প্রশ্ন: মুফতী সাহেবের কাছে জানার বিষয় হলো, ক্রেডিট কার্ড ও এটিএম কার্ড ব্যবহার করার ইসলামী বিধান কি? দয়া করে বিস্তারিতভাবে জানিয়ে উপকৃত করবেন।
নিবেদক
মুহাম্মদ আবু তালহা
কেরানিগঞ্জ, ঢাকা
জবাব: বর্তমানে তিন ধরণের কার্ড প্রচলিত আছে। সাধারণ মানুষ সবগুলোকে ক্রেডিট কার্ড বললেও সবগুলোর পৃথক পৃথক নাম এবং পার্থক্য রয়েছে। নিম্নে সেগুলোর হুকুমসহ পরিচয় দেওয়া হলো,
এক. ডেবিট কার্ড: এই কার্ডের গ্রাহকের পূর্ব থেকেই কার্ড সরবরাহকারী ব্যাংকে একাউন্ট থাকে। গ্রাহক কার্ডটি যখন ব্যবহার করে ব্যাংক গ্রাহকের একাউন্ট থেকে খরচকৃত টাকা কেটে নেয়। এ ক্ষেত্রে কার্ডধারী ব্যাক্তির অতিরিক্ত ঋণ গ্রহণ করার সুবিধা থাকে না বরং সে ততক্ষণই কার্ড ব্যবহার করতে পারে যতক্ষণ তার একাউন্টে টাকা জমা থাকে। এবং ব্যাংক এই সেবার বিনিময়ে বাৎসরিক ফি নিয়ে থাকে। এধরণের কার্ড ব্যবহার করা জায়েয। এর দ্বারা যে কোন ধরণের কেনাবেচা করা জায়েয হবে। কারণ এর মধ্যে সুদ পাওয়া যায় না।
দুই. চার্জ কার্ড: এই কার্ডের গ্রাহকের পূর্ব থেকেই কার্ড সরবরাহকারী ব্যাংকে একাউন্ট থাকে না। বরং কার্ড সরবারহ করার মাধ্যমে ব্যাংক গ্রাহককে ঋণ নেওয়ার সুযোগ দিয়ে থাকে। নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে গৃহিত ঋণ পরিশোধ করে দিতে পারলে অতিরিক্ত সুদ দিতে হয় না। কিন্তু নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে পরিশোধ করতে না পারলে নির্ধারিত হারে সুদ দিতে হয়। এবং ব্যাংক এই সেবার বিনিময়ে বাৎসরিক ফি আদায় করে থাকে। এই ধরণের কার্ডের ব্যবহার নিম্নোক্ত শর্তে জায়েয। যথা:
ক. কার্ড গ্রহনকারী এই মর্মে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করবে যে নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে অবশ্যই ঋণ পরিশোধ করে দিবে। যাতে কোনভাবেই সুদ আসার সম্ভাবনা না থাকে।
খ. গ্রাহক এই ব্যাপারেও প্রতিজ্ঞা করবে যে শরীয়ত বিরোধী কোন কাজেএই কার্ড ব্যবহার করবে না।
গ. যদি ডেবিট কার্ড দ্বারা প্রয়োজন মিটে যায় তাহলে চার্জ কার্ড ব্যবহার না করাই উত্তম।
তিন. ক্রেডিট কার্ড: এই কার্ডের গ্রাহকেরও পূর্ব থেকেই কার্ড সরবরাহকারী ব্যাংকে একাউন্ট থাকে না। বরং এখানে গ্রাহক ও ব্যাংকের মাঝে ঋণের বিনিময়ে সুদ দেওয়ার উপর চুক্তি হয়। (যদিও ব্যাংক তাকে একটা মেয়াদ নির্ধারিত করে দেয়, যেই মেয়াদের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করে দিতে পারলে অতিরিক্ত সুদ দিতে হয় না।) শরিয়তের দৃষ্টিতে এই কার্ড ব্যবহার জায়েয নেই। কারণ চুক্তিটি সম্পূর্ণই সুদের উপর সম্পাদিত হয়ে থাকে। তবে যদি ডেবিট কার্ড ও চার্জ কার্ড এর ব্যবস্থা করা কোনভাবেই সম্ভব না হয় তাহলে উপরোক্ত তিনটি শর্তে উক্ত কার্ড ব্যবহার করার অবকাশ আছে।
চার. এটিএম কার্ড: ব্যাংক থেকে প্রকাশিত একটি কার্ডের নাম। (automated transfer machine) উক্ত কার্ডের মাধ্যমে গ্রাহক যে কোন সময় এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলন করতে পারেন। শরিয়তের দৃষ্টিতে এই কার্ড ব্যবহার জায়েয আছে।
المراجع والمصادر:
(১) سنن الترمذى رقم الحديث১২২৩
عن ابن مسعود، قال: لعن رسول الله صلى الله عليه وسلم آكل الربا وموكله وشاهديه وكاتبه. وفي الباب عن عمر وعلى وجابر. حديث عبد الله حديث حسن صحيح.
