আওয়ার ইসলাম: ফেসবুক, গুগল, টুইটার, মাইক্রোসফটসহ ২০টি আন্তর্জাতিক কোম্পানি 'অফিস ফ্রম হোম' স্থায়ীভাবে চালু করতে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন ও দ্য ভার্জ এই খবর জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়, এরই মধ্যে ফেসবুক এবং টুইটার স্থায়ীভাবে 'ওয়ার্ক ফ্রম হোম' পদ্ধতি চালু করেছে। অন্যদিকে গুগল, মাইক্রোসফটসহ আরও ১৮টি কোম্পানি 'অফিস ফ্রম হোম' স্থায়ীভাবে চালুর জন্য নতুন কর্মপরিকল্পনা ও নীতি প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছে। এ অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে 'অফিস ফ্রম হোম' চালু করা হবে। এ পরিকল্পনা গ্রহণের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, এই পদ্ধতির ফলে কোম্পানিগুলোর পৃথক অফিস পরিচালনার ব্যয় বিপুল অঙ্কে কমে যাবে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী গত সপ্তাহে 'ওয়ার্ক ফ্রম হোম' স্থায়ীভাবে চালুর প্রথম ঘোষণা দেয় ফেসবুকের প্রধান মার্ক জুকারবার্গ। তিনি বলেন, কভিড-১৯ মহামারির সময় প্রমাণিত হয়েছে, বর্তমানে 'ওয়ার্ক ফ্রম হোম' একটি সফল ও কার্যকর পদ্ধতি। এমনকি আগের চেয়েও ভালো পদ্ধতি।
তিনি বলেন, ফেসবুকের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পরিসর কমবে না। প্রধান কার্যালয় বাদ দিয়ে অন্য সব কার্যালয় খুব দ্রুতই 'ওয়ার্ক ফ্রম হোম' এর আওতায় আসবে। এখন থেকে এটাই হবে ফেসবুকের অফিস পরিচালনার স্থায়ী পদ্ধতি।
মার্ক জুকারবার্গের ঘোষণার পরই একই ধরনের ঘোষণা দেন টুইটারের সিইও জ্যাক ডরসি। শুধু টুইটার নয়, নিজের মালিকানাধীন মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সেবাদাতা (এমএফএস) কোম্পানি স্কয়ারের ক্ষেত্রেও একই নীতি অনুসরণের ঘোষণা দেন জ্যাক ডরসি।
এরপর ঘোষণা আসে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গুগল, মাইক্রোসফট, শপিফাই, বক্স, গ্রুপ পিএসএর পক্ষ থেকে। তবে মাইক্রোসফট ও গুগলের ঘোষণায় বলা হয়েছে, 'অফিস ফ্রম হোম' কর্মপরিকল্পনার জন্য নতুন নীতি প্রণয়নের কাজ শুরু হয়েছে। গুগল এক ধাপ বাড়িয়ে বলছে, এই নীতি একটা সময়ে অন্য অনেকের জন্য অনুসরণীয় হতে পারে। এই নীতি প্রণয়নের পরই 'অফিস ফ্রম হোম' বাস্তবায়ন করা হবে পর্যায়ক্রমে।
তবে গুগলের সিইও সুন্দর পিচাই বলেছেন, বাড়ি থেকে অফিসের কাজ করা খুব বেশি আরামদায়ক নয়। কারণ সবার বাড়িতে অফিসের মতো প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম থাকে না। অতএব, একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনার আওতায় এই নীতি চালু করতে হবে। নতুবা এ পদ্ধতি কর্মীদের সমস্যা তৈরি করতে পারে। এ বিষয়টি বিবেচনায় রেখে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের শুরুতে লকডাউন শুরু হলে গুগল বাসায় থেকে অফিসের কাজে যুক্ত থাকা কর্মীদের উৎসাহ বাড়াতে অতিরিক্ত ১০০০ মার্কিন ডলার প্রণোদনা ভাতা দেয়।
গুগলের ঘোষণায় আরও জানানো হয়, ১ জুলাই থেকে গুগল ১০ শতাংশ কর্মী নিয়েই অফিসের কাজ শুরু করবে। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি অনুযায়ী কর্মী সংখ্যা বাড়ানো হবে, একই সঙ্গে 'অফিস ফ্রম হোম' নীতিরও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।
দ্য ভার্জ জানায়, এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ১২টি এবং ইউরোপের ৮টি বহুজাতিক কোম্পানি 'অফিস ফ্রম হোম' স্থায়ীভাবে চালুর ঘোষণা দিয়েছে। তবে ফেসবুক এবং টুইটার ছাড়া এ মুহূর্তেই কেউ বিস্তৃত পরিসরে এ নীতিতে যাচ্ছে না।
প্রথম দিকে বাসা থেকে অফিসের কাজ করার অভ্যাস না থাকায় কিছুটা সমস্যায় পড়েন কর্মীরা। পাশাপাশি অফিস ও বাসার পরিবেশের পার্থক্যটাও কাজের ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও সংকট তৈরি করে। তবে গত দু'মাসে কর্মীরা 'ওয়ার্ক ফ্রম হোম' পদ্ধতিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। এখন তারা এই পদ্ধতি উপভোগ করছে। পাশাপাশি কর্মীদের বাসা থেকে কাজের সুবিধার জন্য প্রযুক্তিগত যা যা সহায়তা প্রয়োজন, তাও সরবরাহ করা হচ্ছে।
-এএ