শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


দারুল আরকাম মাদরাসার শিক্ষকদের বেতনহীন মানবেতর জীবন!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

রফিকুল ইসলাম জসিম:
বিশেষ প্রতিবেদন>

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অধীনে ২০১৭ সালে প্রতিটি উপজেলায় ২টি করে মোট ১ হাজার ১০টি দারুল আরকাম মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার জন্য মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম (৬ষ্ঠ পর্যায়) প্রকল্পটি সংশোধন করা হয়।

প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল, হাওড়-বাওড়, দ্বীপ, চরাঞ্চল, বস্তি এবং নদীভাঙন এলাকাসমূহের মধ্যে যেখানে ১.৫ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই সেসব অঞ্চল/এলাকায় উপজেলাভিত্তিক এসব ইবতেদায়ী মাদ্রাসা (১ম শ্রেণি হতে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে উল্লেখ করা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে একদিকে যেমন উচ্চশিক্ষিত আলেম-ওলামার কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে তেমনি লক্ষাধিক শিশু আরবি ভাষায় দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে দ্বীনি শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে দারুল আরকাম মাদরাসায় এদেশে সর্বপ্রথম ক্বওমী শিক্ষিতদের সরকারি চাকরি প্রদান করা হয় এবং সাথে ১ হাজার ১০ জন আলিয়া আলেমের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়। বর্তমানে আরো ১ হাজার ক্বওমী, ১ হাজার আলিয়া ও ১ জেনারেল শিক্ষক নিয়োগের অপেক্ষায় আছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দারুল আরকাম মাদরাসার শিক্ষকগণ প্রায় ৪ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। এসব মাদরাসার শিক্ষকগণ পরিবার পরিজন নিয়ে খুবই মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এর প্রভাব পড়ছে শিক্ষা কার্যক্রমে।

বর্তমানে দারুন আরকাম শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে জানতে চাইলে, দারুল আরকাম শিক্ষক কল্যাণ সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন সঙ্গে আওয়ার ইসলামের কথা হয়, দারুল আরকাম শিক্ষক কল্যাণ সমিতির যুগ্ম আহবায়ক মাওলানা মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অভিপ্রায় অনুযায়ী আরবি ভাষার মাধ্যমে ধর্মীয় শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সারাদেশে ১ হাজার ১০টি দারুল আরকাম ইবতেদায়ী মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। দেশে চাকরির অভাব। তাই ক্বওমী ও আলিয়া মাদরাসা থেকে উচ্চ শিক্ষা লাভ করেও সামান্য টাকার এ চাকরি করছি। ২০২০ জন শিক্ষক আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি।

দারুল আরকাম শিক্ষক কল্যাণ সমিতির সদস্য সচিব মাওলানা আনাস মাহমুদ বলেন, শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত স্বতন্ত্র সিলেবাস রয়েছে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। সরকারিভাবে নানা নিরীক্ষা ও গবেষণার পর এই সিলেবাস প্রণয়ন করা হয়েছে।

যুগ্ম সদস্য সচিব মাওলানা মোঃ মামুন আব্দুল্লাহ বলেন, মাদরাসাগুলো মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের অধীনে থাকায় প্রকল্প পাশ নিয়ে নানা জটিলতায় বেতন-ভাতা বন্ধ। আমাদের শিক্ষকরা বিভিন্ন সময় প্রধানমন্ত্রী, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও ইফার কাছে দ্রুত বকেয়া বেতন পরিশোধ ও ২০১৫ সালের সরকার প্রদত্ত পে-স্কেল প্রদেনের আবেদন জানিয়ে আসছেন।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গবেষণা বিভাগের সূত্র মতে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সমাজ বিজ্ঞান ইত্যাদির পাশাপাশি কুরআন তেলাওয়াত, হাদিস, আরবি ভাষা ও সাহিত্য এবং ফিকহ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে দারুল আরকামের সিলেবাসে।

ইফার নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন,মাদরাসাগুলো মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রজেক্টের অধীন। প্রকল্পটি বিগ বাজেটের। প্রকল্প পাশ হয়ে আসতে কতোদিন লাগবে তা বলা যাচ্ছে না।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