যুবাইর আহমাদ তানঈম
কোভিড-১৯, যা করোনাভাইরাস নামে পরিচিত। এটি সাম্প্রতিক সময়ে গণমাধ্যমের শিরোনামগুলোতে প্রাধান্য বিস্তার করেছে। চীনের উহান থেকে শুরু হয়ে এরই মধ্যে ১৭০টির বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস। এই ভাইরাসের সংক্রমণে বিশ্বব্যাপী প্রাণহানি ঘটেছে ৭৫ হাজারের বেশি মানুষের। দিনদিন এই লাশের মিছিল বাড়ছে বৈ কমছে না।
করোনাভাইরাস এমন একটি সংক্রামক ভাইরাস, যা এর আগে কখনও মানুষের মধ্যে ছড়ায় নি। এই রোগের প্রধান লক্ষণ হলো: জ্বর, কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যাথা, শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা। সাধারণত শুষ্ক কাশি ও জ্বরের মাধ্যমেই শুরু হয়, পরে শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা দেখা দেয়। এটি ফুসফুসে আক্রমণ করে। যার ফলে আক্রান্ত রোগী একটু অক্সিজেন গ্রহণের আকুতি নিয়ে কুঁকিয়ে কুঁকিয়ে মরে।
এই রোগের উপসর্গগুলো প্রকাশ পেতে গড়ে পাঁচদিন সময় নেয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ভাইরাসটির ইনকিউবেশন পিরিয়ড ১৪দিন পর্যন্ত স্থায়ী থাকে। তবে কিছু কিছু গবেষকের মতে এর স্থায়িত্ব ২৪দিন পর্যন্ত থাকতে পারে।
এই হলো করোনাভাইরাসের সংক্ষিপ্ত পরিচয়। এবার ভাইরাসটির মন্দ দিক এবং ভালো দিক সম্পর্কে আলোচনা করা যাক। প্রশ্ন জাগতে পারে, করোনাভাইরাসের আবার ভালো দিক আছে নাকি? আমি বলবো, আছে। তাহলে সেগুলো কী? সামনে তার ছোট্ট একটি বিবরণ আসছে।
ভালো ও মন্দের দিকগুলো আলোচনা শেষে এই মুহূর্তের করণীয় সম্পর্কে একটু আলোচনা করবো। আশা করি এতে আমার নিজের কিছুটা উপকার হবে। আপনাদের যদি হয়, তাহলে তা 'নূরুন আলা নূর' অর্থাৎ সোনায় সোহাগা বলে ধরে নিবো।
করোনাভাইরাসের এপিঠ
প্রথমে করোনাভাইরাসের মন্দ দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করা যাক।
করোনাভাইরাসের মন্দ প্রভাব সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। এর জন্য গবেষণা করে নতুন কিছু বলার নেই। তারপরও কিছু বিবরণ দেই।
১. করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত সারাবিশ্বে ৭৫ হাজারের মতো মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। সবচেয়ে বেশি প্রাণ হারিয়েছে যে সব দেশ, সেগুলো যথাক্রমে: ইতালি, স্পেন, চীন, ফ্রান্স, ইরান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ইত্যাদি ইত্যাদি। ওই সব দেশগুলোতে প্রতি ঘণ্টায় ঘণ্টায় লাশের মিছিল বের হয়। মুহুর্মুহু করে বাড়ছে এই মিছিলযাত্রা। আমাদের বাংলাদেশও এর থেকে খালি নেই। সরকারি হিসাব মতো এখন পর্যন্ত ৫ জন মারা গেছে। তবে প্রকৃতপক্ষে কতজন মারা গেছে, তা অজানাই থেকে গেল। মৃত্যুর এই মিছিল আরও কতদিন জারি থাকবে, তা একমাত্র আল্লাহই জানে।
২. পৃথিবীর মেরুদণ্ড প্রায় ভেঙে গেছে। অচল হয়ে গেছে মৌলিক অনেকগুলো ক্ষেত্র। অর্থনৈতিক ধ্বস নেমে এসেছে; যেহেতু অফিস, আদালত, কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। খাদ্য সংকট দেখা দিতে যাচ্ছে; যেহেতু নতুন করে কৃষিজাত পণ্য আমদানি ও রপ্তানির সুযোগ হচ্ছে না। প্রয়োজনীয় অনেক উপকরণের অভাব পড়ে যাচ্ছে; যেহেতু যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। চিকিৎসাক্ষেত্র বিষয়ে আর না-ই-বা বললাম।
