অধ্যাপক মেহেদী হাসান।।
আমরা মানুষ। আমাদের এই পৃথিবীর জীবন ক্ষণস্থায়ী। আর এই ক্ষণস্থায়ী জীবনে চলার পথে আমরা অনেক ভুলভ্রান্তির শিকার হই। কখনো মহান রবের আদেশকৃত অতীব জরুরী আমলগুলো আমরা ঠিক মত আদায় করতে পারিনা, আবার কখনো মহান রব কর্তৃক নিষিদ্ধ কোন কাজ আমরা করে ফেলি অনায়াসেই। অনেকের এভাবেই চলতে থাকে জীবন।
তারা কখনো এই ভুলভ্রান্তির কথা স্বীকার করতে চায়না। কেননা তাদের কাছে এই জীবনটাকে বাহ্যিকভাবে উপভোগ করাটাই আসল উদ্দেশ্য। মহান রবের পবিত্র বাণী তাদের কর্ণকুহরে পৌছায় ঠিকই,কিন্তু তারা এর ব্যাপারে সম্পূর্ণই উদাসীন থাকে। অপরপক্ষে এমন কিছু মানুষও এই দুনিয়াতে আছে যারা পাপ করে ঠিকই কিন্তু এর পরে তাদের মনে অনুশোচনা জাগে। এই অনুশোচনাই এই শ্রেণীর মানুষগুলোকে অন্য সকল অকৃতজ্ঞ দুনিয়াদার মানুষ থেকে আলাদা করে তুলে।
এই শ্রেণীর মানুষগুলো গুনাহ করার পর অবস্থাভেদে প্রচণ্ড লজ্জিত হয় আর অস্বস্তিতে ভোগে। ঠিক এই মুহূর্তে একজন আল্লাহভিরু ব্যক্তির ঠিক কী করা উচিত আর কিভাবেই অন্তরে জাগ্রত হওয়া তাদের এই অনুশোচনাকে কাজে লাগিয়ে জীবনের মুহূর্তগুলোকে সঠিক ভাবে ব্যয় করা যায় তার জন্যই আমার এই লেখা। প্রথমেই বলে নেই, মহান রব্বুল আলামীন এই সকল লোকদের জন্যই খুলে রেখেছেন তার অসীম দয়ার ভাণ্ডার।
গুনাহ
গুনাহ করা মানুষের সহজাত একটি বৈশিষ্ট। হাদীসে এসেছে, ১) রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আদম সন্তান সবাই গুনাহ করে। গুনাহকারীদের মধ্যে উত্তম তারাই যারা তওবা করে। (তিরমিজি)
২) আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘‘সেই মহান সত্তার কসম, যার হাতে আমার জীবন আছে! যদি তোমরা পাপ না কর, তাহলে আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে [তোমাদের পরিবর্তে] এমন এক জাতি আনয়ন করবেন, যারা পাপ করবে এবং আল্লাহ তা'আলার কাছে ক্ষমা প্রার্থনাও করবে। আর আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করে দেবেন” (মুসলিম)
অনেকের মনে হতে পারে, এই দুটি হাদীস কি আমাদের আমাদের গুনাহ করতে উৎসাহ দেয় না? আর তা না হলে এই হাদীসের উদ্দেশ্য কী?
