বিন ইয়ামিন
বিশেষ প্রতিবেদক>
রমজান মাসে বাংলাদেশের মসজিদে জমায়েত করে তারাবির নামাজ না পড়ে বিকল্প হিসেবে মসজিদ থেকে টেলিভিশনে তারাবির নামাজ সরাসরি সম্প্রচারের প্রস্তাব করেছেন সাংসদ সাবের হোসেন চৌধুরী।
তিনি বলেছেন, যেকোনো একটি স্থানের নামাজ সম্প্রচার করা হলে সেটার অডিও অনুসরণ করে মানুষ খতমে তারাবি পড়তে পারবে। যেমনটি আমরা বিশ্ব ইজতেমার মোনাজাতের ক্ষেত্রে দেখে থাকি।
তবে তিনি এ-ও বলেছেন, বিষয়টি ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী এবং ধর্মীয় নিয়ম অনুযায়ী কিনা সেটা জানতে হবে সেটা নিয়ে আরও চিন্তা হতে পারে কথা হতে পারে।
এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে চলছে সমালোচনার ঝড়। বিষয়টি নিয়ে হাসাহাসি করছেন অনেকে।
আল হাইয়াতুল উলিয়ার কেন্দ্রীয় ফতোয়া বোর্ডের সিনিয়র সদস্য মুফতি মিযানুর রহমান সাঈদ বলেন, জামাতে নামাজ পড়তে হলে ইমামের সাথে মুসল্লিদের সংযোগ প্রয়োজন হয়। সংযোগ ছাড়া নামাজ হয় না। সুতরাং টেলিভিশন, রেডিও অথবা যে কোন প্রকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের দ্বারা নামাজ সম্প্রচার করে তার অনুকরণে নামাজ আদায় করলে, তা আদায় হবে না।
চট্টগ্রাম ওমর গনি কলেজের সাবেক অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ড. মাওলানা আ ফ ম খালিদ হোসাইনের মতে, ইমামের সাথে মুসল্লির দূরত্বের সীমারেখা নিয়ে ইমামদের মাঝে মতপার্থক্য থাকলেও এ ব্যাপারে সকলেই একমত যে, সরাসরি ইমামের আওয়াজ শ্রবণ করে নামাজ পড়তে হবে। ইমামের পেছনে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে হবে। এ ছাড়া নামাজ হবে না। এজন্য অধিক সংখ্যক মুসল্লি হলে সাউন্ড বক্স বা মোকাব্বিরের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।
নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের মোহাম্মদী সেন্টারে এরকম একটি আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে তারা সরাসরি নামাজ সম্প্রচার করবেন। তাদের সঙ্গে একত্রে নামাজ পড়ার আহ্বান জানানো হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে।
এ বিষয়ে মুফতি মিযানুর রহমান সাঈদ বলেন, যারা এ ধরনের প্রক্রিয়ায় নামাজ পড়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে তাদের নামাজ হবে না। এ প্রক্রিয়াটি ইসলাম সম্মত বিধান নয়। আমরা নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের সেই ইমামকে সেভাবে চিনিও না।
আমাদের মনে হয় তিনি ভুল বুঝে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমাদের কথা হল কেউ যদি এরকম লাইভ সম্প্রচার সাহায্যে নামাজ পড়তে চান, তার নামাজ আদায় হবে না। এ বিষয়ে সারাবিশ্বের ওলামায়ে কেরামের ঐক্যমত রয়েছে।
সাবের হোসেন চৌধুরীকে উদ্দেশ্য করে এ দুই আলেম বলেন, এমপি সাহেবের একটি কথা ভালো লেগেছে। তিনি বলেছেন, বিষয়টি ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী এবং ধর্মীয় নিয়ম অনুযায়ী কতটুকু সঠিক সেটা জানতে হবে। সেটা নিয়ে আরও চিন্তা হতে পারে, কথা হতে পারে।
এখানে এমপি সাহেবের আরেকটু সচেতন হওয়া উচিত ছিল। তিনি বিজ্ঞ আলেমদের সাথে পরামর্শ করে তারপরে বিষয়ে মন্তব্য করতে পারতেন। তাহলে এ ধরনের সমালোচনা হত না। আমরা আশা করব এমপি সাহেব আগামীতে ধর্মীয় বিষয়ে নিশ্চিত না হয়ে কোন কথা বলবেন না। এটি হবে তার জন্য অধিকতর কল্যাণ।
ওআই/আবদুল্লাহ তামিম