সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


একটি পরিত্যক্ত মাদরাসার কান্না!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

রফিকুল ইসলাম জসিম ।।

দেখার কেউ নেই- পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে একটি মাদরাসা। যে এলাকায় অধিকাংশ মানুষ সুবিধা বঞ্চিত বাংলাদেশের বসবাসরত একমাত্র ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি মনিপুরি মুসলিম সম্প্রদায়ের। মাদরাসাটি মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে মাধবপুর ইউনিয়নে শুকুর উল্লার গাঁও গ্রামে অবস্থিত। মাদরাসার পাশেইও রয়েছে ঈদগাহ।

এক সময় ফজরের পর গ্রামের রাস্তায় হাঁটতে বের হলে মাদরাসাগুলোতে গুনগুন আওয়াজে পবিত্র কোরআনুল তেলাওয়াতের শব্দ। এখন সেগুলো অতীত। জানা যায়, আজ থেকে প্রায় ২৫ বছর আগে এলাকায় কয়েক লক্ষ টাকায় নির্মিত হয়েছে এই মাদ্রাসাটি। বর্তমানে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে এটি সত্যিই দুঃখজনক।

যুগ যুগ ধরে মুসলিম পরিবারে শিশুদের ধর্মীয় শিক্ষা কালিমা, নামাজ, রোজা, হজ, যাকাতসহ ধর্মীয় মাসয়ালা-মাসায়েল শেখার অন্যতম ব্যবস্থা ছিলো এটি। ইহকালে শান্তি ও পরকালের নাজাতের শিক্ষার শুরু এই মক্তব মাদ্রাসা থেকেই। এ শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনা করতেন স্থানীয় মসজিদের ইমাম বা মুয়াজ্জিনরা।

কিন্তু ইদানীং এই মাদ্রাসা বন্ধ থাকায় অনেকেই মক্তবের এই ন্যূনতম শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এটি তাদের দ্বিন শেখার অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এর প্রভাবে তৈরি হচ্ছে ধর্মীয় জ্ঞানশূন্য মণিপুরি মুসলিম
জনগোষ্ঠী একটি গ্রাম৷

এই বিষয়ে কর্তৃপক্ষ সাথে যোগাযোগ করলে মাদ্রাসা ও মসজিদ কমিটি সভাপতি হাজী জয়নাল আবেদীন জানায়, সরকারি সুযোগ সুবিধা না পাওয়ায় মাদ্রাসাটি নির্মাণ করার পর থেকে কোন রকম সংস্কার হয়নি। একটু বৃষ্টি হলেই মাদ্রাসা ভবনের টিন চুইয়ে পানি পড়ে এবং শিক্ষার্থীদের বইপত্র ভিজে যায়। এছাড়াও শিক্ষকদের বেতন অনিয়মিত সহ অন্যান্য কারণে মাদ্রাসা বন্ধ রয়েছে।

মাদ্রাসায় দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকর্তা করেছেন ক্বারী মোঃ রমিজ উদ্দিন তিনি বলেন, মক্তব শিক্ষা বিলুপ্তির কারণে আমাদের সমাজের শিশুশ্রম, বাল্যবিবাহ, কিশোর গ্যাংসহ বিভিন্ন অপরাধ প্রতিদিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ দিকে শিশুরা ভবিষ্যতে ধর্মীয় জ্ঞান থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়ছে।

মহল্লায় একাধিক ছাত্র অভিভাবক বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে আমরা একসময় মক্তবে পড়ালেখা করেছি। এখন মক্তব শিক্ষাব্যবস্থা দিন দিন ঝিমিয়ে পড়ায় আমাদের সন্তানদের কোরআন শিক্ষাসহ ধর্মীয় রীতিনীতির জ্ঞান অর্জন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আর বর্তমানে অসচেতনতার কারণে অভিভাবকরা সন্তানদের মক্তবে না পাঠিয়ে বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষা অর্জনের জন্য কোচিংয়ে পাঠিয়ে দেন।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