ওমর ফারুক
বিশেষ প্রতিবেদক>
করোনা পরিস্থিতিতে সারাদেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। বন্ধ সকল ধরণের শিক্ষা কার্যক্রম এবং শিক্ষা-সংশ্লিষ্ট আয়। তাই প্রায় সব বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছে। শিক্ষক ও কর্মচারিরা বেতন পাচ্ছেন না গত ৩ মাস ধরে।
একই পরিস্থিতি বিরাজ করছে দেশের কওমি ধারার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও। কওমি মাদরাসার আয়ের সকল উৎস এখন বন্ধ। শিক্ষার্থীরা সামান্য যে ক'টাকা মাদরাসায় দিতেন, সেটাও এখন আসছে না।
এমন পরিস্থিতিতে কঠিন সময় পার করছে কওমি মাদরাসার শিক্ষক ও কর্মচারিরা। নিজেদের সুবিধা-অসুবিধার কথা তারা তুলে ধরেছেন আওয়ার ইসলামের কাছে।
এভাবে চলতে থাকলে স্থাবর-অস্থাবর সব বিক্রি করে দিতে হবে: মুফতি ইহসানুল হক
মাদরাসার বাসা ভাড়া আটকে গেছে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা। এখনও কোনো আশার আলো দেখছি না। ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতেও তেমন সাড়া পাচ্ছি না ছাত্র/ছাত্রীদের। এভাবে চলতে থাকলে আল্লাহ না করুন স্থাবর অস্থাবর সব বিক্রি করে দিতে হবে। শারীরিক অসুস্থতা আর মানসিক অস্থিরতায় ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। হে আল্লাহ রহম করুন। দয়া করুন। সকল গুনাহ মাফ করুন।
অভিভাবকরা আমাদের কথা ভুলে যাবেন না: হাফেজ মাওলানা আবু তাহের
কওমি মাদরাসার ছাত্ররা সবসময় শিক্ষক ও মুরুব্বিদের কথা মেনে চলেন। তাদের কথার বিরুদ্ধে যায় না সাধারণত মুরুব্বিদের সমীহ-সম্মান করি। তাদের নির্দেশে আজ অবধি জীবন পরিচালনা করে আসছি। আগামীতেও তারা আমার পথ প্রদর্শক। তাই আমাদের চলমান সাময়ীক অসুবিধার বিষয়টিও তারা অনুধাবন করবেন এবং উত্তরণের পথ-পদ্ধতি বলে দিবেন।
কওমি বেকারত্বের হার বৃদ্ধি পাবে: মুমিনুল ইসলাম
যে মাদরাসায় আছি সেই মাদরাসায় প্রতিবছর সাধারণত ৭০০ থেকে ৮০০ ছাত্র ভর্তি হতো। কিন্তু এ বছর করোনা পরিস্থিতির জন্য মাত্র ১০০ উপরে ছাত্র ভর্তি হয়েছে।
ছাত্র কম থাকার কারণে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ শিক্ষক ছাঁটাই করার মতো সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়ে পড়বে। এরকম অবস্থা শুধু একটি মাদ্রাসায় নয়। বরং বাংলাদেশের ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ মাদরাসার ক্ষেত্রে হতে পারে। এবং দিনশেষে কওমি বেকারত্বের হার বৃদ্ধি পাবে।
প্রাইভেট মাদরাসাগুলো বেশি সংকটে: মুফতি আলী আকরাম
মাদ্রাসা বন্ধ হওয়ার পর থেকে দেশের সকল মাদ্রাসা চরম সংকটের মুখে পড়েছে। বিশেষ করে যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভাড়া বাড়িতে পরিচালিত সে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কঠিন সময় পার করছে। মার্চ মাস থেকে সকল প্রকার শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠান নেই। তাদের বকেয়া গুরু এখনও পরিশোধ করতে পারেনি। অধিকাংশ অপারগতা প্রকাশ করছে।
ভর্তি কার্যক্রম চালু রাখার অনুমতি থাকলেও শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতে অনাগ্রহী। অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে সকলে ভর্তি হতে যাচ্ছে না। তাই মাদ্রাসার পরিচালকরা পরিচালনা করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন।
যারা অল্প কিছুদিন পূর্বে মাদ্রাসা শুরু করেছিলেন, তারা অধিকাংশই ইতিমধ্যে মাদ্রাসা বন্ধ করে দিয়েছেন। তাদের পক্ষে মাদ্রাসা খোলা রাখা সম্ভব হচ্ছে না। তাই বলবো প্রাইভেট মাদরাসাগুলো অধিক সংকটে।
ওআই/আবদুল্লাহ তামিম