সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
চিকিৎসকরা বছরে দুইবারের বেশি বিদেশ যেতে পারবেন না ঢাকা থেকে ভাঙ্গা হয়ে খুলনায় গেলো পরীক্ষামূলক ট্রেন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন প্রধান উপদেষ্টা: প্রেস উইং ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সাম্যের ভিত্তিতে সংবিধান রচনার আহ্বান নেপালে ফের কুরআন প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে সৌদি আগামীকাল সংবিধান সংস্কার কমিশনে প্রস্তাবনা পেশ করবে ইসলামী আন্দোলন ‘আল্লামা আতহার আলী রহ. জীবন, কর্ম, অবদান’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন আগামীকাল হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী রহ. : কে এই মহান ব্যক্তি হাজিদের স্বার্থ রক্ষায় সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : ধর্ম উপদেষ্টা মহানবীকে সা. নিয়ে কটূক্তি করলে সংবিধানে শাস্তির বিধান রাখার প্রস্তাব পার্থের

মুসলিমদের গৌরব প্যারিস গ্র্যান্ড মসজিদ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আবদুল্লাহ তামিম।।

১৯২২ সালে ফ্রান্সের পার্লামেন্টে এই মসজিদ নির্মাণের প্রস্তাব পাস হয় এবং এই কাজে পাঁচ লাখ ফ্রাঙ্ক অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়। প্যারিস সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে মসজিদ নির্মাণের জন্য নগরীর সবচেয়ে দামী এলাকায় ৭,৫০০ বর্গমিটার জায়গা বরাদ্দ দেয়া হয়। মসজিদ নির্মাণের কাজে ফ্রান্স সরকারের পাশাপাশি ফরাসি উপনিবেশভুক্ত দেশ আলজেরিয়া, তিউনিশিয়া ও মরক্কোর মতো দেশগুলোর মুসলমানরাও আর্থিক অনুদান দেন।

১৯২৬ সালের ১৫ জুলাই ফ্রান্সের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গ্যাস্তোন দুমার্গ প্যারিস গ্র্যান্ড মসজিদ উদ্বোধন করেন। ওইদিনই এই মসজিদে প্রথম নামাজের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। ওই নামাজের ইমামতি করেছিলেন ফ্রান্সের বিশিষ্ট আলেম আহমাদ আল-আলাভি। ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত এই মসজিদ পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন ফরাসি নাগরিকরা।

ওই বছর হামজা আবুবকর নামের আলজেরিয় বংশোদ্ভূত একজন মুসলমানকে এই মসজিদ পরিচালনা কমিটির প্রধান করা হয়। তিনি অবসরে যাওয়ার সময় মসজিদ পরিচালনার দায়িত্ব আলজেরিয়া সরকারের কাছে ন্যস্ত করেন।

বিষয়টি ফরাসি নাগরিকরা তাদের দেশে বিদেশি হস্তক্ষেপ বলে গণ্য করেন এবং তাদের প্রতিবাদের মুখে ১৯৯২ সালে একজন ফরাসি নাগরিককে মসজিদ পরিচালনা কমিটির প্রধান নিযুক্ত করা হয়।

কয়েক দশকে ইউরোপীয় দেশগুলোতে অগণিত মানুষ শান্তির ধর্ম ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় গ্রহণ করেছেন। তারা এসব দেশে নির্মাণ করেছেন অসংখ্য সুন্দর সুন্দর মসজিদ। ইউরোপে মসজিদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইসলামের বিরুদ্ধে শত্রুতাও বেড়েছে। কোনো কেনো দেশে নতুন করে মসজিদ স্থাপনের বিরোধিতা করা হচ্ছে তীব্রভাবে।

