মোস্তফা ওয়াদুদ: নিখোঁজ আবু ত্বো-হা মুহাম্মদ আদনানকে খোঁজে দিতে আইনী সহায়তার আশ্বাস দিয়ে হাইকোর্টের ব্যরিস্টার সুমন বলেছেন, যদি তার পরিবারের কেউ আমার কাছে আসেন, আমি হাইকোর্টে মামলাটি রিট করতে চাই। যদি তাকে দু’একদিনে ভিতর না পাওয়া যায়, আর যদি সে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কারো কাছে থাকে, তাহলে হাইকোর্টের অর্ডারে অবশ্যই তাকে সামনে আনতে বাধ্য হবে।
আজ বুধবার (১৬ জুন) বিকালে ব্যরিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের ফেসবুক পেজে এক ভিডিও বার্তায় এ আইনী সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।
এ সময় তিনি বলেন, পরীমনিকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হলো। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ালো। সাথে সাথে এক দিনের মাথায় সকল আসামীকে গ্রেফতার করা হলো। প্রথম আলোর সাংবাদিক রোজিনাকে যখন এরেস্ট করা হলো। সারা বাংলাদেশের আমরা সবাই ফেটে পড়লাম। তারপর তার মুক্তি হল।
আপনারা জানেন, আবু ত্ব-হা মোহাম্মদ আদনান নামের একজন হুজুর,-যিনি ওয়াজ করতেন। আমি জীবনেও তাকে দেখিনি। কোনদিন তার ওয়াজ শুনিনি। কিন্তু চারদিন ধরে দেখলাম তিনি নিখোঁজ। তার স্ত্রী দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। একটি জিডিও করেছেন। কিন্তু তিনি, তার ড্রাইভার এবং দুজন সঙ্গিসহ চারজনকে চারদিন ধরে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, আমার কথা হচ্ছে যে, পরিমনির জন্য আমরা সারা দেশের মানুষ যেভাবে ঝাপিয়ে পড়লাম। আমি নিজেও ঝাঁপিয়ে পড়েছি। আমিও প্রতিবাদ করেছি। এভাবে-ধরেন হুজুর বাদই দেন! একজন সাধারন মানুষও যদি হারিয়ে যায়। তাহলে কি তিনি নিজে নিজে হারিয়ে গেলেন? নাকি তাকে কেউ অপহরণ করল? নাকি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আছে? এটা তো আসলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিষ্কার করতে হবে। যে সে কার কাছে আছে?
যদি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বলতে চান যে, তাদের কাছে নেই। তাকে এরেস্ট করা হয়নি। তার কোনো মামলা থাকলে তাকে এরেস্ট করতে পারেন। তার কোনো অপরাধ থাকলে তাকে আদালতের সম্মুখীন করতে পারেন। আইনের আশ্রয় নিতে পারেন। কিন্তু এই চারদিন ধরে তাকে না পাওয়াটা সাধারণ মানুষ হিসেবে আমরা একটি অশনিসংকেত বলে মনে করি।
তিনি বলেন, সরকারের জন্য এটি একটি বদনামের বিষয়। সরকার তো অবশ্যই এ ধরনের বদনাম নেয়ার কথা না। কোথাও থেকে চারজন মানুষকে চারদিন ধরে পাওয়া যাচ্ছে না। বা পাওয়া যাবে না। এটা হতে পারে না। আসলে সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়া কোন পত্র-পত্রিকায় আমি বিষয়টি ততটা দেখিনি। আমার চোখে পড়েনি।
তিনি বলেন, এটার দায়িত্ব কিন্তু পুলিশ প্রশাসনের। তাকে খুঁজে বের করা যে, তিনি কোন জায়গায় আছে? সেতো এমন হতে পারে যে, সে নিজে গুম হয়ে থাকতে পারে। অথবা তাকে কেউ গুম করতে পারে। অথবা পুলিশ বাহিনী বা যে কোন বাহিনীর কাছে তিনি থাকতে পারেন। যাই হোক না কেন! উচিত হবে, যত দ্রুত সম্ভব ন্যায়বিচারের স্বার্থে তাকে হাজির করা। না হয় বাংলাদেশের আইনে যে বিচার আছে, সেই বিচারের প্রতি মানুষ উদাসীন হয়ে যাবে। হতাশ হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, আজকে চারজন হারিয়েছে। এখানে আসলে হারানোর বিষয় নয়; এটা হলো মানুষের মনে যদি এ ধারণা তৈরি হয়ে যায় যে, এখানে গুম হয়ে গেলে আর বের হয়না। মানুষ তাহলে আতঙ্কিত হয়ে যাবে। এটা দেশের জন্য ভালো কাজ হবে না। এটা আইনের পরিপন্থী কাজ। এটা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য ও শুভ হবে না।
এমডব্লিউ/