এর উত্তরে বলবো, আসলে এই দুটি হাদীস কখনোই মানুষকে গুনাহ করতে উৎসাহ দেয়না। বরং মহান রবের করুণাতো এই যে তিনি এই হাদীসের মাধ্যমে গুনাহকারী ব্যক্তিদেরকে উৎসাহ দিচ্ছেন তওবা করার জন্য, যাতে তারা হতাশ না হয়, আর যাতে তারা পুনরায় গুনাহে ফিরে না যায়। মহান আল্লাহ যে কত বড় দয়ালু আর ক্ষমাশীল এই হাদীস দুটি তারই প্রতিচ্ছবি।
গুনাহ করে ফেলার পর আমাদের করণীয়
১) তওবাঃ
কখনো গুনাহ সংগঠিত হয়ে গেলে সাথে সাথেই তওবা করে ফেলতে হবে। মহান আল্লাহ বলেন, يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا تُوبُوا إِلَى اللَّهِ تَوْبَةً نَصُوحًا
হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ্র কাছে তওবাহ করো, একনিষ্ঠ তওবাহ। [সূরাহ আত-তাহরীম (৬৬):৮]
وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ হে ঈমানদারগণ! তোমরা সকলে আল্লাহ্র নিকট তওবাহ করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো। [সূরাহ আন-নূর (২৪):৩১]
একনিষ্ঠভাবে এই তওবা করার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারি। রাসুল (সঃ) বলেছেন, ‘‘আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় বান্দার তওবা করার জন্য ঐ ব্যক্তি অপেক্ষা বেশী আনন্দিত হন, যে তার উট জঙ্গলে হারিয়ে ফেলার পর পুনরায় ফিরে পায়।’’ (বুখারী ৬৩০৯, মুসলিম ২৭৪৭, আহমাদ ১২৮১৫)
অপরদিকে যদি আমরা কোন গুনাহ করার পর তওবা না করি, আমাদের অন্তর শক্ত হয়ে যায়। প্রশান্ত হৃদয় কলুষিত হওয়ার পর পুনরায় পবিত্র হওয়ার জন্য যেই আকুল আবেদন করতে থাকে, তাকে অগ্রাহ্য করে যখন কেউ তওবা থেকে বিরত থাকে, তার প্রশান্ত হৃদয়টা খুব শীঘ্রই অসুস্থ হয়ে পড়ে। ফলে যদি পাপ কাজ বাড়তেই থাকে আর পাপকারী তার জন্য তওবা না করে, তাহলে সেই প্রশান্ত হৃদয় এক সময় মরে যায়। অন্তরে কেবল বাড়তে থাকে অস্থিরতা আর অসন্তুষ্টির চারা গাছ। যার রোপণকারী সে নিজেই। আল্লাহ এই মর্মে পবিত্র কুরআনে বলেন, وَمَنْ لَمْ يَتُبْ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ যারা তাওবাহ করে না, তারাই সীমালঙ্ঘনকারী। [সূরাহ আল-হুজুরাত (৪৯):১১]
২) সংঘটিত পাপকে হাল্কা মনে না করাঃ নিজেরদ্বারা সংগঠিত কোন পাপ কাজকেই কখনোই ছোট মনে করা যাবেনা। কেননা এতে তওবা করার ,অনুতপ্ত হওয়ার প্রবণতা কমে যায়। এই মর্মে নিচের একটি হাদিসই সত্যপন্থিদের নিকট যথেষ্ট হওয়ার শক্তি রাখে।
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন যে, ‘তোমরা বহু এমন (পাপ) কাজ করছ, সেগুলো তোমাদের দৃষ্টিতে চুল থেকেও সূক্ষ্ম(নগণ্য)। কিন্তু আমরা সেগুলোকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে বিনাশকারী মহাপাপ বলে গণ্য করতাম।
৩) সাথে সাথে কোন ভালো কাজ করে ফেলা পাপ কাজ হয়ে গেলে, তওবার সাথে সাথে আমাদের কোন ভালো কাজ করে ফেলতে হবে। চিন্তা করা উচিত মীযানের পাল্লায় পাপের বিপরীতে আমাদের পক্ষে কেবলমাত্র আমাদের ভালো আমলগুলিই সাহায্যকারী হবে।
এই মর্মে রাসুল (সঃ) বলেছেন, “যেখানেই থাকো আল্লাহকে ভয় করো। খারাপ কাজ হয়ে গেলে সাথে সাথে নেক আমল করে নাও, যা (আগের) গুনাহ মুছে দিবে। আর মানুষের প্রতি সদাচরণ করো।” (তিরমিযী)
৪) পবিত্র কুরআনের প্রতি যত্নবান হওয়া
