সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


‘ভারতে সাথে দেশবিরোধী চুক্তি বাতিল ও স্বাস্থ্যখাতসহ সকল সেক্টর দুর্নীতিমুক্ত করতে হবে’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেছেন, দেশ দুর্নীতি ও বন্যা কবলিত। স্বাস্থ্যখাতসহ রাষ্ট্রের রন্দ্রে রন্দ্রে দুর্নীতি জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিজেও দুর্নীতিগ্রস্ত। তিনি বলেন, ২০১৮ সালে সম্পাদিত দ্বিপক্ষীয় চুক্তির ভিত্তিতে বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দর ‘অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পরীক্ষামূলকভাবে’ ব্যবহার করে ভারতের আসাম ত্রিপুরা রাজ্যে পণ্য পরিবহনের জন্য উম্মুুক্ত করে দেয়া হয়েছে। যা বাংলাদেশের চরম স্বার্থবিরোধী। একইসাথে বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দরে ভারতের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার দূরভিসন্ধি। সেইসাথে দেশে ভারতীয় উপনিবেশ কায়েমের সুদূরপ্রসারী চক্রান্ত চলছে।

সোমবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে ভারতের সাথে ট্রান্সশিপমেন্ট চুক্তি বাতিলের দাবি, স্বাস্থ্যখাতসহ সরকারের বিভিন্ন সেক্টরে সীমাহীন দুর্নীতির প্রতিবাদ ও শিক্ষক, কর্মচারী ও শ্রমিকদের বেতন বোনাস ঈদের আগেই পরিশোধ করার দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, ১৯৭৫ সালে ভারত পরীক্ষামূলকভাবে ৪১ দিনের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে ফারাক্কা বাঁধ চালুর কথা বলে চালু করে সেই বাঁধ আজ ৪৫ বছরেও বন্ধ হয়নি। এবারও পরীক্ষামূলক চুক্তির মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে বিকিয়ে দেয়ার পাঁয়তারা হচ্ছে। ভারত স্বাধীন বাংলাদেশে ব্রিটিশ উপনিবেশের পুনঃমঞ্চায়ন করতে মরিয়া। অথচ নেপাল থেকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ কিনবে, তার জন্য ভারত বাংলাদেশকে ব্যবহারের অনুমতি দেয়নি। এমন নিমক হারামিদের সাথে কোন চুক্তি হতে পারে না। এ চুক্তি বাতিল করতে হবে।

তিনি বলেন, সরকার দেশবিরোধী চুক্তি বাতিল না করলে প্রয়োজনে দুর্নীতিবাজ সরকার অপসারণ করে হলেও দেশ ও দেশের স্বার্থবিরোধী যে কোন চুক্তি বাতিল করা হবে। এজন্য জনগণকে প্রস্তুতি গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, নতজানু ও গণবিচ্ছিন্ন সরকার জনগণের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। ফলে জাতিসত্ত্বা চরম হুমকির মুখে। ভারতের সাথে কোন চুক্তি নয়। বিনা ট্যারিফে এ গোলামী চুক্তি যারা করছে তারা ভারতের বন্ধু হতে পারে এদেশের জনগণের বন্ধ নয়। এ সরকার এর আগে ৩০ দফা চুক্তি করেছে ভারতের সাথে। সরকার দুর্নীতির ম্যাধমে ক্ষমতায় আসার কারণে রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে সীমাহীন দুর্নীতি চলছে। এই দুর্নীতিবাজদের ক্ষমতাম থেকে অপসারণ করে দেমপ্রেমিক সরকার কায়েম করতে না পারলে দুর্নীতি বন্ধ হবে না।

মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ বলেন, দেশের রাজনৈতিক দলগুলো প্রবল বিরোধীতা সত্ত্বেও সরকার ট্রান্সশিপমেন্ট চুক্তি করে দেশকে ভারতের হাতে তুলে দিয়েছে। ৩০ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন দেশে উপনিবেশ কায়েমের যেকোনো হীন চক্রান্ত রুখে দিতে হবে। তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ সকল লুটেরাদের পদত্যাগ দাবি করেন।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, স্বাস্থ্য খাতকে তিলে তিলে তলাবিহীন ঝুঁড়িতে পরিণত করা হয়েছে। স্বাস্থ্যখাতে বর্তমান অবৈধ সরকারের কর্তাব্যক্তিদের আশ্রয় প্রশ্রয়ে সাহেদ সাবরিনারা সৃষ্টি হয়েছে। ভারত ট্রান্সশিপমেন্টের নামে করিডোর সুবিধা নিচ্ছে। এদেশের জনগণ ভারতের সাথে কোন চুক্তি করতে রাজি নয়। তিনি বলেন, গত বছরের চেয়েও এবছর চামড়ার মূল্য কম নির্ধারণ করে সরকার এ শিল্পকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। পাট শিল্পকে বহু আগেই ধ্বংস করে এখন চামড়া শিল্পকে শেষ করে দিচ্ছে বর্তমান সরকার। করোনা পরিস্থিতিতে দেশের লাখ লাখ শিক্ষক-কর্মচারি, শ্রমিক বেতন না পেয়ে, চাকুরি হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। হাজার হাজার শ্রমিক করোনা পরিস্থিরি মধ্যেও বেতন ভাতার জন্য রাজপথে বিক্ষোভ করছে। শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে মালিকপক্ষ অমানবিক ও প্রতারণাপূর্ণ আচরণ করছে। এমন পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে সরকারের কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে এবং ঈদের আগেই যেন বেতন-ভাতা পায় সে ব্যবস্থা করতে হবে।

মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- দলের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, ছাত্রনেতা এম হাছিবুল ইসলাম, উত্তর সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন, দক্ষিণ সেক্রেটারী মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, ডা. শহিদুল ইসলাম, মুফতী ফরিদুল ইসলাম, যুবনেতা মাহবুব আলম, মু. হুমাযুন কবীর, এইচ এম সাইফুল ইসলাম, আব্দুস সবুর, অধ্যাপক ফজুল হক মৃধা, শ্রমিকনেতা জাকির হোসেন, ছাত্রনেতা আখতারুজ্জামান প্রমুখ।

-এএ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