শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


মাদরাসা খোলা নিয়ে তরুণ আলেমরা কী ভাবছেন?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সুফিয়ান ফারাবী
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট>

দিন দিন বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। বাড়ছে মৃত্যু। স্বাস্থ্যঝুঁকিতে দেশ। এরইমধ্যে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর ঘোষণায় খুলে দেওয়া হয় দেশের অধিকাংশ বাণিজ্যিক বা সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। তুলে নেওয়া হয় অঘোষিত লকডাউন।

কিন্তু মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বা জামেয়া সবকিছু এখনো বন্ধ রেখেছে প্রশাসন। শুধুমাত্র অফিসিয়াল কার্যক্রম পরিচালনা করার অনুমতি প্রদান করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কওমি মাদ্রাসার জন্য আলাদাভাবে ইসলামী ফাউন্ডেশন থেকে মহাপরিচালক স্বাক্ষরিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ বিষয়টি জানানো হয়। মাদ্রাসা বন্ধ থাকায় একদিকে ২০ লক্ষ কওমী শিক্ষার্থী পড়াশোনা থেকে দূরে আছেন।

অন্যদিকে ২ লক্ষাধিক শিক্ষক মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এ বিষয়টি নিয়ে দেশের শীর্ষ আলেমরা ঐক্য মত পোষণ করেছেন, আরো কিছুদিন ধৈর্য্য ধরে, পরিস্থিতি অবলোকন করে মাদ্রাসা খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে তরুণ আলেমরা বিষয়টিকে দেখছেন বিভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে।

কেউ ভাবছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে সরকারকে চাপ দিয়ে বা অনুরোধ করে মাদ্রাসা খোলা ঠিক হবে না। কেউ বলছেন, সীমিত পরিসরে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখা হোক।

কোরবানির ঈদের আগ পর্যন্ত মাদ্রাসা খোলা ঠিক হবে না: আলি হাসান তৈয়ব (সহকারী সম্পাদক, আলোকিত বাংলাদেশ)

কুরবানীর আগ পর্যন্ত মাদ্রাসা খোলা সম্ভব নয়। কারণ পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। প্রতিদিন বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এমন পরিস্থিতিতে মাদ্রাসা খোলার চিন্তা করাও যাচ্ছে না। আমরা কুরবানী পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারি। তাতে পরিস্থিতি অনুধাবনের সময় পাবো। এই সময়ের মধ্যে আমরা আগামী দিনের করণীয় এবং পদ্ধতি নির্ধারণ করতে পারবো।

সীমিত পরিসরে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখা যেতে পারে: সৈয়দ শামসুল হুদা (গবেষক ও লেখক)

শিক্ষা কার্যক্রম পরিপূর্ণ বন্ধ না রেখে সীমিত পরিসরে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখা যেতে পারে। যদি চলমান অবস্থার মত দীর্ঘ সময় ধরে মাদ্রাসাগুলো বন্ধ থাকে তাহলে এটা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সুখকর হবে না। কওমি শিক্ষা ব্যবস্থায় বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে আসবে। এজন্য সীমিত পরিসরে মাদ্রাসা খোলা রাখা দরকার। "সুতরাং যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান সাধারণত ৫০০ ছাত্র ভর্তি নেয়, সেসব প্রতিষ্ঠান ২০০ ছাত্র ভর্তি নেবে।

এতে শিক্ষা কার্যক্রম চলবে‌। পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধী মেনে চলাও সহজ হবে। তবে সীমিত পরিসরে চালু করলেও স্বাস্থ্য বীধি পরিপূর্ণ গুরুত্ব দিতে হবে।

যতদিন লাগে লাগুক, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আগে মাদ্রাসা খোলা ঠিক হবে না: সানাউল্লাহ আজহারী (প্রিন্সিপাল, দারুল আরকাম আল ইসলামিয়া, ঢাকা)

পরিস্থিতি পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসার আগে মাদ্রাসা খোলা যাবে না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পূর্বে যদি সরকার অনুমতি দেয়, তবুও মাদ্রাসা খোলা ঠিক হবে না। বিভিন্ন সময় সরকার জনগণের মন রক্ষায় ‌জনগনের আবেদন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত দিয়ে থাকে। অনেক সময় তা চরম ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আশা করছি সরকার ও আল হাইয়া বিষয়টি খোলা চোখে অনুধাবন করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।

তবে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখা যেতে পারে অনলাইনে। আমার প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে। কিন্তু ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম আমরা চালিয়ে নিচ্ছি। এমন কঠিন পরিস্থিতিতে টেকনোলজির সহযোগিতা নেওয়া যেতেই পারে।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