সুফিয়ান ফারাবী
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট>
করোনা পরিস্থিতিতে স্থবির হয়ে পড়েছে দেশের অর্থনীতি। কর্মহীন হয়ে পড়ায় চরম অর্থাভাবে পড়েছে দেশের নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ ছুটি চলায় অর্থনৈতিকভাবে চরম সংকটে পড়েছে মানুষ।
কঠিন এ সংকটে কওমি মাদরাসার শিক্ষকদের পরিবারেও দেখা দিয়েছে একই দৃশ্য। অধিকাংশ শিক্ষকের বক্তব্য অনুযায়ী, তারা বেতন পাচ্ছেন না। এদিকে এ অসহায় অবস্থাতেও হাত পেতে চাইতে পারছেন না চক্ষুলজ্জার ভয়ে।
সংকটের এ মুহূর্তে শিক্ষকদের সহযোগিতা করতে বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া একটি সাময়িক তহবিল গঠন করেছে। বেফাকের নিজস্ব অর্থায়ন ও সাধারণ মানুষের দানের মাধ্যমে এ তহবিল গড়ে তোলা হয়।
বেফাকের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক আওয়ার ইসলামকে বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত তহবিল ও তালিকা গঠনের কাজ করছি। তহবিলে এখন পর্যন্ত বেফাকের নিজস্ব অর্থ ও সাধারণ মানুষের টাকা গ্রহণ করা হয়েছে। আশা করছি সপ্তাহখানেকের মধ্যে তহবিল গঠন পূর্ণতা পেলে আমরা বৈঠক করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।
দীর্ঘদিনেও কেন তহবিল-তালিকা গঠনের কাজ শেষ হয়নি?
এমন প্রশ্নের জবাবে মাওলানা মাহফুজুল হক বলেন, বাংলাদেশ প্রায় ২০ হাজার মাদরাসা রয়েছে। পরিপূর্ণ স্বচ্ছ তালিকা করতে আমাদের কালক্ষেপণ হচ্ছে। আমরা চাই পরিপূর্ণ স্বচ্ছতার সাথে শিক্ষকদের পাশে দাঁড়াতে। কোন প্রকার অনিয়ম ও দূর্নীতি আমরা চাই না।
শিক্ষকদের জন্য সরকারি অনুদান গ্রহণে অনাগ্রহ প্রকাশ করছে না। শুধুমাত্র বেফাক এ বিষয়ে একটু ভিন্ন মত পোষণ করছে। তারা সরাসরি না করেছেন, কোন প্রকার সরকারি অনুদান তারা গ্রহণ করবেন না। এ বিষয়ে আল্লামা ফরিদ উদ্দীন মাসউদ বলেন, সরকার এ মুহূর্তে বিভিন্ন সেক্টরে প্রণোদনা, অনুদান ও অর্থ সহযোগিতা করছে। সরাসরি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে আমার কথা হয়নি। কিন্তু নির্ভরযোগ্য সূত্রে যতটুকু শুনেছি তিনি এ বিষয়ে ইতিবাচক।
সরকারি অনুদান গ্রহণ আমি ব্যক্তিগতভাবে ইতিবাচক দেখি। দোষের কিছু মনে করি না। এখন সংকটের সময় চলছে। শিক্ষকদের দিকে তাকিয়ে সরকার সহযোগিতা করতে চাইলে আমি সাধুবাদ জানাবো। দ্বিমত করবো না। সরকারি অনুদান গ্রহণের ব্যাপারে এভাবেই নিজের মতামত তুলে ধরেন বয়োজ্যেষ্ঠ এ আলেম।
তবে সরকারি অনুদানের বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি বেফাকের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক। তিনি মহাসচিবের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলার পরামর্শ দেন। কিন্তু বেফাক মহাসচিব আল্লামা আব্দুল কুদ্দুসের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এর আওতায় পড়বে দেশের মাদরাসাগুলোও। সংকটের এ মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণায় আরো চিন্তিত হয়ে পড়েছে মাদরাসার শিক্ষক, প্রিন্সিপাল ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
ওআই/আবদুল্লাহ তামিম