৩. মানুষ একপ্রকার বন্দি হয়ে গেছে। গৃহবন্দি হয়ে অসহায়ের মতো অস্থির দিন কাটাচ্ছে। যাকে লকডাউন বলে। এতে চলাফেরা সহ সবকিছুর উপর অটোমেটিক কন্ট্রোল চলে এসেছে। এখন চাইলেই আর সামাজিক যোগাযোগ রক্ষা বা প্রীতিসাক্ষাত করা সম্ভব হচ্ছে না। যা মানবজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলছে।
এছাড়া আরও অনেকগুলো মন্দ দিক আছে। এখানে মৌলিক কিছু দিক তুলে দেওয়া হয়েছে মাত্র।
করোনাভাইরাসের ওপিঠ
করোনাভাইরাসের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে আলোচনা শেষে এবার ভালো দিক নিয়ে কিছু বলি। শুনতে বেখাপ্পা লাগলেও আসলেই ভালো অনেক দিক আছে। সৃষ্টিজগতের প্রতিটা ক্ষেত্র একটু রহস্যপূর্ণ করেই আল্লাহ তা'য়ালা সাজিয়েছেন। ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করলে হয়রান হয়ে যেতে হয়। তবে হ্যাঁ, যিনি এসবের কারিগর, তিনি অনেক ক্ষমতাধর। তাঁর সবকিছু আমাদের বুঝে আসে না। তবে তিনি যা করেন, ভালোই করেন এবং নিশ্চয় কোনো না কোনো উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই করেন।
করোনাভাইরাসের কিছু ভালো দিক:
১. করোনাভাইরাসের প্রভাবে অশ্লীলতা কমে গেছে। মদ, গাজা, নাইট ক্লাব, অন্যায়, অবিচার-সহ অনেক কিছু কমে গেছে। সবার মনে একপ্রকার ভয় ঢুকে গেছে। না জানি কখন ভাইরাস আক্রমণ করে বসে! যার ফলে এমনটা হয়েছে।
২. ইসলামের সত্যতা ও মহত্ত্ব আবারও পৃথিবীর অধিবাসীদের নিকট স্পষ্ট হয়েছে। মার্কিন গবেষক আজ অকপটে বলে যায়, ১৩০০ বছর আগে ইসলামের নবী যা বলেছেন, এতেই মানবজাতির জন্য মুক্তির পয়গাম নিহিত। যখন পৃথিবীতে উন্নত কোনো চিকিৎসা-ব্যবস্থা ছিল না, তখন নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষদের উদ্দেশ্যে যা বলেছেন, এটাই আজকের আধুনিক চিকিৎসা। করোনা-সহ সব ধরণের ভাইরাস থেকে মুক্তি ও সুরক্ষার সুন্দর সমাধান ইসলামের নবীর সুন্নতে রয়েছে। হ্যাঁ, শুধু তাই নয়, পৃথিবীর বড় বড় ক্ষমতাধর শাসকগণ আজ তাদের প্রজাদেরকে ইসলামি অনুশাসন অনুযায়ী চলার পরামর্শ দিচ্ছেন। এটা করোনাভাইরাসের কারিশমা।
৩. করোনা ভাইরাসের কারণে মানুষ লকডাউন নামক গৃহবন্দি হয়ে গেছে। এতে লাভও কিন্তু অনেক আছে। এই লকডাউনের কারণে পরিবারের সাথে সুন্দর সময় কাটানোর সুযোগ হয়েছে। কর্মব্যস্ত মানুষগুলো আজ তাদের মা-বাবা, স্ত্রী-সন্তান, আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে বেশ সময় কাটাতে পারছে। এতে পারস্পরিক সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
৪. বিজ্ঞানীদের মতে আগামী একবছরে করোনা-বিপর্যস্ত মানুষ, দফায় দফায় গৃহবন্দি থাকা মানুষের কারণে পৃথিবীর দূষণ কমে যাবে প্রায় ৪৫% ! পরিবেশ ফিরে যাবে ৫০০ বছর আগে, বিশুদ্ধতার নিরিখে। মাস’ছয়েকের মধ্যে কমতে থাকবে হিমবাহের গলন, বন্ধ হয়ে যাবে বছরখানেকের মধ্যে। কমবে ক্যানসার, কিডনী, শ্বাসযন্ত্র ও অন্যান্য দূষণজনিত রোগ। বনের পশু ফিরে পাবে তাদের নিরাপদ অভয়ারণ্য। সামুদ্রিক প্রাণী বিশুদ্ধ জল পেয়ে মনের আনন্দে ছুটে বেড়াতে পারবে। সদ্য পাওয়া খবরে জানা গেছে, পর্যটকশূণ্য হয়ে যাওয়াতে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে ডলফিনের আনাগোনা বেড়ে গেছে। ওরা মনের আনন্দে খেলে বেড়াচ্ছে। এসব হচ্ছে দোষণমুক্ত সামুদ্রিক পরিবেশের প্রভাবে।
এছাড়া আরও অনেক ভালো দিক আছে। এখানে মৌলিক কিছু দিক তুলে ধরা হয়েছে মাত্র।
করোনাভাইরাসের এপিঠ ওপিঠ বিষয়ক আলোচনা শেষে এবার এই মুহূর্তের করণীয় সম্পর্কে কথা বলা যাক। আশা করি এতে সবার ফায়দা হবে।
