শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


দুনিয়ার স্বার্থে ধর্মের কাজ গর্হিত অন্যায়!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আন্দামান নওশাদ: দুনিয়ার স্বার্থে ধর্মের কাজ গর্হিত অন্যায়। দুনিয়ায় মানুষের সব কাজ হবে মহান আল্লাহ তাআলার জন্য। অথচ মানুষ দুনিয়ার কাজে ধর্মীয় অনুভূতিকে ব্যাপকভাবে কাজে লাগায়। যা কোনোভাবেই ঠিক নয়। কারণ এতে পরকালের কাঙ্ক্ষিত সাফল্য থেকে বঞ্চিত হবে মানুষ।

মানুষের দীনদারী কিংবা ধর্মকর্ম পালন যেন দুনিয়ার সুবিধা লাভের হাতিয়ার হয়ে না যায়। কেননা আল্লাহ তাআলা মানুষকে শুধু তার ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি জ্বীন ও মানুষকে আমার ইবাদত ব্যতিত অন্য কোনো কিছুর জন্য সৃষ্টি করিনি।’ (সুরা জারিয়াত : আয়াত ৫৬)

সম্প্রতি সময়ে এমন অনেক ঘটনা ঘটতে দেখা যায় যে দুনিয়ার বিভিন্ন প্রয়োজনে মানুষ দীন তথা ধর্মকে পূজি করেন। ধর্মের দোহাই দেন। বাস্তবে দীন তথা ধর্মকে নিজেদের কাজে ব্যবহার করা একেবারেই অনুচিত। কেননা মানুষের প্রতিটি কাজ হবে আল্লাহর জন্য। তবে এসব কাজ করতে ধর্ম বা দীনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা ঠিক নয়। এ ব্যাপারে কুরআনুল কারিমে হজরত হুদ আ. এর বক্তব্য রয়েছে। ইরশাদ হচ্ছে, ‘হে আমার জাতি! আমি তো এজন্য তোমাদের কাছে কোনো অর্থ চাই না। আমার পারিশ্রমিক তো আল্লাহর জিম্মায় রয়েছে।’ (সুরা হুদ : আয়াত ২৯)

হজরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রাহমাতুল্লাহি আলাহির- ‘সব কাজ হবে মহান আল্লাহর জন্য’- এ মর্মে একটি ঘটনা উল্লেখ করেছেন। তাহলো- বিখ্যাত সাহাবি হজরত আবু মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু একবার এক ব্যক্তির কোনো এক প্রয়োজনে সে সময়ের শাসকের সঙ্গে কথা বলেন আর শাসকও তা সমাধান করে দেন। তিনি যখন ঘরে ফিরলেন, তখন দেখলেন তার জন্য কেউ একটি হাঁস ও একটি মুরগী পাঠিয়েছেন। তিনি ঘরের লোকদের জিজ্ঞাসা করলেন- (এটি কোথায় থেকে এসেছে?) তারা (ঘরের লোকজন) ওই ব্যক্তির নাম বলল, যার প্রয়োজন নিয়ে তিনি শাসকের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে সাহাবি হজরত আবু মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, এগুলো (ঘর থেকে) বের করে দাও। আমি কি আমার সুপারিশের বিনিময় দুনিয়াতেই নিয়ে নেব?

বর্তমানে দেখা যায়, মানুষ কতভাবে দীন বা ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগায় কিংবা দীন বা ধর্মের কারণে কত সুবিধা ভোগ করে। অথচ পরকালেই যে এসব সুবিধার বেশি প্রয়োজন হবে সেদিকে কোনো ভ্রক্ষেপই করে না।

মনে রাখতে হবে, পরকালের প্রস্তুতিতে দুনিয়ার সব কাজই হবে শুধু আল্লাহর জন্য। কেননা দুনিয়া হলো আখেরাতের শষ্যক্ষেত্র। তা যেন দুনিয়া প্রাপ্তিতে ব্যবহার না হয়। আখেরাতের কাজ দিয়ে মূল্যহীন দুনিয়া অর্জনের পথ থেকে বিরত থাকাই ঈমানদারের একান্ত কাজ হওয়া উচিত।

তবে ফিকাহবিদগণ যে সব বিষয়ে অনুমতি দিয়েছেন সেসব বিষয় ভিন্ন। যেমন কুরআন শরীফ পড়িয়ে কেউ যদি আল্লাহর সন্তুষ্টির ইচ্ছা রাখে। আর এর মাধ্যমে তার দুনিয়ার প্রয়োজনও পূরণ হয়ে যায় তাহলে তা জায়েজ হবে। এটাকে ‘দীন দিয়ে দুনিয়া কামাই’ বলার সুযোগ নেই। কেননা সে শুধু দুনিয়া কামানোইকেই ইচ্ছা করেনি। বরং আল্লাহর সন্তুষ্টিই হলো তাঁর মূল ও প্রধান লক্ষ্য।

এমডব্লিউ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