আন্দামান নওশাদ: ‘হিফজুল কুরআনের আলোকে হিফজুল হাদীস’ পদ্ধতির প্রস্তাবক মাওলানা আসাদুল্লাহ সুলতানের তিন পর্বের সাক্ষাৎকার ইতোমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে জনপ্রিয় অনলাইন পোর্টাল আওয়ার ইসলামে। সাক্ষাৎকার থেকে আপনারা জানতে পেরেছেন, তিনি কিভাবে এর উদ্বোধন করেছেন! কিভাবে বাংলাদেশে সম্পূর্ণ নতুন এক পদ্ধতির বিস্তার করতে যাচ্ছেন! তিনি কতটুকু সফলতা পেয়েছেন বা পাচ্ছেন এই হিফজুল কুরআনের আলোকে হিফজুল হাদিস পদ্ধতি আবিস্কার করে!
এবার আপনারা পড়ুন সেসব শিক্ষার্থীদের মতামত-যারা নিজেরা এ পদ্ধতিতে পড়াশুনা করেছেন। ‘হিফজুল কুরআনের আলোকে হিফজুল হাদীস’ পদ্ধতি ও রুটিন অনুযায়ী মেহনত করেছেন। তারা দীর্ঘদিন এ পদ্ধতিতে মেহনত করে কতটুকু সফল হয়েছেন। বছর শেষে নিজেদের মতামত কী এ বিষয়ে?
নিচে হিফজুল কুরআনের আলোকে হিফজুল হাদিস মাদরাসার প্রথম বছরের (১৪৪১-৪২ হিজরী) শিক্ষার্থীদের সংক্ষিপ্ত অনুভূতি তুলে ধরা হলো-
১. ‘হিফজুল কুরআনের আলোকে হিফজুল হাদীস’-এ অংশগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে হচ্ছে। প্রথমে এ সিস্টেমের ফলাফল নিয়ে দ্বিধায় ছিলাম। কারণ মুখস্থ হাদিস ভুলে যাওয়ার তিক্ত অভিজ্ঞতা ছিল দু’চার বছরের। অংশগ্রহণ করেই বুঝতে পারলাম এ পদ্ধতির উপকার ও গুরুত্ব। বলা দরকার, প্রথমে বুঝতেই পারিনি- ‘হিফজুল কুরআনের আলোকে হিফজুল হাদীস’ আসলে কী? আলহামদুলিল্লাহ! আমার কাছে মনে হচ্ছে এটি সফল প্রক্রিয়া। শীঘ্রই এর সফলতা সবাই দেখতে পারবেন ইনশাআল্লাহ। - শামিম আহমদ, শিক্ষার্থী, হিফজুল কুরআনের আলোকে হিফজুল হাদিস মাদরাসা।
২. ‘হিফজুল কুরআনের আলোকে হিফজুল হাদীস’- এর এই মেহনতে অংশ নিয়ে আশাতীত ফল পাচ্ছি। হাদীসের মতন, রাবি ও মুখাররিজের নামসহ মুখস্থ করে ধরে রাখা যে সম্ভব, এ বিশ্বাস হয়েছে অংশগ্রহণের পরেই। এখন হাদিস মুখস্থের একটি নেশা তৈরী হয়ে গেছে। ‘হিফজুল কুরআনের আলোকে হিফজুল হাদীস’ হৃদয়ে এই বিশ্বাস ঢেলে দিয়েছে যে, মুখস্থ হাদীস ভুলে যাওয়া এতো সহজ নয়।- যাকারিয়া মাহমুদ, শিক্ষার্থী, হিফজুল কুরআনের আলোকে হিফজুল হাদিস মাদরাসা।
৩. হাদীস মুখস্থের প্রতি আত্মবিশ্বাসের ক্ষীণ প্রদীপটুকুও যখন নিভতে বসেছিল, তখনই আত্মবিশ্বাসের একঝাক মশাল নিয়ে হাতছানি দিল ‘হিফজুল কুরআনের আলোকে হিফজুল হাদীস’। সে সময়ের মুখস্থ আর এসময়ের মুখস্থ- এ দু’য়ের মাঝে বিশাল পার্থক্য। তখন ছিলো ভুলে যাবার ভয়। এখন আঝে স্মরণ রাখার আশা। তখন এক হাদিস বার বার পড়তাম। আর এখন করি তামরীন-মুরাজা’য়াত। এখন দেই সবক-সাতসবক। তাই ভুলে যাওয়ার চিন্তাই করছি না। - নাঈম হাসান, শিক্ষার্থী, হিফজুল কুরআনের আলোকে হিফজুল হাদিস মাদরাসা।
৪. কোন বিষয় সরাসরি না দেখলে কিংবা নিজের সঙ্গে না ঘটলে বুঝা যায় না, আসলে বিষয়টি কী? ‘হিফজুল কুরআনের আলোকে হিফজুল হাদীস’- এর এই পদ্ধতির ক্ষেত্রে আমার তেমনই হয়েছে। এতে অংশ নিয়েই বুঝতে পেরেছি, হাদীস মুখস্থের স্থায়ীত্বের জন্য এটি যে একটি ফলপ্রসু মাধ্যম। আলহামদুলিল্লাহ! এখন ইলমী কোন প্রবন্ধ পড়লে হাদীসের যে নসগুলো পাই, অধিকাংশই আমার মুখস্থ। খুব ভাল লাগে এবং মনোযোগ বেড়ে যায় প্রবন্ধের প্রতি। আগ্রহ দ্বিগুন হয়ে যায়- নিজের মুখস্থ করা হাদীসগুলোর ভাব-মর্ম মুতালাআ করতে।- ইউনুস গাজী, শিক্ষার্থী, হিফজুল কুরআনের আলোকে হিফজুল হাদিস মাদরাসা।
৫. আমি কোনো পাঠ্য মুখস্থ করে চার-ছ’ঘন্টার বেশি রাখতে পারতাম না। তাই অবহেলা করে নুসুস খুব অল্পই মুখস্থ করেছি। শিক্ষাজীবনের প্রায় শেষ প্রান্থে এসে অনুশোচনা হচ্ছিল খুব। ভাবছিলাম স্থায়ীত্ব যেমনই হোক, অন্তত কিছু হাদীস মুখস্থ করা দরকার। এসব ভেবেই ‘হিফজুল কুরআনের আলোকে হিফজুল হাদীসে’ অংশগ্রহণ। কিন্তু অবাক তো হলাম এখানে এসেই। চার-ছ’ ঘন্টা স্থায়ীত্বের এ মুখস্থ মনের অজান্তেই দীর্ঘ দিনের বসতি গড়ে নেয় মেধায়-মননে। তামরীন-মুখস্থ স্থায়ীকরণের এক চমৎকার পদ্ধতি। ‘হাদীস বিষয়ক রোজনামচা’ পর্বটাও চিন্তাশক্তি বাড়ানোর জন্য ফলদায়ক। - সালাহুদ্দিন সাঈদ, শিক্ষার্থী, হিফজুল কুরআনের আলোকে হিফজুল হাদিস মাদরাসা।
এমডব্লিউ/