করোনাভাইরাসের পিছনে কী রহস্য লুকিয়ে, এই বিষয়ে এখন নানা জল্পনাকল্পনা চলছে। অনেকে মনে করেন, এটি চীনের ল্যাবরেটরি থেকে তৈরি ভাইরাস। চীন সারা বিশ্বে তাদের একক রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করার জন্য কৌশলে এই ভাইরাস ছড়িয়ে দিয়েছে।
কথাটা কতটুকু সত্য বা কতটুকু মিথ্যা - এই বিষয়ে তদন্ত করার সুযোগ এখন পর্যন্ত কারও হয় নি। তবে এটি যে মানুষের কর্মফল, এতে কোনো সন্ধেহ নেই। আল্লাহ পাক কুরআনুল কারীমে ইরশাদ করেছেন, "যাহারাল ফাসাদু ফিল বার্রি ওয়াল বাহরি বিমা কাসাবাত আইদিন নাস" অর্থাৎ জলে এবং স্থলে যেসব বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটে, এগুলো সব মানুষের হাতের কামাই। তাই বলা যায়, এটি একটি গজব। মানুষের অপকর্মের কারণেই এই গজব এসেছে।
প্রযুক্তিতে সেরা পৃথিবীর ক্ষমতাধর মানুষগুলো আজ করোনার কাছে অসহায়। কিছুদিন আগেও যারা নিজেদের ক্ষমতা নিয়ে বড়াই করে বেড়াতেন, আজ তাদের ক্ষমতা এই ভাইরাসের কাছে এসে অসহায় হয়ে পড়েছে।
চারদিকে লাশের মিছিল। প্রিয়হারা মানুষের কান্নায় ভারি হয়ে উঠছে আকাশ বাতাস। বোবা নীরবতায় ছেয়ে গেছে বন্দি মানুষের ক্ষতবিক্ষত মন। মনের সুখের জায়গায় বসত গড়ছে এলোমেলো দুশ্চিন্তা। দূরের সুজন-স্বজনের মায়ায় হঠাৎ ভেঙে যাচ্ছে গভীর নিদ্রা। কী হবে আগামীকাল? আগামী সপ্তাহে? বাধ্য হয়ে সবাই এখন বলে, আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ ছাড়া এর থেকে পরিত্রাণের উপায় নেই।
সত্যি, আল্লাহর অনুগ্রহ ছাড়া এর থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় নেই। প্রশ্ন হলো, আল্লাহর অনুগ্রহ পেতে হলে আমাদের কী করতে হবে? কী আমল করলে আমরা এই আজাব থেকে মুক্তি পাবো? এবার এমন কতগুলো আমল সম্পর্কে জেনে নেই। ও হ্যাঁ, একটু আগেও বলে এসেছি, বর্তমান বিজ্ঞান অকপটে স্বীকার করে নিয়েছে, করোনাভাইরাস থেকে মুক্তির উপায় একমাত্র সুন্নতে নববীর মধ্যে রয়েছে। নীচে সেই সব সুন্নতে নববী এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় করোনা থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়গুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:
১. ভালো করে হাত ধোয়া। সাবান দিয়ে হলে ভালো। হাত ধোয়ার ব্যাপারে তাগিদ দেওয়া এটা নতুন না। আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দেড় হাজার বছর আগে বলে গেছেন, তোমরা প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে সর্বপ্রথম উভয় হাত ভালোভাবে ধুয়ে নিবে। সময়ে সময়ে হাত ধোয়ার ব্যাপারেও নবীজি অনেক হাদিসে তাগিদ দিয়েছেন। যেমন অন্য এক হাদিসে নবীজি বলেছেন, খাওয়ার আগে এবং পরে হাত ধোয়ার মধ্যে বরকত রয়েছে। তাই হাত ধোয়ার ব্যাপারটা সুন্নতের নিয়তে মানলে ডবল লাভ হয়ে যাবে।
২. সর্বদা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা। এর জন্য সবচেয়ে বড় সহায়ক হচ্ছে ওজু করা। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের জন্য ওজু করলে এমনিতে পরিষ্কার থাকা হয়ে যায়। এছাড়াও সময়ে সময়ে ওজু করা। তাহলে আশা করা যায়, করোনাভাইরাস সংক্রামণ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। দেখুন, পরিষ্কার থাকার বিষয়েও একটি প্রসিদ্ধ হাদিস আছে, সেটা হলো - 'পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ'। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দেড় হাজার বছর আগে যা বলেছেন, তাতে কত বড় একটি ভাইরাসের শেফা লুকিয়ে আছে, ভাবতে বসলে ঈমান বৃদ্ধি পায়!
