মূল: শায়েখ মানসুর আস সালিমি
অনুবাদ: আব্দুল্লাহ নোমান
হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, اشفه انت الشافي لا شفاء الا شفاؤك شفاء لا يغادر سقما
অর্থাৎ প্রভু, আপনি আমাকে সুস্থতা করুন। আপনিই তো সুস্থতা দানকারী। আপনি ব্যতীত কেউ সুস্থতা দান করতে পারবেনা। আপনি আমাকে এমন সুস্থতা দান করুন যেনো আর কোনো রোগব্যাধি অবশিষ্ট না থাকে।" (আবু দাউদ ও ইবনে মাজাহ)
এক ব্যক্তির মেয়ে জন্মান্ধ ছিলো। ছোটবেলা থেকে চোখে দেখতোনা। ডাক্তাররা চোখের মাধ্যমে দেখার আশাই ছেড়ে দিয়েছিলো। কিন্তু মেয়েটি প্রতি জুময়ার দিন দোয়া কবুলের সময়ে এই দোয়া করতো। আল্লাহ তায়ালা এই দোয়ার কারণে তাকে এমনভাবে সুস্থ করে দিলেন যেনো তার পূর্বে কোনো রোগ ছিলোনা।
যারা কোনো বিপদেআপদে বা সমস্যায় জর্জরিত আছেন তাদের উচিত হলো, অসুস্থ অবস্থায় হজরত আইয়ুব আ. এর কৃত দোয়াকে নিজের জন্য আবশ্যক করে নেওয়া। তার দোয়ার ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বলেছেন, হে নবী, আপনি আইয়ুব আ. এর অসুস্থাবস্থার কথা স্মরণ করুন! যখন তিনি নিজ প্রতিপালককে ডেকে বলেছিলেন, প্রভু আমার, আমি তো রোগাক্রান্ত হয়ে পড়েছি। আর আপনি তো সীমাহীন দয়ার অধিকারী। তখন আমি তার ডাকে সাড়া দিয়ে রোগশোক দূর করে দিলাম। আর আমি নিজ অনুগ্রহে তার পরিবারকে পুনরায় ফিরিয়ে দিলাম যেমন পূর্বে তারা ছিলো। যেনো তা মানুষের জন্য উপদেশ গ্রহণের কারণ হয়।
এখানে একটি কথা না বললেই নয়, প্রত্যেক রোগব্যধি যা থেকে আমরা সুস্থতা লাভের জন্য দোয়া করে থাকি তা আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাদের জন্য একটি উপহার। আর দোয়ার মাধ্যমে আরোগ্যলাভ তখনই হবে যদি আপনার এ বিশ্বাসটুকু থাকে যে আল্লাহই একমাত্র আরোগ্য দানকারী।
আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আল্লাহ তায়ালার বানী, "এই কোরআন যা আমি নাজিল করছি তা মুমিনদের জন্য আরোগ্য এবং অনুগ্রহ। আর জালেমদের ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই বৃদ্ধি করেনা।"
আল্লাহ তায়ালা কোরআনের চেয়ে উত্তম এমন কোনো শেফা দান করেননি যা কোনো রোগব্যাধি দূর করার ক্ষেত্রে অধিক কার্যকর ও ফলপ্রসূ হয়ে থাকে।
ইবনুল কায়্যিম রহ. বলেন, আমি সুরা ফাতেহা পাঠ করে নিজের শরীরে ফুঁ দেওয়ার পর শরীরে আশ্চর্যজনক পরিবর্তন লক্ষ্য করেছি। আমি সুরা ফাতেহা পড়ে আমার পেটের ব্যথাযুক্ত স্থানে ফুঁ দিতেই নিমিষেই ব্যথা সেরে গেলো। আল্লাহর কসম, আমি এরচেয়ে উত্তম আরোগ্য দানকারী কিছু দেখিনি।
এটি হলো সুরা ফাতেহার বৈশিষ্ট্য। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাকে রুকইয়াহ বলে নামকরণ করেছেন। আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও সুরা ফাতেহা পড়ে গোত্রের সরদার আবু সাঈদ রাজি. এর উপর ফুঁ দিয়েছিলেন। ফলে তিনি এমনভাবে উঠে দাঁড়ালেন যেনো এইমাত্র ঘুম থেকে উঠেছেন। তবে এরজন্য আমাদের হজরত আবু সাইদ রাজি. এর মতো আল্লাহ তায়ালার প্রতি ঈমান,ভরসা এবং বিশ্বাস থাকা চাই।
হে প্রভু, আমি আপনার দরবারে ফিরে এসেছি। আমাকে যে দুঃখদুর্দশায় জর্জরিত দেখছেন তা থেকে মুক্তি দিন। বান্দা তার প্রভু ব্যতীত আর কাছেই বা আবদার জানাতে পারে!
-এটি