সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


স্মৃতির পাতায় ছড়াকার হাফেজ আহমাদ উল্লাহ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মাসউদুল কাদির।।

আমরা একে একে গুণীজনদের হারাচ্ছি। হাতে কলমে যিনি তারুণ্যকে সঙ্গ দিয়েছিলেন, তারুণ্যের বুকে এঁকে দিতে পেরেছিলেন সাহস সেই মানুষটি আর নেই। আমরা চাইলেই কাউকে পৃথিবীতে দুইদিন বেশি রাখতে পারবো না। চলে গেলেন আমাদের প্রিয় ভাই ছড়াশিল্পী আহমাদ উল্লাহ। আহমাদ উল্লাহ ভাই এই ঢাকায় অনেককেই তুই তুকারি করে বলতেন। আমাকেও তিনি এভাবেই সম্বোধন করতেন। গত বইমেলায় আমি তার একটি কিনেছিলাম।

ফোন করে আবার জানালাম, ভাই আপনার বইটি আমি সংগ্রহ করেছি। আমার জানা ছিলো না, তার জীবদ্দশায় এটিই তার শেষ বই। হাফেজ আহমাদ উল্লাহ ভাই দৈনিক যুগান্তরের সাবেক সিনিয়র সহসম্পাদক ছিলেন। আমরা তাকে হারালাম । (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন)। আল্লাহ তার কবরকে জান্নাতের নূর দিয়ে ভরপুর করে দিন।

বন্ধুবর মুহসিন আল জাবির আমাকে ফোন করে জানালেন, তিনি আর নেই। সফররত ছিলাম। তার ইন্তেকালের খবরটা শুনে খারাপ লাগাটা স্বাভাবিক। আমি তখন স্মৃতির মিনারায় আহমাদ উল্লাহ ভাইয়ের হাস্যোজ্জ্বল চেহারাটা দেখতে পাই। তিনি কতটা আপন করে নিতে পারতেন তরুণদের। এই ভালোবাসা খুবই বিরল। তরুণদের কাজে যুক্ত করার মিশন ছিলো তার। যুগান্তরে লেখা ছেপে সেই সাহসিয়া স্বপ্ন তারুণ্যের বুকে জাগিয়ে দিতে পেরেছিলেন। মানুষটি ভুলে যাওয়া অতটা সহজ নয়।

তিনি জানালেন, বুধবার রাত ১০টা ৫ মিনিটে রাজধানীর হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর।

আহমাদ উল্লাহ ভাইয়ের ছেলে সুচয়ন শামসও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সুচয়ন শামস জানান, দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিক আহমাদ উল্লাহ কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। শেষদিকে তার দুটি কিডনি অকেজো হয়ে যায়। গত কয়েক দিন ধরে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন এ গুণী সাংবাদিক। অবশেষে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন।

হাফেজ আহমাদ উল্লাহ দৈনিক যুগান্তরের শুরু থেকেই পত্রিকাটির সঙ্গে ছিলেন। ২১ বছরের বেশি সময় তিনি যুগান্তরের ‘ইসলাম ও জীবন’ পাতাটি সম্পাদনা করেন। এর বাইরেও দীর্ঘদিন 'ঢাকা আমার ঢাকা', ‌কৃষি' ও 'পরবাস' পাতার দায়িত্বে ছিলেন।

তিনি ছিলেন হাফেজ, সুফি গবেষক, সাংবাদিক, কথাসাহিত্যক, ছড়াকার, লেখক। সংবাদপত্রে ইসলামি ফিচারের জনক তিনি।

আহমাদ উল্লাহর জন্ম ১ নভেম্বর ১৯৫৮ নরসিংদীতে। তিনি কুরআনের হাফেজ ছিলেন এবং সরকারি তিতুমীর কলেজ থেকে ‍উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন।

ছড়াকার হিসেবেও তার পরিচিতি ছিল। তার প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- ১. বকলম (১৯৮৩) ২. ইনুনি বিনুনি (১৯৮৬) ৩. কাঁচাগাব পাকাগাব (১৯৯০) ৪. আয় ছেলেরা আয় মেয়েরা (১৯৯২) ৫. পাঁচ কুড়ি ছড়া (১৯৯৭) ৬. চিরদিনের রূপবান (১৯৯০) ৭. হারিয়ে যেতে নেই মানা (১৯৮৮) ৮. রাজাকারের কেচ্ছা (১৯৯০)। এছাড়া পঞ্চম জাতীয় সংসদ সদস্য প্রামাণ্যগ্রন্থটি (১৯৯২) তিনি সম্পাদনা করেন।

-কেএল


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