৩. হাঁচি বা কাশি দেওয়ার সময় মুখ ঢেকে রাখতে হবে। এটাও নবীজির সুন্নত। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সংবরণ হয়ে হাঁচি এবং কাশি দিতে বলেছেন।
৪. বিনা প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়া যাবে না। হোম কোয়ারান্টাইনে থাকতে হবে। এই হোম কোয়ারান্টাইনের প্রবর্তক ইসলামের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। মার্কিন গবেষক কথাটি অকপটে স্বীকার করেছেন। নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক হাদিসে বলেছেন, যখন কোনো এলাকায় মহামারি ছড়িয়ে পড়বে, তখন তোমরা সেখানে যাবে না। এবং যারা সেখানে আছে, তারাও ওখান থেকে বের হবে না। উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু এর যুগে এই হাদিসের উপর আমলের ঘটনা বেশ প্রসিদ্ধ।
৫. সময় মতো নামায আদায় করা। সময় মতো নামায আদায় করলে আল্লাহর রহমতে জোয়ার উঠবে। এতে ভাইরাস থেকে মুক্তি মিলবে।
৬. বেশি বেশি দান সদকা করা। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, দান-সদকা করার দ্বারা বালা-মুসিবত দূর হয়। এই মুহূর্তে করোনাভাইরাসের চেয়ে বড় মুসিবত খুব কম আছে। তাই দান সদকায় মনযোগী হওয়া উচিৎ।
৭. "লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জালিমিন" - আয়াতটি বেশি বেশি পড়া। এটি একটি বেশ কার্যকরী আমল। হযরত ইউনূস আলাইহিস সালাম এই দোয়ার মাধ্যমে মাছের পেট থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিপদে-আপদে এই দোয়াটি পড়তে বলেছেন।
৮. "আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল বারাসি, ওয়াল জুনুনি, ওয়াল জুযামি, ওয়া মিন সাইয়িইল আসকাম" - দোয়াটি সময়ে সময়ে পড়া। মহামারি, কুষ্ঠরোগ, মস্তিষ্কবিকৃতি-সহ বড় বড় মুসিবত থেকে বাঁচার ক্ষেত্রে বেশ উপকারী আমল এটি। হাদিসের বহু কিতাবে এর সম্পর্কে আলোচনা এসেছে।
৯. কোনো কিছু খাওয়া বা কোনো কিছু ব্যবহারের আগে এবং সকাল-সন্ধায় নিয়মিত "বিসমিল্লাহিল্লাযি লা ইয়াদুররু মাআসমিহি শাইয়ুন ফিল আরদি ওয়ালা ফিস সামায়িই ওয়া হুয়াস সামিউল আলিম" দোয়াটি পড়া। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, এই দোয়াটি পড়লে পৃথিবীর কোনো কিছু তার ক্ষতি করতে পারবে না।
১০. "আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফিয়াতা ফিদ-দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ" এবং "আল্লাহুম্মা আসআলুকাল আফওয়া ওয়াল আফিয়া ফি দিনি ওয়া দুনিয়ায়ি ওয়া আহলি ওয়া মালি, আল্লাহুম্মাসতুর আওরাতি ওয়া আম্মিন রাওআতি, আল্লাহুম্মাহ-ফাজনি মিম বাইনি ইয়াদাইয়া ওয়া মিন খালফি ওয়া আন ইয়ামিনি ওয়া আন শিমালি ওয়া মিন ফাউকি, ওয়া আউযুবি আজামাতি মিন আনিগতালা মিন তাহতি।" সকাল এবং সন্ধায় এই দোয়াগুলো পড়া।
এই দশটা বিষয় খেয়াল রাখলে আশা করি করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পাবো। আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে করোনাভাইরাস-সহ সর্বপ্রকার বালা-মুসিবত থেকে হেফাজত করুন। আমিন।
করোনাভাইরাস। একটা সময় আল্লাহ তা'য়ালা এই ভাইরাস উঠিয়ে নিয়ে যাবেন। যাবেনই। ইনশাআল্লাহ। কিন্তু যাদের কারণে এসেছে এ-গজব, তারা কি সতর্ক হবে? শিক্ষা নেবে? আগামীদিনের পৃথিবীকে থাকতে দেবে কি বসবাসযোগ্য শঙ্কামুক্ত, অন্যায় রক্তপাতমুক্ত? ফিরে আসবে কি পথহারা বিপথগামীরা সুপথে? সুন্দরের পথে? সুশাসনের আঙিনায়? আল্লাহর নতুন গজব নইলে হয়তো হবে আরও ভয়াবহ। আরও প্রলয়ভীষণ।
লেখক, ঐতিহাসিক গ্রন্থ প্রণেতা
-এটি