আওয়ার ইসলাম: দেশে বিদ্যমান করোনা পরিস্থিতিতে ‘পাঞ্জেগানা ও জুমার জামাতে মুসল্লিদের মসজিদে উপস্থিতি এবং আসন্ন মাহে রমজান উপলক্ষে তারাবিহ’র জামাত আয়োজন’ বিষয়ে শীর্ষস্থানীয় উলামায়ে কেরাম, মুফতি ও খতীবগণের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় দেশের অন্যতম শীর্ষ আলেম ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীর সভাপতিত্বে বারিধারাস্থ তার কার্যালয়ে এই বৈঠক শুরু হয়।
৩ ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত থাকা ৪০ জন শীর্ষস্থানীয় আলেম, মুফতি, মুহাদ্দিস ও খতীবগণ উপরোক্ত আলোচ্য বিষয়ে পৃথক পৃথকভাবে নিজেদের মতামত উপস্থাপন করেন এবং সার্বিক পরিস্থিতি ও শরীয়তের নির্দেশনা ও ব্যাখ্যার উপর উন্মুক্ত পর্যালোচনা হয়। সবশেষে উপস্থিত উলামায়ে কেরাম সর্বসম্মতিক্রম নিম্নোক্ত ৪টি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
সিদ্ধান্তগুলো হলো- ১. শরিয়তের দৃষ্টিতে যারা মাজুর বা অপারগ, তারা জুমা, পাঞ্জেগানা ও তারাবীর জামাতে হাজির হবেন না। বিশেষত যাদের মধ্যে করোনা ভাইরাসের কোন লক্ষণ বা উপস্থিতির সন্দেহ হয়, তারা অবশ্যই নিজ নিজ ঘরে নামাজ আদায় করবেন।
২. মাজুর বা অপারগ ছাড়া সকল সুস্থ মুসলমান সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্য-বিধি ও সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে জুমা, পাঞ্জেগানা ও তারাবীর জামাতে উপস্থিত থাকার উপর শরীয়তের নির্দেশনা প্রযোজ্য হবে। তাই আজকের বৈঠক থেকে উলামায়ে কেরাম সর্বসম্মতিক্রমে সরকারের কাছে এই জোর দাবি জানাচ্ছে যে, জুমা, পাঞ্জেগানা ও তারাবীর জামাতে মসজিদে সুস্থ মুসল্লিগণের উপস্থিতি বাধামুক্ত করা হোক। আমরা আল্লাহ তায়ালার নিকট দোয়া করি, আসন্ন রমজানুল মোবারকের বরকতে আল্লাহ তায়ালা দেশ ও জাতিকে করোনাসহ সকল বালা-মুসিবত থেকে মুক্তি দান করুন।
৩. আজকের বৈঠক থেকে উলামায়ে কেরামগণ যে সকল ডাক্তার-স্বাস্থ্যকর্মী, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং যারা ঝুঁকি নিয়েও মানবতার সেবায় নিয়োজিত আছেন, সকলের প্রতি আন্তরিক মোবারকবাদ ও শোকরিয়া জ্ঞাপন করছে। আল্লাহ তায়ালা তাদের সকলকে উত্তম বিনিময় দান করুন।
৪. আজকের বৈঠক থেকে উলামায়ে কেরাম দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে যে, আসুন আমরা সবাই তওবা-ইস্তগফার ও দান-সদকার প্রতি মনোযোগী হই এবং করোনা ভাইরাসের সংক্রমণরোধে সকল স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলি।
বৈঠকে উপস্থিত ও ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরকারী আলেমরা হলেন- জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদরাসার পরিচালক শায়খুল হাদীস আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী, জামিয়া নূরিয়া কামরাঙ্গীচর মাদরাসার পরিচালক আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, জামেয়া শায়েখ যাকারিয়া’র পরিচালক আল্লামা আব্দুর রব ইউসুফ, জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার শায়খুল হাদীস আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক, বসুন্ধরা ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক মুফতি আরশাদ রহমানী,
মারকাজুদ্দাওয়াতুল ইসলামির শিক্ষা সচিব মুফতি আব্দুল মালেক, মারকাজ শায়েখ যাকারিয়া রিচার্স সেন্টারের পরিচালক মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ, আকবর কমপ্লেক্স মিরপুরের পরিচালক মুফতি দেলাওয়ার হোসাইন, আশরাফুল উলূম মাদরাসার পরিচালক মাওলানা জুনায়েদ আল-হাবীব, মালিবাগ মাদরাসার মুহাদ্দিস ও শায়খুল হাদীস মাওলানা আবু সাবের আব্দুল্লাহ, জামিয়া রহমানিয়া মাদরাসার মুহাদ্দিস মুফতি মামুনুল হক, ইসলামবাগ মাদরাসার পরিচালক মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, মানিক নগর মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা ইসহাক, একই মাদরাসার নায়েবে মুহতামিম মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস।
টঙ্গী দারুল উলূম মাদরাসার পরিচালক ও শায়খুল হাদীস মুফতি মাসউদুল করীম, লালমাটিয়া মাদরাসার শায়খুল হাদীস মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী, জামিয়া সুবহানিয়ার প্রধান মুফতি মাওলানা মুহিউদ্দীন মাসুম, জামেয়া মাদানিয়া বারিধারার নায়েবে মুহতামিম ও উত্তরা ১২ সেক্টর কেন্দ্রীয় মসজিদের খতীব হাফেজ মাওলানা নাজমুল হাসান, একই মাদরাসার মুহাদ্দিস মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী, মুফতি ইকবাল হোসাইন কাসেমী, টঙ্গী তিস্তা কেন্দ্রীয় মসজিদের খতীব মুফতি জাকির হোসাইন কাসেমী, বারিধারা কেন্দ্রীয় মসজিদের খতীব মাওলানা মাসউদ আহমদ, বরিশাল মাহমূদিয়া মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা সানাউল্লাহ মাহমূদী।
মুহাম্মদপুর ইকবাল রোড মসজিদের খতীব মাওলানা হাবীবুল্লাহ মাহমূদ কাসেমী, মিরপুর কেন্দ্রীয় মসজিদের খতীব মুফতি হামিদ জহিরী, রামপুরা সালামবাগ মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা মুস্তাফিজুর রহমান, মাওলানা মুফতি খুরশিদ আলম কাসেমী, মাওলানা আবুল কালাম, মাওলানা আবু সাবের আব্দুল্লাহ, মাওলানা হামেদ জহিরী, মাওলানা শহীদুল ইসলাম, মাওলানা হাফিজ আনমুনাদী, মাওলানা সাঈদুল হক, মাওলানা মাহমুদ হাসান, মুফতি শরীফ উল্লাহ, মুফতি কাজী ইকবাল হোসাইন, মুফতি মাহমুদুল হাসান, মুফতি মুস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।
-এএ