আওয়ার ইসলাম: বিসিএস ক্যাডার। বাংলাদেশের জন্য সোনার হরিণ। লক্ষ লক্ষ তরুণের স্বপ্ন থাকে বিসিএস ক্যাডার হওয়ার । কিন্তু দিনশেষে নির্দিষ্ট কোটার তরুণরাই এ পদে সমাসীন হতে পারে। অর্জন করতে পারে বিসিএসের মতো শক্তিশালী প্লাটফরম।
গত ৩৮ তম বিসিএসে সারাদেশে শিক্ষা ক্যাডারে মেধাতালিকায় প্রথম স্থানে যার নামটি জ্বলজ্বল করছে, তিনি একজন মাদরাসা ছাত্র। বাড়ী দেশের দক্ষিণাঞ্চল চট্টগ্রামে। নাম গাজী মুহাম্মদ ইমরোজ হোসেন। ৩৮তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফলে তিনি হয়েছেন সেরাদের সেরা। অর্জন করেছেন প্রথম স্থান।
চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার জঙ্গলখাইন ইউনিয়নের এয়াকুবদন্ডী এলাকার গাজী পাড়ার সন্তান গাজী মুহাম্মদ ইমরোজ হোসেন। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের সিলেট শাখায় প্রভিশনাল অফিসার হিসেবে কর্মজীবনে পা দেন ২০১৯ সালে। এর দুই বছর আগে দেওয়া বিসিএস পরীক্ষার ফল বের হয় মঙ্গলবার (৩০ জুন)। ৩৮তম এই বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফলে ২ হাজার ২০৪ জন প্রার্থীকে ক্যাডার পদের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।
গাজী মুহাম্মদ ইমরোজ হোসেন পটিয়ার শাহচাঁন্দ আউলিয়া কামিল মাদরাসা থেকে ২০০৯ সালে গোল্ডেন-এ প্লাস পেয়ে দাখিল এবং একই মাদরাসা থেকে ২০১১ সালে মানবিক বিভাগে এ প্লাস পেয়ে আলিম পাশ করেন। পরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন তিনি।
ইমরোজ বলেন, ‘আমি পড়ালেখার ক্ষেত্রে কোন ধরনের কম্প্রোমাইজ করতাম না। সময়ের কাজ সময়ে শেষ করতাম।’
ইমরোজ বলেন, ‘৩৮ তম বিসিএস পরীক্ষা দিয়েছি ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে। বাবা-মা চেয়েছিলেন আমি যেন প্রশাসন ক্যাডারে যাই। কিন্তু আমার ধ্যান-জ্ঞান ছিল শিক্ষা ক্যাডার।’
তিনি বলেন, ‘যদিও বাবা-মায়ের কথা রাখতে গিয়ে ফরমে প্রথম পছন্দ হিসেবে প্রশাসন ক্যাডার দিয়ে দ্বিতীয় পছন্দ দিয়েছিলাম শিক্ষা ক্যাডার। আমি মনে করি, প্রশাসনসহ অন্য ক্যাডারের চাকুরেরা তাদের কাজের বাইরে কিছুই করতে পারেন না। কিন্তু একজন আদর্শ শিক্ষক তার মনের সৃজনশীলতাকে প্রকাশ করে দেশ ও জাতির জন্য কাজে লাগাতে পারেন এবং অনেক মানুষের মনে জায়গা করে নিতে পারেন। মানুষ গড়ার কারিগরের এমন পেশায় যুক্ত হতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছি।’
ইমরোজের বাবা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ গাজী মুহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, ‘পড়ালেখার প্রতি তার প্রবল আগ্রহ ছিল সবসময়। আমি নিজে দেখেছি সারা রাত জেগে থেকে পড়াশোনা করেছে। অবশেষে কষ্টের ফল পেয়েছে সে।’
তার গৃহিণী মা নুর আয়েশা বেগম বলেন, ‘ভালোভাবে পড়াশোনা করলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা শিক্ষার্থীরাও বিসিএস ক্যাডার হতে পারে। প্রতিবারই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী বিসিএসে উত্তীর্ণ হচ্ছে। আমার ছেলে ছাত্র হিসেবে খুবই মেধাবী। ইসলামী শিক্ষায়ও সমানভাবে পারদর্শী। তার এই সাফল্যে আমি মা হিসেবে আমি খুবই আনন্দিত ও গর্বিত।’
সূত্র: শিক্ষা বার্তা।
এমডব্লিউ/