শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


আওয়াবিন নামাজের ফজিলত

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতি নূর মুহাম্মদ রাহমানী।।

মুমিন জীবনের শ্রেষ্ঠতম ইবাদত ফরজ। এর কোনো তুলনা হয় না। ফরজ আদায়ের পর যারা নফল আদায় করে তাদের প্রতি রয়েছে আল্লাহর বিশেষ রহমত। নফলের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর অধিকতর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভ করে। হাদিসে কুদসিতে নবী করিম সা. ইরশাদ করেছেন, ‘আমার বান্দা নফলের মাধ্যমে আমার নিকটবর্তী হতে থাকে। একপর্যায়ে সে আমার মাহবুব ও ভালোবাসার পাত্র হয়ে যায়।’ (বোখারি : ২/৯৬৩)

নফল ইবাদতের মধ্যে নফল নামাজ আল্লাহর কাছে বেশি প্রিয়। পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ, ওয়াজিব ও সুন্নত নামাজের বাইরেও কিছু নফল নামাজ রয়েছে। তন্মধ্যে একটি হলো আওয়াবিন নামাজ। মাগরিবের ফরজ ও সুন্নতের পর কমপক্ষে ছয় রাকাত এবং সর্বাপেক্ষা বিশ রাকাত নফল নামাজকে আওয়াবিনের নামাজ বলা হয়। ইশার নামাজ পর্যন্ত পড়ার সুযোগ থাকে।

ছয় রাকাত পড়ারও সুযোগ না হলে মাগরিবের দুই রাকাত সুন্নত মিলিয়ে ছয় রাকাত পড়া যায়। কেউ কেউ ‘দুহা’ বা এশরাকের নামাজকেই আওয়াবিনের নামাজ বলেছেন। নাম নিয়ে মতভিন্নতা থাকলেও এই সময় নামাজ আদায়ের গুরুত্ব হাদিস দ্বারা প্রমাণিত।

হজরত হুজায়ফা রা. বলেন, ‘আমি নবীজির সা. কাছে এসে তার সাথে মাগরিবের নামাজ আদায় করলাম। তিনি মাগরিবের পরে ইশার নামাজ পর্যন্ত নফল নামাজে রত থাকলেন।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা : ২/১৫)

অন্য হাদিসে আনাস রা. বলেন, সাহাবায়ে কেরাম মাগরিব ও ইশার মধ্যবর্তী সময়ে সজাগ থেকে অপেক্ষা করতেন এবং নফল নামাজ আদায় করতেন।’
আওয়াবিন নামাজের অনেক ফজিলত রয়েছে।

হজরত আম্মার ইবনে ইয়াজিদের ছেলে মোহাম্মদ ইবনে আম্মার রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি আমার পিতা আম্মার ইবনে ইয়াসিরকে রা. দেখেছি, তিনি মাগরিবের পর দুই রাকাত পড়তেন এবং বলতেন, আমি আমার প্রিয় মোহাম্মাদ সা.-কে দেখেছি, তিনি মাগরিবের পর ছয় রাকাত নামাজ পড়তেন এবং তিনি বলতেন, যে বান্দা মাগরিবের পর ছয় রাকাত নামাজ পড়বে তার গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে, যদিও তা সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ হয়।’

হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবীজি সা. বলেন, ‘যে ব্যক্তি মাগরিবের পরে ছয় রাকাত নফল আদায় করে, মাঝখানে কোনো দুনিয়াবি কথা না বলে, তাহলে সেটা বারো বছরের ইবাদতের সমান গণ্য হবে।’ (তিরমিজি: ১/৫৫৯)

হজরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করিম সা. বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মাগরিবের পর বিশ রাকাত নফল নামাজ পড়বে আল্লাহতায়ালা তার জন্য বেহেশতে একটি ঘর প্রতিষ্ঠিত করবেন (অর্থাৎ সে বেহেশতে যাবে)’ (তিরমিজি: ১/৯৮)

হাসান বসরি রহ. বলতেন, ইশার মধ্যবর্তী সময়ের নামাজও রাতের নামাজ বা তাহাজ্জুদের নামাজ বলে গণ্য হবে।’ (আসসুনানুল কুবরা, বাইহাকি) আওয়াবিন নামাজ ও অন্যান্য নফল নামাজে দীর্ঘ কেরাত, দীর্ঘ রুকু ও সিজদা করা উত্তম। আল্লাহতায়ালা আমাদের সবাইকে ফরজের পাশাপাশি নফল ইবাদত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

লেখক: উস্তাযুল ফিকহ ওয়াল ইফতা, জামিয়া আরাবিয়া দারুল উলূম বাগে জান্নাত চাষাঢ়া, নারায়ণগঞ্জ

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