যখন কোন ব্যক্তি পবিত্র কুরআন থেকে দূরে সরে যায়, তার অন্তরে তখন নানা ধরনের অপ্রয়োজনীয় চিন্তা, হতাশা বাসা বাঁধতে শুরু করে। তাই গুনাহ হয়ে গেলে অনুতপ্ত অস্থির হৃদয়টাকে প্রশান্তির অনুভূতি দেওয়ার জন্য একমাত্র ঔষধ হচ্ছে অর্থসহ কুরআন তেলাওয়াত করা। প্রতিদিন সাধ্যমত কিছু সময় বরাদ্দ করা শুধুমাত্র অর্থসহ কুরআন তিলাওয়াতের জন্য।
৫) উপকরণ নষ্ট করে ফেলা
নিজের দ্বারা সংগঠিত পাপ কাজ যদি কোন উপকরণের সাথে সংশ্লিষ্ট হয় এবং পরবর্তীতে পুনরায় পাপ কাজ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাহলে সাথে সাথে ঐ উপকরণ নষ্ট করে ফেলতে হবে। ঐ উপকরণ যদি অন্য কোন ভালো কাজের জন্য প্রয়োজনীয় হয়, তাহলে তার বিকল্প কোন উপকরণ খুঁজে বের করে নিতে হবে।
৬) সৎ বন্ধুদের সংসর্গে আসা
নিজের গুনাহ থেকে মুক্তি পেয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করে পবিত্র, সহজ, সাধারণ জিবনযাপন করার ক্ষেত্রে সৎ বন্ধুদের সাহচর্য অত্যন্ত কার্যকরী। সৎ বন্ধুদের সাথে মিশলে, ভালো কাজের প্রতি যেমন আগ্রহ বাড়ে, তেমনি খারাপ কাজ থেকেও বিরত থাকাটাও সহজ হয়। প্রশান্ত আত্মা বা নফসে মুতমাইন্না ধীরে ধীরে শক্তিশালী হতে থাকে।
৭) জিকিরের পরিমান বাড়িয়ে দেওয়া
প্রতহ্য পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায়ের পর সুন্নত জিকিরগুলি নিয়মিত আদায় করতে হবে। চলতে ফিরতে দিনের অধিকাংশ সময়ে মনে মনে আল্লাহকে স্মরণ করতে হবে। সারাদিনের মাসনূন যিকিরগুলি মুখস্থ করে আমল করতে হবে। শয়তান ধোঁকা দেওয়ার জন্য যাতে সুযোগ না পায় তাই যে কোন ভালো কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে হবে।
৮) তাহাজ্জুদ নামায পড়া
মহান আল্লাহর সাথে একান্ত সাক্ষাতের মাধ্যমে নিজের গুনাহগুলিকে মিটিয়ে ফেলার জন্য এর চেয়ে আর কোন ভালো মাধ্যম নাই। মহান আল্লাহ যেই সময়ে নিকট আসমানে এসে তার সন্তুষ্টি বিলাতে থাকেন, ঐ সময়ে তার সন্তুষ্টি অর্জন করার চেয়ে আর সহজ রাস্তা কি, কিছু হতে পারে? নিস্তব্ধ, নীরব পরিবেশে, রিয়া হীন অন্তর নিয়ে দয়াময় আল্লাহর দরবার হাত পেতে দুইফোঁটা চোখের পানি ফেললে তিনি কি তা ফিরিয়ে দিতে পারেন?? পরম করুণাময় আল্লাহ এই জন্যই বলেছেন, قُلْ يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَىٰ أَنْفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوا مِنْ رَحْمَةِ اللَّهِ ۚ إِنَّ اللَّهَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا ۚ إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ
বলুন, হে আমার বান্দাগণ যারা নিজেদের উপর যুলুম করেছো, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গোনাহ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। [সূরাহ আয-যুমার আয়াত (৩৯):৫৩]
৯) নিকট আত্মীয়দের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা
আলহামদুলিল্লাহ্, নিকট আত্মীয়দের সাথে যোগাযোগ রাখলে, তাদের খোঁজ খবর নিলে তারা বেশ খুশি হন। মহান আল্লাও খুশি হন। মনে প্রশান্তি অনুভব হয়। তাদের দোয়া আল্লাহ কবুল করলে, নিজের জন্য তা অতি সৌভাগ্যের ব্যপার হয়ে দাড়ায়।
১০) অনর্থক কথা, হাসি ঠাট্টা পরিহার করা
অনর্থক কথাবার্তা, হাসি, তামাশা অন্তরকে শক্ত করে ফেলে। অন্তরের স্নিগ্ধ পরিবেশকে নষ্ট করে উছৃঙ্খল করে তুলে। ফলে অন্তরের পবিত্রতা নষ্ট হয়। তাছাড়া যেই ব্যক্তি বিচার দিবসকে বিশ্বাস করে, তারতো অনর্থক কথা বলার কোন সুযোগই নেই। এই মর্মে আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের উপর ঈমান রাখে সে যেন ভালো কথা বলে, নতুবা চুপ থাকে। (সহিহ-মুসলিম)
