রফিকুল ইসলাম জসিম
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট>
বৈশাখ শুরু হতে না হতেই প্রচণ্ড বজ্রপাতের কবলে পড়ে প্রাণ হারাচ্ছেন সিলেটের মানুষ। গত দুই দিনে (শুক্রবার ও শনিবার) বজ্রপাতে সিলেট বিভাগে অন্তত ১০ জন মারা গেছেন। তার মধ্যে গতকাল শনিবারেই মারা গেছে ৯ জন।
মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে সিলেট জেলার ৪ জন, সুনামগঞ্জের ৪ জন এবং হবিগঞ্জের দুইজন রয়েছেন।
জানা যায়, গত শুক্রবার সকালে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার শাহজাহান ইউনিয়নের উত্তর সুরমা গ্রামের কৃষক সিরাজ উদ্দিন বজ্রপাতে প্রাণ হারান। তিনি গরুর জন্য হাওরে ঘাস কাটতে গিয়েছিলেন।
একই উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের অলি ইসলামের ছেলে গরু ব্যবসায়ী লালু মিয়া (৩৯) শনিবার বজ্রপাতে মারা গেছেন। গরু নিয়ে মাঠে গিয়েছিলেন তিনি।
এদিকে শনিবার দুপুরে সিলেট সদর উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নে বজ্রপাতে বাবা ও ছেলের মৃত্যু হয়। নিহতরা হলেন- ইউনিয়নের পুরান কালারুকার পূর্ব উত্তরপাড়ার শমসের আলী ও তার ছেলে ছয়ফুল আহমদ। তারা কালারুকা পশ্চিম হাওরে (উনাখাওরি বিল) ধান কাটতে গিয়েছিলেন।
একইদিন বিকেলে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার মানিকপুর ইউনিয়নের দরগাবাহার গ্রামে বজ্রপাতে প্রাণ হারান ইসলাম উদ্দিন বলাই। গরু আনতে মাঠে গিয়েছিলেন তিনি।
এছাড়া ওসমানীর উপজেলার দয়ামীর ইউনিয়নের খাইদ্যর গ্রামে বজ্রপাতে প্রাণ হারিয়েছে রাহি আহমদ নামের এক কিশোর। সে ধান কাটতে হাওরে গিয়েছিল।
অন্যদিকে শনিবার সুনামগঞ্জ জেলার চার উপজেলায় পৃথক বজ্রপাতে প্রাণ হারিয়েছেন ৪ জন। এরা হলেন- শাল্লা উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামের সুরেন্দ্র সরকারের ছেলে শংকর সরকার (২৬), জগন্নাথপুর উপজেলার বাউধরণ গ্রামের শিপন মিয়া (৩২), দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পাথারিয়া ইউনিয়নের উত্তর গাজীনগর গ্রামের আমিনুল ইসলামের ছেলে ফরিদ মিয়া (৩৫) এবং দিরাই উপজেলার সরমঙ্গল ইউনিয়নের চিনাউরা হাওরে প্রাণ হারান হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলার মফিজ উল্লার ছেলে তাপস মিয়া (৩৫)।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, বাড়ি থেকে বাজারে যাওয়ার পথে শংকর সরকার, নলুয়ার হাওরে ধান কাটার সময় শিপন মিয়া, গরু নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে ফরিদ মিয়া এবং হাওরে ধান কাটার সময় তাপস মিয়া বজ্রপাতের শিকার হন।
অব্যাহত বজ্রপাতের ঘটনায় সিলেটজুড়ে মানুষের মধ্যে ভয় কাজ করছে। বিশেষ করে যারা ধান কাটতে হাওরে যাচ্ছেন কিংবা গরু নিয়ে মাঠে যাচ্ছেন, তাদের মধ্যেই ভয় সবচেয়ে বেশি।
বজ্রপাত থেকে বাঁচতে ঝড়ের সময় নিরাপদ স্থানে অবস্থান করা, মোবাইল ফোন না চালানো, ধাতব কোনো বস্তু স্পর্শ না করার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
-এএ