আন্তার্জাতিক ডেস্ক: সমুদ্রের তলদেশে প্রবাহিত নীল কৃঞ্চ নদীর আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। এটি কৃষ্ণ সাগর অঞ্চলের একটি উপগ্রহ। যা সমুদ্রের গভীরতায় প্রবাহিত। এই নদীটি নীল, উচ্চ ঘনত্বযুক্ত ও দীর্ঘ দূরত্বের নদী হিসেবে পরিমাপ করেছেন বিজ্ঞানীরা। নদীটির গভীরতা প্রায় ৪০ মিটার।
বহুল পরিচিত ‘কৃষ্ণ সাগর’ পূর্ব ইউরোপ ও পশ্চিম এশিয়ার মধ্যে অবস্থিত একটি বিশেষ সামুদ্রিক অঞ্চল। প্রাচীন বিশ্বের বহু সমুদ্র বাণিজ্যে এই সাগরের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইউরোপ ও এশিয়ার একাধিক সমুদ্র এবং প্রণালীর সাথে যুক্ত রয়েছে কৃষ্ণ সাগর।
কৃষ্ণ সাগর পূর্ব ইউরোপ ও পশ্চিম এশিয়া অঞ্চল-কে পৃথক করেছে। এই সাগরের তীরবর্তী দেশগুলো হলো- বুলগেরিয়ার, রোমানিয়া, জর্জিয়া, রাশিয়া, তুরস্ক এবং ইউক্রেন। এই সাগরটি বহুপথ পাড়ি দিয়ে একাধিক প্রণালী এবং সাগরের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়ে অবশেষে আটলান্টিক মহাসাগরের সাথে মিশেছে। তবে কৃষ্ণ সাগরের সাথে আটলান্টিক মহাসাগরের সংযোগ অতটা সরল নয়। কৃষ্ণ সাগর প্রথমে বসফরাস প্রণালীর মাধ্যমে মর্মর সাগরের সাথে যুক্ত হয়েছে। এরপর দার্দানেলিস প্রণালীর মাধ্যমে এই সাগর সংযুক্ত হয়েছে এজিয়ান সাগরের সাথে। আর সেখান থেকে ভূমধ্যসাগর হয়ে সবশেষে জিব্রাল্টার প্রণালীর মাধ্যমে কৃষ্ণ সাগর আটলান্টিক মহাসাগরের সাথে সংযুক্ত হয়।
এছাড়া কৃষ্ণ সাগরের সাথে যুক্ত আরেকটি সাগর হল আজভ সাগর। কের্চ প্রণালীর মাধ্যমে সাগর দু’টি সংযুক্ত রয়েছে। কৃষ্ণ সাগরের আয়তন ৪ লক্ষ ৩৬ হাজার ৪০০ বর্গ কিলোমিটার। সাগরটির গড় গভীরতা প্রায় ৪১১১ ফুট এবং সর্বোচ্চ গভীরতা ৭২৫০ ফুট।
সমুদ্র বিজ্ঞানীরা বলছেন, কৃষ্ণ সাগরের নিচে প্রবাহিত ‘নীল কৃঞ্চ নদী’ যদিও হাজার হাজার বছর ধরে অস্তিত্বমান। কিন্তু আমরা এর আবিস্কার করতে পেরেছি চলমান জলবায়ূ আন্দোলনে নেমে।
এটি এখনো তার রূপ সৌন্দর্যকে রক্ষা করে চলেছে। পাশাপাশি ঘনত্বের বৈচিত্রের সাথে উভয় সমুদ্রের মিশ্রণকে বাধা দিয়ে স্বতন্ত্র মহিমায় প্রবাহিত হচ্ছে। এটি সমুদ্রের জলের উপর কাউকে নিয়ন্ত্রণ করতে দেয়নি। যদিও দেখতে সবসময় মিশ্রিত দেখা যায়।
বিস্ময়কর বিষয় হলো, সমৃদ্রের তলদেশে আরেকটি প্রবাহমান নদীর কথা গত চৌদ্দশত বছর পূর্বেই মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলে গিয়েছেন। পবিত্র কোরআনুল কারীমে মহান রাব্বুল আলামিন এরশাদ করেন, مَرَجَ الْبَحْرَيْنِ يَلْتَقِيَانِ তিনি পাশাপাশি দুই দরিয়া প্রবাহিত করেছেন। بَيْنَهُمَا بَرْزَخٌ لَّا يَبْغِيَانِ উভয়ের মাঝখানে রয়েছে এক অন্তরাল, যা তারা অতিক্রম করে না। (সুরা আর-রহমান, আয়াত: ১৯-২০)
এই রকম দুর্দান্ত দৃষ্টির সামনে একজন মুমিন কেবলমাত্র আল্লাহর কাছেই মাথানত করে নিজের ঈমানকে তাজা করতে পারে।
মোস্তফা ওয়াদুদ এর অনুবাদ
এমডব্লিউ/