১১) ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করে হতাশায় না ভোগা
আল্লাহর কাছে সুন্দর ভবিষ্যৎ কামনা করা দোষের কিছু নয়। সবাই তাই চায়। কিন্তু সবসময় ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে হতাশায় ডুবে থাকা কখনোই বুদ্ধিমানের কাজ নয়। আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করার মাধ্যমে এই হতাশাকে দূর করে ফেলতে হবে। আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল যে যত বেশি করে, আল্লাহ তার জীবনের হতাশা তত কমিয়ে দেন।
১২) প্রতিদিন নামায ও কুরআন তেলাওয়াতের পাশাপাশি অনান্য কিছু নেক আমলও করা।
যেমন প্রতিদিন কোন না কোন ইসলামিক বই পড়া, অথবা ইসলামিক লেকচার শুনা, ইসলাম নিয়ে ভাবা। নিজের কর্তব্য সঠিকভাবে পালন করা ইত্যাদি।
১৩) সম্ভব হলে, কবরস্থানে যাওয়া
সময় থাকলে মাঝে মাঝে কবরস্থানে গিয়ে একটু মানুষের শেষ পরিণতি নিজের চোখে দেখে আসা। সম্ভব হলে একা যাওয়া। নিজের অসহায়ত্ব আর শেষ পরিণতি বোঝানোর ব্যপারে এটি বেশ কার্যকরী ভুমিকা রাখে। মৃত্যুর কথা স্মরণে আসে। তবে এটি ঐচ্ছিক বিষয়।
১৪) নিয়মিত আর্থিক সাদাকাহ করা
মহান আল্লাহ বলেন لَنْ تَنَالُوا الْبِرَّ حَتَّىٰ تُنْفِقُوا مِمَّا تُحِبُّونَ ۚ وَمَا تُنْفِقُوا مِنْ شَيْءٍ فَإِنَّ اللَّهَ بِهِ عَلِيمٌ
কস্মিনকালেও কল্যাণ লাভ করতে পারবে না, যদি তোমাদের প্রিয় বস্তু থেকে তোমরা ব্যয় না করো। [সূরাহ আল ইমরান (৩):৯২]
তাছাড়া এই সাদাকা আমাদের গুনাহকে মিটিয়ে দেয়। রাসূল (সঃ) বলেন, সাদকাহ্ গোনাহকে নিঃশেষ করে দেয় যেমন পানি আগুনকে নিভিয়ে দেয়। (তিরমিযি)
১৫) বাসায় নিয়মিত তা’লিমের আয়োজন করা
যার বাসায় সুযোগ আছে, তারা বাসায় নিয়মিত তা’লিমের আয়োজন করতে পারেন। এতে অন্তর দীনি বিষয়ে আরো আকৃষ্ট হবে।
১৬) জামাতের সাথে প্রথম কাতারে সালাত আদায়ের চেষ্টা করা এই মর্মে, আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মানুষ যদি জানত আযান ও প্রথম কাতারে কী (বরকত ও মঙ্গল) রয়েছে, তবে তা পাবার জন্য লটারী ছাড়া উপায় না থাকলে তারা এর জন্য লটারী করত। (বুখারী, মুসলিম)
১৭) মাসে কমপক্ষে ৩ দিন (আইয়্যাম বিদ) সিয়াম পালনের চেষ্টা করা আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনটি বিষয়ে আমার নিকট হতে প্রতিশ্রুতি নেন। আমি যেন বিত্র আদায়ের পূর্বে না ঘুমাই, প্রত্যেক মাসে তিন দিন রোযা আদায় করি এবং চাশ্তের নামায নিয়মিত আদায় করি। (বুখারী, মুসলিম) অন্য একটি রেওয়ায়াতে আছে, মাসে তিন দিন করে সওম পালন করা সারা বছর সওম পালনের সমতুল্য। ( বুখারী, মুসলিম)
পরিশেষে বলবো, আমরা সবাই কোন না কোনভাবে গুনাহগার। একমাত্র আল্লাহর অনুগ্রহ ছাড়া আমরা কেউই দুনিয়া ও আখিরাত কোন ক্ষেত্রেই কামিয়াব হতে পারবনা। তাই আমাদের চাওয়া-পাওয়া, চিন্তা-চেতনা, হাসি-কান্না, উপার্জন, ভালোবাসা, ঘৃণা, ইচ্ছা দৈনন্দিন সকল কার্যাবলী যেন আল্লাহর সন্তুষ্টি ঘিরেই আবর্তিত হয় আর সেই দিকে নজরের ব্যাপারে আমাদের যেন কোন ঘাটতি না থাকে। যেন কোন গুনাহ হয়ে গেলে নিজের মনই ব্যকুল হয়ে যায়, বার বার তওবার জন্য তাগিত দিতে থাকে। এর জন্য প্রয়োজন শক্তিশালী নফসে মুতমাইন্না বা প্রশান্ত হৃদয়। যার জন্য আমাদের প্রত্যেকেরই আজকে থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি।
লেখক: শিক্ষক স্টামফোরড ইউনিভারসি
-এটি