ইয়াহইয়া বিন আবু বকর
হাজারো অপমান, জুলুম- নির্যাতন, দমন-পীড়ন ও ইসলামোফোবিয়া সত্ত্বেও আলমানিয়ায় মুসলমানদের সংখ্যা দিনদিন বেড়েই চলেছে ৷ ২০১৫ সালের এক জরিপে দেখা গেছে মুসলমানদের সংখ্যা ৯ লাখ। সর্বশেষ ২০২০ এর শেষের দিকে চালানো এক জরিপে মুসলমানদের সংখ্যা প্রায় ৬০ লাখে গিয়ে দাড়িয়েছে।
মুসলমানদের সংখ্যা বৃদ্ধি এভাবে অব্যাহত থাকলে অদূর ভবিষ্যতে দেশটির ক্ষমতা মুসলমানদের হাতে চলে আসবে বলে ধারণা করছেন বিষেষজ্ঞরা। এছাড়াও অধিক সংখ্যক মুসলমানের দিক থেকে ফ্রান্স অন্যতম বৃহত্তম ইউরোপীয় দেশ। বিশেষজ্ঞদের মতে ইউরোপের দেশগুলোতে বিশেষ করে ফ্রান্সে মুসলমানদের জনসংখ্যা যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে দেশটি ২০-৩০ বছরের মধ্যে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে পরিণত হতে পারে। হল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি অনুযায়ী তার দেশে জন্মলাভ করা ৫০ শতাংশ শিশুই মুসলিম। মুসলমানদের সংখ্যাবৃদ্ধি পাওয়ায় মূলত ইসলামবিদ্বেষী ফ্রান্স সরকারের এত শত্রুতা, প্রপাগান্ডা এবং হিংসা।
আলজাজিরার তথ্যানুসারে আলমানিয়ায় বিভিন্ন ধর্ম ও বর্ণের লোক বাস করে। সে হিসেবে দেশটির মোট জনসংখ্যা ৮২ মিলিয়ন অর্থাৎ ৮ কোটি। তার মধ্যে ৯% হলো মুসলমা।৷ ৩৫% নাস্তিক ১% ইহুদী, বাকি সব খৃস্টান।
দেশটিতে মুসলমানদের সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধের হারও বেড়ে চলেছে ৷ কখনো বা শারিরিক নির্যাতন, কখনো বা মসজিদে হামলা। আবার চিঠি পাঠিয়ে এবং মসজিদের দেয়ালে পোস্টার লাগিয়ে হুমকি ও ইসলামের বিরুদ্ধে ঘৃণা প্ররোচিত করা হয়। আবার কখনো হিজাব পরা নারীদের পথেঘাটে অপমান, এবং সম্পত্তি বাজেয়াপ্তসহ আরো অনেক ঘৃণ্যতম অপরাধমূলক কর্মকান্ড মুসলমানের বিরুদ্ধে হরহামাশেই পরিচালনা করা হচ্ছে। যেমন ফ্রান্স সরকার ‘ইসলামোফোবিয়া’ এর মাধ্যমে অন্যান্য ধর্মালবলম্বীদের মাঝে ইসলাম সম্পর্কে ঘৃণা ও ত্রাস সৃষ্টি করছে। যাতে নতুন করে কেউ ইসলাম গ্রহণে আগ্রহী না হয়। এবং প্রচার করছে যে, ইসলাম হলো বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সন্ত্রাসী ধর্ম।
ইসলামবিদ্বেষীরা এভাবে শুধু ইসলামই নয়, ইসলামের পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ বিধান জিহাদকেও কলুষিতভাবে উপস্থাপন করে। এভাবে সন্ত্রাসী ও উগ্রপন্থী দমনের অজুহাতে নানাভাবে মুসলমানদের উপর নির্যাতন চালায় এবং তাদের ধর্মীয় বিষয়াদিতে নানাভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
আল কুদসের বিবৃতি মতে ২০১৭ থেকে এ পর্যন্ত ৩৫৫৯ টির ও বেশি হামলা ও অপরাধমূলক কর্মকান্ড মুসলমানদের বিরুদ্ধে পরিচালনা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭০০ আক্রমণই মসজিদের উপর। এছাড়াও অনেক মসজিদ জালিয়ে দেওয়া হয়েছে।
২০১৯ সালের মার্চ মাসে ২টি মসজিদে চরমপন্থিদের হালমায় ৫১ জনেরও বেশি মুসল্লি প্রাণ হারিয়েছিলো। গত বছর ডিসেম্বর মাসে এক মসজিদের ইমামকে শহিদ করে দেওয়া হয়েছিলো। তবে এত জুলুম নির্যাতন হওয়া সত্তেও দেশটির মুসলিমরা কোনরুপ চরমপন্থা অবলম্বন করেনি। বরং তারা ধৈর্যের পরিচয় দিচ্ছে এবং সরকারের কাছে আইনীভাবে এ সমস্ত সহিংসতা ও জুলুমের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবী জানাচ্ছে। সূত্র: আলজাজিরা ও আলকুদস
এমডব্লিউ/