মুফতি নূর মুহাম্মদ রাহমানী।।
আল্লাহতায়ালা যখন অবতীর্ণ করলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ নবীর ওপর রহমত বর্ষণ করেন আর ফেরেশতাকুল করেন দোয়া। হে মুমিনগণ, তোমরা তাঁর ওপর বেশি বেশি দুরুদ পড় ও খুব সালাম পাঠাও।’ (সূরা আহযাব, আয়াত : ৫৬) তখন সাহাবায়ে কেরাম (রা.) নবীজি (সা.)-কে বললেন, আমরা আপনার প্রতি সালাম পাঠানোর পদ্ধতি জেনেছি, তবে আপনার ওপর কোন তরিকায় এবং কোন শব্দে দুরুদ পাঠ করব তা জানি না। অথচ আল্লাহতায়ালা আমাদের দুরুদ পড়তে বলেছেন।
তখন নবীজি (সা.) দুরুদের বিভিন্ন শব্দ ও বাক্য সাহাবিগণকে শিক্ষা দিয়েছেন। আল্লাহতায়ালা তাঁর প্রিয় হাবিবের প্রতি দুরুদ পাঠ করেন তথা রহমত বর্ষণ করেন। আর ফেরেশতারাও তাঁর প্রতি দুরুদ পাঠ করেন তথা দোয়া করেন। কোরআন ও হাদিসে দুরুদ পাঠের বহু ফজিলত আছে। দুরুদ পাঠ করে ফজিলত পেতে হলে নবীজির বাতলানো তরিকায় দুরুদ পাঠ করা আবশ্যক, নতুবা বর্ণিত সওয়াব ও ফজিলত থেকে বঞ্চিত হতে হবে। দুরুদ পাঠ করার কিছু মুস্তাহাব ক্ষেত্র আছে।
ইসলাম বিশেষজ্ঞগণ বলেছেন, নবী করিম (সা.)-এর ব্যাপারে কোনো নিষেধাজ্ঞা না থাকলে সর্বদা মুস্তাহাব। আলেমগণ দুরুদ পাঠ করার মুস্তাহাব স্থানগুলো উল্লেখ করেছেন। সেই স্থানগুলো হলো- ১. জুমার দিনে ও রাতে। এতে কেউ শনিবার, রবিবার ও বৃহস্পতিবারও বর্ধিত করেছেন। ২. সকাল-সন্ধা। ৩. মসজিদে প্রবেশ করতে ও বের হতে।
৪. নবী করিম (সা.)-এর রওজা মোবারক জিয়ারত করতে। ৫. সাফা-মারওয়া অবস্থান করা অবস্থায়। ৬. জুুমা বা অন্য কোনো খুতবায় ৭. মুয়াজ্জিনের আজানের প্রতিউত্তরের পর। ৮. ইকামতের সময়। ৯. যে কোনো দোয়ার শুরুতে, মাঝে ও শেষে। ১০. দোয়ায়ে কুনুতের পর। ১১. তালবিয়া থেকে ফারেগ হওয়ার পর। ১২. কোনো বৈঠকে এবং বৈঠক থেকে পৃথক হওয়ার সময়।
১৩. অজু করার সময়। ১৪. কানে শোঁ শোঁ আওয়াজ হয়ে গেলে। ১৫. কোনো জিনিস ভুলে গেলে তা স্মরণ করতে। ১৬. ওয়াজ এবং ইলমে দীনের প্রচার-প্রসার করার সময়। ১৭. হাদিস শরিফ পাঠ করার শুরুতে এবং শেষে। ১৮. প্রশ্ন এবং ফাতাওয়া লেখার সময়। ১৯. প্রত্যেক লেখক এবং শিক্ষকের জন্য। ২০. বিয়ের প্রস্তাবদাতা, বিয়েকারী ও বিবাহিত সকলের জন্য। ২১. সকল গুরুত্বপূর্ণ কাজের শুরুতে দুরুদ পাঠ করা মুস্তাহাব। (ফাতাওয়া শামি ২.২০৪)
লেখক: মুহাদ্দিস জামিয়া আরাবিয়া দারুল উলূম বাগে জান্নাত চাষাড়া, নারায়ণগঞ্জ।
-এটি