মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী।।
দেশের জামে মসজিদসমূহে মহামারীর কারণে মুসল্লি সমাগম নিষিদ্ধ। মসজিদের বাইরেও জনসমাগম নিষিদ্ধ। অতএব সাধারণ মানুষের জন্য আজ জুমা ওয়াজিব থাকে না।
নিজ ঘরে বাড়িতে ফ্ল্যাটে ছাদে উঠানে গ্রাম পাড়া বা মহল্লার কোনো মাঠে কোথাও মুসল্লী সমাগম করে জুমা পড়া ঠিক হবে না। কারণ সত্যি সত্যিই আমরা সবাই এখন করোনা ভাইরাস সমস্যার সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ষষ্ঠ সপ্তাহে প্রবেশ করেছি। আগামী চারটি সপ্তাহ বেশী ভয়াবহ। যে কারণে মসজিদে নামমাত্র জামাত ও জুমার ব্যবস্থা করতে হয়েছে, সে কারণেই বাইরেও মুসল্লি সমাগম এড়িয়ে চলতে হবে।
জুমা ওয়াজিব থাকে না কিংবা জুমার গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্য থাকেনা, এমন জুমা না পড়ে মূল নামাজ জোহর পড়তে হবে।
অপারগতা ও নিষেধাজ্ঞা থাকায় ঘরে নামাজ পড়েও আগ্রহীরা জুমা ও জামাতে নামাজ পড়ার সওয়াব পাবেন ইনশাআল্লাহ।
কারো অধিক যোগ্যতা এবং ইজতিহাদের সক্ষমতা থাকলে নিজের মাসআলার ওপর আমল করবেন। সবাইকে আমাদের পর্যবেক্ষণ মানতে বলি না। এ ক্ষেত্রে সুযোগ্য ফিকাহবিদ ও ফতওয়া বিশারদগণের নানা মত থাকাও বিচিত্র নয়। তবে এসবই ইলমী আলোচনা সাপেক্ষ এবং আপেক্ষিক তত্ত্ব। সাধারণের বিতর্ক বা আলোচনার বস্তু নয়।
এ সংকট সাময়িক ও অভূতপূর্ব। এর উদাহরণ অতীতে পাওয়া যায় না। এটি মহামারী না জীবাণু অস্ত্র সেটাও পরিষ্কার হতে সময় লাগবে। মুসলিম অমুসলিম সবাই কমবেশি আক্রমণের শিকার। বাংলাদেশেও দেশব্যাপী আক্রমন ও মৃত্যুর ঘটনা শোনা যাচ্ছে। এখানে ধারণা কল্পনা আবেগ অজ্ঞতা বা অসঙ্গত কথা কিংবা আচরণ বাদ দিয়ে আমাদের মান্য ও বিশ্ববরেণ্য উলামায়ে কেরামের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমল করতে হবে। বিপদ দূর হয়ে গেলে আবার সব স্বাভাবিক নিয়মে ফিরে আসবে।
কোথাও যদি ইজনেআম, দশের কম মুসল্লি, যোগ্য খতীব ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা নীতি অনুসরণ করে জুমার সুযোগ থাকে, তাহলে কি করনীয়। এভাবে জুমা পড়ার চেয়ে জোহর পড়ে নেওয়া উত্তম। কেননা জুমা ঘরে ঘরে বা জায়গায় জায়গায় পড়া শোভনীয় নয়। এমনটি মেযাজে শরীয়তের খেলাফ কাজ। জুমার হুকুম জারি রাখার জন্য মসজিদে তো সীমিত আকারে জুমা পড়া হচ্ছেই। বাকি সব মুসল্লি বিপদের সময়টিতে ঘরে জোহর পড়ে নিবেন।
লেখক: মহাপরিচালক, ঢাকা সেন্টার ফর দাওয়াহ রিসার্চ এন্ড কালচার
-এএ