবকে কেন প্রত্যাখ্যান করেছিল আমরা তা জানিনা। এখন সরকারের পক্ষ থেকে চায়না, রাশিয়ার কাছে আবারও ধরনা দেওয়া হচ্ছে। এসব সরকারের অদূরদর্শিতা ও অযোগ্যতারই প্রমাণ বহন করে।
এখন নতুন করে লকডাউন দেয়া হচ্ছে। এসবে সবথেকে বেশি ভোগান্তির শিকার হয় দেশের খেটে খাওয়া সাধারন জনগন। আমরা দেখেছি দেশের শিল্প কারখানা গার্মেন্টস এগুলো খোলা রাখা হবে, কিন্তু অসহায় শ্রমিকেরা কিভাবে যাওয়া আসা করবে এজন্য কোন ব্যবস্থা নেই।
আজকে শিল্পপতিদের মুনাফা প্রবাহ যেন ঠিক থাকে সেজন্য তারা শিল্পকারখানাগুলো খোলা রাখছে, কিন্তু সাধারণ শ্রমজীবী, খেটে খাওয়া মানুষের প্রতি সরকারের নীতিনির্ধারকদের কোন দরদ দেখতে পাচ্ছি না। এসব কিছুই প্রমাণ করে সরকার দরিদ্রদের জন্য নয়, সরকারের সকল ব্যবস্থাপনা ধনী শ্রেণীর জন্য।
তিনি আরো বলেন, আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাব নতুন করে লকডাউন শুরুর আগে দেশের শ্রমজীবী ও দরিদ্র মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। খাদ্য নিরাপত্তার জন্য শুধু বরাদ্দ দিলেই হবে না। বরাদ্দ নিয়ে কি ধরনের খামখেয়ালী ও চুরির ঘটনা ঘটে এসব সবারই জানা, তাই আমাদের দাবী হল নতুন করে যে বরাদ্দ হবে এসব তৃণমূলে পৌঁছে দিতে প্রত্যেক এলাকার মসজিদের ইমাম সাহেবের নেতৃত্বে তা বন্টনের ব্যবস্থা করা হোক।
ভিডিওবার্তায় গাজী আতাউর রহমান আরো যোগ করেন, ইসলামী আন্দোলন একটি দায়িত্বশীল জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল দল, আমরা জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষার প্রতি সচেতন। তাই করোনা থেকে সুরক্ষায় অতীতের লকডাউনগুলো কেন ব্যর্থ হলো এগুলো সরকারকে খতিয়ে দেখতে হবে।
তিনি আরো যোগ করেন, আজকে মানুষ নিজেদের অধিকারের কথা বলতে ভয় পাচ্ছে,এই যে মানুষের মনে আতঙ্ক একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এসব কোনভাবেই কাম্য হতে পারে না। তাই একটি সভ্য ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে মানুষের বাক স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেওয়া হোক আমরা এটাই চাই।
এনটি