ইউরোপের অন্যতম দেশ ফ্রান্স। ফ্রান্সেও রয়েছে অনেক মসজিদ। এসব মসজিদের অন্যতম হলো- রাজধানী প্যারিসের গ্র্যান্ড মসজিদ। এটি ফ্রান্সের সবচেয়ে বড় এবং ইউরোপের তৃতীয় বৃহত্তম মসজিদ।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ফ্রান্সের পক্ষে যুদ্ধ করতে গিয়ে যেসব মুসলমান নিহত হয়েছেন তাদের স্মরণে মসজিদটি নির্মিত হয়।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর মরক্কোর বংশোদ্ভূত এক মুসলিম ফ্রান্স সরকারের কাছে মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা পেশ করেন। ১৯২২ সালে ফ্রান্সের পার্লামেন্টে এই মসজিদ নির্মাণের প্রস্তাব পাস হয় এবং এই কাজে পাঁচ লাখ ফ্রাঙ্ক অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্যারিস সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে মসজিদ নির্মাণের জন্য নগরীর সবচেয়ে দামী এলাকায় সাড়ে ৭ হাজার বর্গমিটার জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয় এবং মসজিদ নির্মাণের কাজে ফ্রান্স সরকারের পাশাপাশি ফরাসি উপনিবেশভুক্ত দেশ আলজেরিয়া, তিউনিশিয়া ও মরক্কোর মতো দেশগুলোর মুসলমানরা আর্থিক অনুদান দেন।

১৯২৬ সালের ১৫ জুলাই ফ্রান্সের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গ্যাস্তোন দুমার্গ প্যারিস গ্র্যান্ড মসজিদ উদ্বোধন করেন। ওইদিনই এই মসজিদে প্রথম নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

বর্তমানে প্যারিস গ্র্যান্ড মসজিদে স্থাপিত একটি ইসলামি সংস্থা ফ্রান্সের সব মসজিদ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছে। মুসলমানদের বেশিরভাগ সামাজিক কাজের সঙ্গে প্যারিসের গ্র্যান্ড মসজিদ জড়িত। বিবাহ, তালাক, আইনি পরামর্শ, সারাদেশের জুমা ও ঈদের নামাজ পরিচালনা, হজে লোক পাঠানো, হালাল উপায়ে পশু জবাইয়ের প্রতি নজরদারি, মৃতদের দাফন, এতিম শিশু ও অসহায় পরিবারগুলোকে সহায়তা প্রদানসহ এ ধরনের আরো অনেক সেবামূলক কাজ করে এই মসজিদ।

মসজিদের উদ্যোগে এখানে স্থাপিত হয়েছে একটি বিশাল লাইব্রেরি। সেইসঙ্গে ইসলামকে অমুসলিমদের সামনে তুলে ধরার জন্য মসজিদের অডিটোরিয়ামে মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন সভা ও সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এ ছাড়া ইসলাম সম্পর্কে অমুসলিমদের ভুল ধারণা দূর করতে এখানে অনুষ্ঠিত হয় বিশেষ সেমিনার।

প্যারিস জামে মসজিদের প্রধান হলরুমের পাশাপাশি রয়েছে দু’টি বিশাল বারান্দা এবং একটি সুউচ্চ মিনার। মসজিদের স্তম্ভগুলো তৈরি হয়েছে মরমর পাথর দিয়ে। কোনো কোনো স্থানে দু’টি বা তিনটি ছোট স্তম্ভ একটি বড় পিলারের ওপর স্থাপন করা হয়েছে। মসজিদের সামনে রয়েছে বিশাল উন্মুক্ত স্থান। ঈদের নামাজসহ বিশেষ দিনে মসজিদে মুসল্লিদের স্থান সংকুলান না হলে এই আঙিনায় নামাজ পড়েন মুসল্লিরা।

ফ্রান্সে গির্জার চেয়ে মসজিদের সংখ্যা বেশি। প্যারিসের ক্রিটেইল এলাকায় অবস্থিত আরেকটি মসজিদের নাম সাহাবা মসজিদ। প্যারিসের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত এই মসজিদে বছরে গড়ে প্রায় দেড় লাখ ফরাসি নাগরিক ইসলাম গ্রহণ করেন বলে এই মসজিদকে ‘ইসলাম গ্রহণকারীদের মসজিদ’ নামেও অভিহিত করা হয়।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