মাসউদুল কাদির
কেউ কেউ দূরে থাকেন, কোনো যোগাযোগও হয় না। কথাও হয় না। তবু তার সঙ্গে, তার কাজের সঙ্গে ভালোবাসা মিশে থাকে। সেই ছোটবেলার সম্পর্ক বড় ভাই মাওলানা আনিছুর রহমান আশরাফীর সঙ্গে। তিনি আমার প্রিয় উস্তাদ শাইখুল হাদিস মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাক ফরিদী রহ.-এর পরিচালিত রাজধানীর দারুল কোরআন শেখ জনুরুদ্দীন রহ. মাদরাসায় বক্তৃতার মঞ্চে দাঁড়িয়ে ঝড় তুলেছিলেন। তুখোর মেধার তারুণ্যদীপ্ত মানুষটি আমার তখনই হৃদয় কেড়ে নিয়েছিলেন।
কারও প্রতি কীভাবে ভালোবাসা জন্মায় তা অনেক সময় নিজেরই জানা থাকে না। সেই প্রিয় ভাই মাওলানা আনিছুর রহমান আশরাফী সড়ক দুর্ঘটনা আহত হয়েছেন বলে জানলাম। নিজের পায়ে বেন্ডিজ লাগানো একটা ছবিও আমি পেলাম। পরে নিজের সবখানে খুঁজলাম মাওলানা আনিছুর রহমান আশরাফীর মুঠোফোন নম্বর। পেলাম না। একটা নম্বর পেলেও সেটিতে ফোন যাচ্ছে না। কথা বলাও হলো না।
মাওলানা আনিছুর রহমান আশরাফী এখন শুয়ে আছেন নিজের পা ভেঙে ঘরে। এমন একজন পরিশ্রমী মানুষের ঘরে বসে থাকাটা কতটা কষ্টের তা আমরা জানি। যারা সামান্যই পরিশ্রম করি, তাদের বুঝতে কষ্ট হবার কথা নয়। আল্লাহর মেহেরবানী, প্রিয় ভাইটি শুধু পায়ে আঘাত পেয়েছেন। বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি।
ছোটবেলা আমারও পা ভেঙেছিল। আমাদের এলাকায় হাডুডু খেলার চল ছিল। বিকাল হলেই হাডুডু খেলতাম আমরা। কিন্তু হাডুডুকে বাড়ির কেউই পছন্দ করতো না। কারণ, জামাকাপড় নষ্ট হতো। পড়তে বসতে বিলম্ব হতো বলে। কিন্তু পাড়ার সবাই যখন খেলতে যায় তখন নিজেকে আর কীভাবে মানিয়ে রাখা যায়। আমাদের এক পাড়ার সঙ্গে আরেক পাড়ার ম্যাচও হতো।
ছোটবেলায় আবার অনেকে হায়ারও করে নিতো। আমাকে একবার আরেক পাড়ার ছেলেরা দুই হালি আম দিয়ে হায়ার করলো। তখনই হাডুডু খেলতে গিয়ে পা ভাঙলো। এরপর পড়ে থাকলাম বিছানায় তিন মাস। আল্লাহর মেহেরবানী ওই পায়ে এরপর থেকে বুঝতেই পারিনি কখনো ভেঙেছিল।
আশা করি, খুব শিগগিরই মাওলানা আনিছুর রহমান আশরাফী ভাই সুস্থ হয়ে উঠবেন। আবার দ্বীন প্রচারের কাজে যুক্ত হবেন। নিজের গবেষণা চালিয়ে যাবেন। আরও বেশি খেদমাত নেবেন আল্লাহ তাআলা তাকে দিয়ে। আল্লাহ তাআলা তাকে রোজ রোজ দ্বীনের কাজেই লাগিয়ে রাখুন। দ্রুত সুস্থ করে দিন। আমীন।
পুনশ্চ: মাওলানা আনিছুর রহমান আশরাফী ভাই বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন কুমিল্লা ময়নামতি মাদরাসায়ে আশরাফিয়ার প্রতিষ্ঠাতা মুহতামিম হিসেবে।
-এটি