আওয়ার ইসলাম: ‘যুদ্ধ বিমান থেকে বোমা নিক্ষেপ, চারপাশে গুলির আওয়াজ, আপনজনদের মৃত্যু সংবাদ শুনতে শুনতে মৃত্যুভয় নিয়ে কোনোমতে বেঁচে থাকার এই সময়টিতে আমি কোরআন লেখার কাজ শুরু করি। শুরুর দিকে বাড়ির কাউকে বুঝতে দেইনি। পরে তারা অনুধাবন করেন, আমি কছিু একটা করতে যাচ্ছি। এভাবে প্রতিদিন পবিত্র কোরআনের তিন পৃষ্ঠা করে লিখতে থাকি। বিশ্বাস করুন, আমার কখনও ক্লান্তি আসেনি। অবশেষে কাজটি শেষ হলো।’
কথাগুলো বলছিলেন যুদ্ধের আঘাতে জর্জর সিরিয়ার ক্যালিগ্রাফার আহমেদ নাজিব। তিনি নীরবে সাধনা করে মনের ভেতরে পুষে রাখা একটি স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন। দীর্ঘ তিন বছর সময় নিয়ে হাতে লিখে শেষ করেছেন পবিত্র কোরআন। শুধু লেখা নয়, পৃষ্ঠার অঙ্গসজ্জাও করেছেন নান্দনিকভাবে।
সিরিয়ার এই ক্যালিগ্রাফর বসবাস করেন ইদলিবের উপকণ্ঠ মিলিস গ্রামে। ক্যালিগ্রাফি করে জীবন নির্বাহ করেন। প্রায় এক যুগ আগে থেকেই স্বহস্তে পবিত্র কোরআন লেখার কথা ভাবছিলেন, অবশেষে তিনি তার ইচ্ছাপূরণ করতে সক্ষম হন।
আসলে বিভিন্ন সময় মানুষ নানাভাবে তাদের প্রতিভার বিকাশ ঘটিয়ে থাকেন। অনেকে আবার শখের বশে কোনো কাজ করে আলোচনার জন্ম দেন। কেউ আবার নীরবে-নিভৃতে কিছু সাধনা করে, পরিশ্রম করে নিজের স্বপ্ন কিংবা ইচ্ছাপূরণ করে আত্মতৃপ্তিবোধ করেন। আহমেদ নাজিব তাদেরই একজন। কোরআনে কারিমের একটি পৃষ্ঠা লিখতে প্রায় এক ঘন্টার মতো সময় লেগেছে, কখনও কখনও বেশি সময় লেগেছে।
কোরআন লেখার কাজকে তিনি কোনোভাবেই নিজের কৃতিত্ব বলতে চাল না নাজিব। তার বিশ্বাস এটা সর্বশক্তিমান আল্লাহ তায়ালার বিশেষ দয়া। তার মতে, ‘হ্যাঁ, কাজটি বাহ্যত আমি করেছি। কিন্তু ইচ্ছা আর প্রতিভাতো আল্লাহ দিয়েছেন।’
-এটি