(২) مُصنف ابن أبي شيبة، رقم الحديث: ২১০৭৮
حدثنا حفص، عن أشعث، عن الحكم، عن إبراهيم، قال: كل قرض جر منفعة، فهو ربا.
(৩) فتاوی عثمانی ২/৩৫৪
جواب:۔ آج کل رائج کارڈ کی تین اقسام پائی جاتی ہیں:
১۔ ڈبیٹ کارڈ۔۔۔ اس کارڈ کو استعمال کرنا بلا شبہ جائز ہے اور اس کے ذریعے خرید فروخت کرنا درست ہے، کیونکہ اس میں نہ قرض کی صورت ہے، نہ سود کی۔ البتہ حامل بطاقہ کی يہ ذمہ داری ہوگی کہ وہ اس کارڈ کو غیر شرعی امور میں استعمال نہ کرے۔
২۔ چارج کارڈ۔۔۔ اس کارڈ کو مندرجہ ذیل شرائط کے ساتھ استعمال کرنا جائز ہے:
حامل بطاقہ اس بات کا پورا انتظام کرے کہ وہ معین وقت سے پہلے پہلے ادائیگی کردے اور کسی بھی وقت سود عائدہونے کا کوئی امکان باقی نہ رہے۔
حامل بطاقہ کی یہ ذمہ داری ہو کہ وہ اس کارڈ کو غیر شرعی امورمیں استعمال نہ کر ے۔
اگر ضرورت ڈبیٹ کارڈ سے پوری ہو رہی ہو تو بہتر ہے کہ اس کارڈ کو استعمال نہ کرے۔
৩۔ کریڈٹ کارڈ۔۔۔ اس کا حکم یہ ہے کہ اس کارڈ کا استعمال جائز نہیں ہے الاّ یہ کہ ڈبیٹ کارڈ یا چارج کارڈ الگ سے مہیا نہ ہو اور اس کو ڈبیٹ کارڈ یا چارج کارڈ کی طرح مذکورہ بالا شرائط کے ساتھ استعمال کیا جاۓ۔
৪۔ ان کے علاوہ کارڈ کی ایک قسم ہے جس کو ((automated transfer machine) کہتے ہیں، ۔۔۔ اس کارڈ کا حکم یہ ہے کہ اس کو استعمال کرنے پر اگر متعین مشین کے استعمال کی اجرت کے طور پر ادارہ وصول کرے جو مقدار رقم سے قطع نذر ہو تو جائز ہے۔
(৪) کتاب النوازل ১১/৩৩২ و ১১/৩৩৪
উত্তর লিখনে
মুফতি আবুল ফাতাহ কাসেমি
উস্তাদ, জামিয়া কারীমিয়া আরাবিয়া রামপুরা, ঢাকা।
-এএ