আব্দুল্লাহ আফফান: জন্স হপকিন্স করোনা ভাইরাস রিসোর্স সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী বিশ্বে এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে মোট আক্রান্ত হয়েছে ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৩১৪ জন এবং এতে মারা গিয়েছে এক লাখ ৮ হাজার ৮২৭ জন। তার মধ্যে বাংলাদেশে করোনায় ভাইরাসে মোট আক্রান্ত হয়েছে ৬২১ জন এবং এতে প্রাণহানি ঘটেছে ৩৪ জনের।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমন ঠেকাতে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত, কল-কারখানা, গণপরিবহন, রেল, বিমান ও নৌযোগাযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। লকডাউন করে দেয়া হয়েছে অনেক এলাকা। এতে কর্মহীন হয়ে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষরা।
বিপাকে পড়েছে নিম্নবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্তরা। করোনার এই দূর্যোগপূর্ণ সময়ে বিপাকে পড়েছে অনেক মধ্যবিত্তরাও। সরকারসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠনগুলোর পাশাপাশি অনেকে ব্যক্তিগতভাবে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। তাদের একজন মুফতি মাসুম আহমাদ।
চলতি মাসের শুরু থেকে ‘ইমারজেন্সি ফুড গিফট প্যাক’ কার্যক্রম হাতে নেন রাজধানীর বনানী চেয়ারম্যান বাড়ি জামে মসজিদের খতিব মুফতি মাসুম আহমাদ। এখন পর্যন্ত প্রায় পঞ্চাশটি জেলায় তিনি ‘এমারজেন্সি ফুড গিফট প্যাক’ পৌছে দিয়েছেন। এর আগেও তিনি সুনামি, সিডর, রোহিঙ্গা ইস্যুতে ত্রাণ কার্যক্রম করেন।
মুফতি মাসুম আহমাদ আওয়ার ইসলামকে বলেন, সর্বপ্রথম আমি ও আমার পরিবারের সদস্যদের থেকে ফান্ড কালেকশন করে শুরু করি, পরে অতি ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও মুসল্লিরা অংশগ্রহন করতে শুরু করে। ফান্ড কালেকশনের ক্ষেত্রে নিদিষ্ট করে কাউকে কিছু বলতে হয়নি। সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ গ্রহণ করেছে। কেউ যদি এ কাজের সাথে শরীক হতে চায় তাহলে সরাসরি খাদ্যদ্রব্য বা অর্থ দিয়ে শরীক হতে পারবে। যারা দূরে আছে তারা বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে পারবেন। এই নাম্বারে ০১৭১১-৯৪৬৪৬৩ (বিকাশ পার্সোনাল) যোগাযোগ করতে পারেন।
তিনি বলেন, দেশে এখন পর্যন্ত ১৪২৬ পরিবারে ইর্মাজেন্সি ফুড গিফট প্যাক পৌঁছে দিতে পেরেছি। তার মধ্যে ঢাকার বনানীর কড়াইল বস্তিতে ১ হাজার পরিবারের কাছে ফুড গিফট প্যাক দেয়া হয়েছে। বাকি ৪২৬টি দেশের অন্যান্য জেলায় দেয়া হয়েছে। তবে কড়াইল বস্তিতে আরও ১ হাজার পরিবারের কাছে ফুড গিফট প্যাক দেয়ার পরিকল্পনা আছে। করোনার দূর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি চলাকালে ধারাবাহিকভাবে ইর্মাজেন্সি ফুড গিফট প্যাক বিতরণ করব। ইনশাআল্লাহ।
সাহায্যপ্রার্থীদের সাথে কিভাবে যোগাযোগ করেন এ বিষয়ে তিনি বলেন, যারা খাদ্যসংকটে আছে তারা বা তাদের পরিচিতরা ফেসবুকের ইনবক্সে আমাকে জানায়। তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেয়। আমি তাদের কাছ থেকে তাদের মসজিদের ইমাম বা মুয়াজ্জিনের নাম্বার নিয়ে যোগাযোগ করি। সেসব ইমাম, মুয়াজ্জিনরা স্বতঃস্ফুর্তভাবে সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন। তারা দোকানে গিয়ে প্রয়োজন মাফিক গিফট প্যাক তৈরি করেন। আমি দোকানীর সাথে কথা বলে বিকাশে বিল পে করে দেই।
এতে যারা অনেক কষ্টে থাকা সত্ত্বেও আত্মসম্মানের কারণে কারো কাছে বলতে পারে না, চাইতে পারে না। ইনবক্সে যোগাযোগ করার কারণে আমি ছাড়া বিষয়টি কেউ জানে না। এতে তাদের আত্মসম্মান অক্ষুণ্ণ থেকেই তাদের প্রয়োজন পূর্ণ হয়।
এছাড়াও বনানীর কড়াইল বস্তিতে ৩০টির বেশি বেশি মসজিদ আছে সেসব মসজিদের ইমামরা আমার সাথে যোগাযোগ করে। পরে আমার কিছু ডেডিকেটেড বন্ধু রাতে মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে খাবার পৌঁছে দিয়ে আসে।
-এটি