মুফতি জাবের কাসেমী : করোনার ভয়াল থাবায় বিশ্বব্যাপী আজ অর্থনীতি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত। এমন কোন শ্রেণী নেই যারা এ ক্ষতির সম্মুখীন হননি। বিশেষভাবে আমাদের দীনি প্রতিষ্ঠান, যেগুলো সাধারণ মানুষের সহায়তা চলে, সেগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। কারণ সাধারণ মানুষের সহায়তা তখুনি অব্যাহত থাকে। যখন তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ও চাকরি স্বাভাবিক থাকে। এখন যেহেতু এসব স্বাভাবিক নেই তাই সহায়তাও স্বাভাবিক ভাবেই আগের মতো নেই।
দেশব্যাপী সরকারের পক্ষ থেকে যখন বিভিন্ন পেশার মানুষের জন্য সহযোগিতা হিসাবে বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছিলো। তখন কওমি শিক্ষকদের সহযোগিতা করার জন্যও বিভিন্ন মহল থেকে দাবি জানানো হয়েছিলো। কিন্তু সরকারি সহযোগিতা নেয়া ঠিক হবে না বিধায় তা গ্রহণ না করার জন্য মাদরাসাগুলোর প্রতি বেফাক থেকে আহবান জানানো হয়। এতে সাড়া দেন কওমি মাদরাসার সাধারণ শিক্ষকগণ। তারা সরকারি সহযোগিতা গ্রহণ করেননি।
এদিকে বেফাকের জিম্মাদারগণ মাদরাসাগুলোতে সহযোগিতার আশ্বাস দেন। সিদ্ধান্তও গ্রহণ করেন। যেটা বিলম্বে হলেও পর্যায়ক্রমে সহযোগিতা প্রদান শুরু করেছেন তারা। কিন্তু সহযোগিতার তালিকায় শুধু ঢাকার বাইরের মাদ্রাসাগুলো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। অথচ যেভাবে ঢাকার বাইরের মাদ্রাসাগুলো বেফাকভুক্ত। তদ্রুপ ঢাকার ভিতরের মাদ্রাসাগুলোও বেফাকভুক্ত। ঢাকার বাইরের মাদ্রাসাগুলোর শিক্ষকগণ যেমন বেতন না পাওয়ার সমস্যায় আছেন, ঢাকার অনেক মাদ্রাসার শিক্ষকগণও বেতন না পাওয়ায় সমস্যায় আছেন। হ্যাঁ ঢাকার বড় বড় কিছু মাদ্রাসার বেতন সমস্যা নেই, যাদের নেই তারা নিবে না। যাদের সমস্যা আছে তাদের কি হিসাবে বাদ দেয়া হলো বোধগম্য নয়।
এখন যদি তারা তাদের মাদ্রাসার বরাদ্দ ঠিক রেখে অন্য মাদ্রাসার অসহায় শিক্ষকদের প্রাপ্য বরাদ্দ থেকে বঞ্চিত করেন, তাহলে তা কতটুকু যুক্তিসঙ্গত হবে? আশা করি দায়িত্বশীলগণ ভেবে দেখবেন!
তাছাড়া বেফাকের এ অনুদান সরকারি কোন অনুদান নয়, এজন্য এতে সবার অধিকার আছে বলে মনে করি। কারো যদি প্রয়োজন না হয় তাহলে তাদের প্রতিষ্ঠান গ্রহণ করবে না। সম্পূর্ণভাবে বাদ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
হ্যাঁ এতটুকু হতে পারতো ,আগে ঢাকার বাইরের মাদ্রাসাগুলোতে অনুদান প্রদান করতো। তারপর না হয় ঢাকার ভিতরের মাদ্রাসাগুলোতে দেয়া যেতো। এভাবেই অনেক অসহায় শিক্ষক বিষয়টি তুলে ধরেছেন। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ লেখা। আশা করি বেফাকের দায়িত্বশীলগণ এই বিভাজন দূর করে অসহায় শিক্ষকদের পাশে দাঁড়াবেন।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া মাহমুদিয়া ইসহাকিয়া মানিক নগর, ঢাকা-১২০৩
এমডব্লিউ/