ফরহাদ খান নাঈম।।
রাসুলুল্লাহ সা. দুধ পান করতে পছন্দ করতেন। ইমাম তিরমিযি রহ. এর বর্ণিত একটি হাদিস থেকে জানা যায়, দুধ ছিলো রাসুলুল্লাহ সা. এর সবচেয়ে পছন্দের পানীয়সমূহের একটি। তিনি সা. বলেন, দুধ ছাড়া অন্য কোনো পানীয়র মধ্যে খাদ্য ও পানীয়ের উপাদান একসাথে পাওয়া যায় না।
এই চমৎকার স্বাস্থ্যসম্মত পানীয়ের ব্যাপারে আরও অনেক হাদিস বর্ণিত আছে। তবে প্রথমেই দেখে আসা যাক, পবিত্র কোরআনে এ সম্পর্কে কী আছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন- আর গবাদি পশুর ভিতরে তোমাদের জন্য আছে অবশ্যই শিক্ষণীয় দৃষ্টান্ত। তাদের পেটে যা আছে তাত্থেকে আমি তোমাদেরকে পান করাই (দুধ) আর ওতে তোমাদের জন্য আছে বহুবিধ উপকার। তোমরা তাথেকে খাও (গোশত)। সূরা মুমিনুন: ২১।
উপরোক্ত আয়াতে আল্লাহ তায়ালা নিজেই দুধের নানাবিধ উপকারিতার কথা বলেছেন। বর্তমান চিকিৎসাবিজ্ঞানও একথা স্বীকার করে নিয়েছে। চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে, দুধ শরীরের পেশিশক্তি বাড়ায়, হাড় ও দাঁত মজবুত করে। তাছাড়া নিয়মিত দুধ পানে ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও দুধে রয়েছে বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ তথা ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম ও রিবোফ্লেভিনের অপূর্ব সমন্বয়।
রাসুলুল্লাহ সা. কখনোই দুধের হাদিয়া ফেরাতেন না। হাদিসে এসেছে- ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তিনটি বস্তু ফিরিয়ে দেয়া যায় না- বালিশ, সুগন্ধি তেল বা সুগন্ধি দ্রব্য এবং দুধ।’ তিরমিজি
নবীজি সা. দুধ পান করার পর একটি বিশেষ দোয়া পাঠ করতেন। তা হলো- اللهم بارك لنا فيه و زدنا منه উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফিহি ওয়াজিদনা মিনহু।’ অর্থ: হে আল্লাহ! এই খাবারে আমাদের বরকত দিন এবং তা বাড়িয়ে দিন।
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সা. বলেন, যখন তোমাদের কেউ দুধ পান করে, এই দোয়া পাঠ করবে। আবু দাউদ: ৩৭৩২। তবে দুধ পান করার শুরুতে অন্যান্য খাবারের মতো করে অবশ্যই বিসমিল্লাহ বলতে হবে।
এ ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সা. এর আরেকটি সুন্নাত হচ্ছে, দুধ পান করার পর ভালো করে মুখ পরিষ্কার করে নেওয়া। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সা. একবার দুধ পান করলেন। অতঃপর তিনি পানি চাইলেন। পানি আনা হলে তিনি পানি দ্বারা কুলি করলেন এবং বললেন, দুধে চর্বি রয়েছে। বুখারি ও মুসলিম।
দুধ আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য একটি বিশেষ নেয়ামত। আমাদের উচিত দুধ পানের ক্ষেত্রে পালনীয় সুন্নাতগুলো অনুসরণ করার মাধ্যমে আল্লাহর নিকট এই নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা।
-এটি