প্রশ্ন: সম্মানিত মুফতি সাহেব! আমার ভাইকে একজন বলেছে, আপনি স্ত্রী সহবাসের পর ইবাদত ছাড়া অন্যসব কাজ করতে পারবেন। এমনকি অফিসে যাওয়া, চাকরি-বাকরি করা, ভাত খাওয়া ইত্যাদি। এ প্রসঙ্গে তিনি বুখারি শরিফের একটি হাদিস দিয়ে প্রমাণ দেখায়। আমার প্রশ্ন হলো, আদৌ এ ধরণের কোন হাদিস আছে কি না? আমরা তো জানি সহবাসের পর যত দ্রুত সম্ভব পবিত্র হয়ে নেয়া উচিৎ। এ ধরণের কোন হাদিস থাকলে ওই হাদিসের জবাব কী? দয়া করে জানাবেন।
নিবেদক
মুসলিম উদ্দিন
জবাব: স্ত্রী সহবাসের পর ইবাদত ছাড়া অন্যসব কাজ যথা খাওয়া দাওয়া ইত্যাদি করা যাবে তবে সহবাসের পর দু’ হাত ও মুখ ধুয়ে নেয়া মুস্তাহাব। নামাযের ওয়াক্তের পূর্ব পর্যন্ত যদিও গোসল বিলম্ব করলে গুনাহ হবে না কিন্তু বিলম্ব না করা উত্তম। নাপাক অবস্থায় নামাযের ওয়াক্ত হয়ে গেলে গোসল করা ওয়াজিব। বিলম্ব করা মাকরুহ। তবে কোন ওযর ছাড়া পবিত্র না হয়ে অফিস আদালতে যাওয়া, কর্মক্ষেত্রে অবস্থান করা কোনক্রমেই উচিৎ নয়। তাছাড়া নাপাক অবস্থায় নাপাকি বহন করে অনর্থক চলাফেরা করা পরিচ্ছন্নতা ও রুচিবোধের বিপরিত।
বুখারী শরীফসহ হাদীসের অনেক কিতাবে এমন অনেক হাদিস (বুখারী: ২৮৪,২৮৫) রয়েছে যেসব হাদিস দ্বারা বুঝা যায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সহবাসের পর গোসলে বিলম্ব করেছেন। নামাযের অযুর ন্যায় অযু করে (গোসলহীন) ঘরে অবস্থান করেছেন। (বুখারী: ২৮৬)। তবে আরেক হাদিসে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ঘরে জুনুবি ব্যক্তি থাকে সে ঘরে রহমতের ফেরেস্তা প্রবেশ করে না (আবু দাউদ:২২৭)। সব হাদীস সামনে রাখলে বুঝা যায়, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সহবাসের পর গোসলে বিলম্ব করেছেন উম্মতের সহজতার জন্য তবে নাপাক হওয়ার পর কোন কারণ ছাড়া বিলম্বে গোসল করা কোনভাবেই কাম্য নয়। যত দ্রুত সম্ভব পবিত্র হয়ে নেয়া উচিৎ।
প্রখ্যাত হাদীস বিশারদ হাফেজ ইবনে হাজর আসকালানী রহ. বলেন, যে জুনুবি ব্যক্তি নাপাক অবস্থায় গোসল বিলম্ব করে এবং এটাকে অভ্যাস বানিয়ে নেয়, অলসতার কারণে গোসল করে না সে জুনুবি ব্যক্তির ঘরে রহমতের ফেরেস্তা প্রবেশ করে না। বর্তমান সময়ের প্রখ্যাত হাদীস বিশারদ মুফতী সাইদ আহমদ পালনপুরী দা. বা . বলেন, জুনুবি ব্যক্তি গোসলের পূর্বে পানাহার, লেনদেন ও ঘরে অবস্থান করতে পারবে তবে ফজিলতের প্রথম স্তর হল, গোসল করেই এসব কাজ করা। আর ফজিলতের দ্বিতীয় স্তর হল, শরীরে বাহ্যিক নাপাক থাকলে তা দূর করে নামাযের ন্যায় অযু করে এসব কাজ করা। ইমাম আবু হানিফা রহ. এর মতে অযু ছাড়া এসব কাজ করা মাকরুহ তানযিহি যদিও ইমাম আবু ইউসুফ রহ. এর মতে অযু ছাড়া এসব কাজ করার অবকাশ থাকলেও উচিৎ নয়।
المراجع والمصادر:
(১) صحيح البخارى، رقم الحديث: ২৮৬
عن أبى سلمة قال سألت عائشة اكان النبي صلى الله عليه وسلم يرقد وهوجنب قالت نعم ويتوضأ.
(২) سنن أبي داود، رقم الحديث: ২২৭
عن على ابن أبى طالب رضى الله عنه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال : "لا تدخل الملائكة بيتا فيه صورة ولا كلب ولا جنب".
(৩) فتح الباري ২/৬৯ شعيب الأرنووط.
فيحتمل كما قال الخطابي أن المراد بالجنب من يتهاون بالاغتسال ويتخذ تركه عادة لا من يؤخره ليفعله.
(৪) الفتاوى الهندية ১/৬৮ زكريا.
(ومما يتصل بذلك مسائل) الجنب إذا أخر الاغتسال إلى وقت الصلاة لا يأثم.كذا في المحيط.
(৫) فتاوى قاضى خان ১/৩০ زكريا.
الجنب إذا اراد ان يأكل أو يشرب فالمستحب له : أن يغسل يديه وفاه وإن ترك لا بأس به.
(৬) تحفۃ القاری شرح صحیح البخاری২/৭০
جنبی کا نہانے سے پہلے گھر میں رہنا ، کھانا پینا، سونا اور معاملات کرنا جائز ہے،البتہ فضیلت کا اعلی درجہ یہ ہے کہ نہاکر یہ کام کرے، اور فضیلت کا دوسرا درجہ یہ ہے کہ بدن پر جہاں ناپاکی ہو اسے دھوڈالےاور نمازوالا وضو کرکے یہ کام کرے،اور وضوکۓ بغیر یہ کام کرنا امام اعظم ابو حنیفہ رحمہ اللہ کے نزدیک مکروہ تنزیہی ہے۔
(৭) فتاوی محمودیہ ৮/১৮৬
غسل جنابت میں تاخیرکرنا اور کھانا پینا۔۔۔ نماز فجر کا قضا کر دینا اور ظہر تک بلا عذر شرعی کے مؤخر کر دینا کبیرہ گناہ ہے۔لیکن بلا غسل کے جو کچھ کھایاپیا وہ حرام نہیں۔
উত্তর লিখনে
মুফতি আবুল ফাতাহ কাসেমি
উস্তাদ, জামিয়া কারীমিয়া আরাবিয়া রামপুরা, ঢাকা।
-এএ