মাওলানা আরশাদ মাদানি।।
জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের প্রধান মাওলানা আরশাদ মাদানি এক বিবৃতিতে নিজামুদ্দিন তাবলিগ মারকাজকে কেন্দ্র করে মিডিয়াতে নেতিবাচক প্রচারের প্রসঙ্গে বলেন, এমন এক সময়ে যখন পুরো দেশই নয় বরং গোটা বিশ্ব করোনা ভাইরাসের মতো ধ্বংসাত্মক ব্যাধির বিরুদ্ধে এক হয়ে লড়াই করছে। তখন এই লড়াইকে সাম্প্রদায়িক রূপ দেয়া অত্যন্ত হতাশাজনক এবং নিন্দনীয় বিষয়।
গতকাল মঙ্গলবার এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, হঠাৎ লকডাউনের কারণে যদি কিছু মানুষ মারকাজে আটকা পড়ে যায় এবং তাদের মধ্যে কেউ কেউ এই মহামারিতে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। তাহলে এতে এমন মহা কিছু হয়ে যায়নি। বরং এখন উচিত হলো,তাদের জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। মাওলানা মাদানি আরও বলেছেন, হঠাৎ লকডাউনের ঘোষণা হওয়ায় পুরো দেশে কয়েক লক্ষ মানুষ বিভিন্ন স্থানে আটকা পড়েছে।
শুধু দিল্লিতেই নয় বরং অন্যান্য শহরগুলোতেও এরূপ দৃশ্য আমরা স্বচক্ষে দেখেছি। বহু মানুষ এই অসহায় অবস্থায় লকডাউন ভেঙে যে কোনওভাবে তাদের বাড়িতে ফিরে যেতে মরিয়া হয়ে আছে। এই নাজুক মূহুর্তে যদি কিছু মানুষ মারকাজে আটকা পড়ে যায় তাতে আইন ভাঙার মতো কিছুই হয়নি।
তিনি আরো বলেন, লকডাউন ঘোষণার সময় প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন, যে যেখানে আছেন সেখানেই থাকুন। বাইরে বেরুবেন না। তাছাড়া এই বিষয়টিও জানা গেছে যে মারকাজের জিম্মাদারগণ বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং এজেন্সিগুলিকে লিখিতভাবে জানিয়েছিল এমনকি কিছু লোককে তাদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি চেয়েছিল।
তাই কোনভাবেই মারকাজকে দায়বদ্ধ করা উচিত হবে না। এতকিছুর পরও দেশটির গণমাধ্যম পরিস্থিতিকে একপেশে উপস্থাপন করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার বিপজ্জনক ষড়যন্ত্র করছে।
এই সাম্প্রদায়িক ট্র্যাজেডিকে করোনার ভাইরাসের চেয়েও বড় হুমকি বলে উল্লেখ করে মাওলানা মাদানী বলেছেন, সরকারের জন্য এখন শুধু নোটিশ গ্রহণ করা উচিত নয় বরং তাৎক্ষণিকভাবে মুসলমানদের বিরুদ্ধে এই অপপ্রচার চালানো বন্ধ করা উচিত।
কারণ আল্লাহ না করুন এই জাতীয় প্রোপাগান্ডা যদি দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ক্ষতি করে তাহলে এখন যেমন জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে মহামারীটির বিরুদ্ধে লড়াই করছে সেটি দূর্বল হয়ে পড়বে। তিনি আরো বলেছেন যে, জামাতের লোকেরা যদি কোনরকম অসুস্থতা অনুভব করে তাহলে নির্দ্বিধায় নিজের চিকিৎসার আবেদন করবে।
এই দুঃসময়য়ে অসুস্থদের চিকিৎসা করার জন্য এবং যারা যে কোনও ধরণের সমস্যায় ভুগছেন তাদেরকে সম্পূর্ণরূপে সহযোগিতা করার জন্য দিল্লি সরকার ও প্রশাসনের কাছেও তিনি আবেদন জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে, অবশ্যই দিল্লী প্রশাসনের এই ভুল স্বীকার করে নেয়া উচিত যে যখন করোনা সম্পর্কে সমস্ত তথ্য তাদের কাছে ছিল তখন কেন কোনও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।?
তিনি প্রশাসনের কাছে এই প্রশ্ন করেছেন, লকডাউনের কারণে যারা কেন্দ্রের ভিতরে আটকা পড়েছিলেন মারকাজের জিম্মাদারগণের কি তাদের তুলে নিয়ে রাস্তায় ফেলে দেয়া উচিত ছিল? তাদেরকে কেন্দ্রে রাখা এবং বাইরে বের হতে না দেওয়া ছাড়া ভিন্ন বিকল্প ছিলো না এবং মারকাজ এটাই করেছে।
মাওলানা মাদানী বলেন, যে তাবলিগ জামায়াতের আলোচনা অনুষ্ঠান ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে সেখানে লোক সমাগম হয়েছিলো। এর কিছু কিছু রাজনৈতিক নেতাদের পৃষ্ঠপোষকতায় অনুষ্ঠিত হয়েছে এখন নিজামুদ্দিন মারকাজের জিম্মাদারদের বিরুদ্ধে যদি এফআইআর করা হয় তাহলে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও এফআইআর হওয়া উচিত। কারণ তাদের করণে লকডাউনের আদেশের পরেও রাজধানীসহ বিভিন্ন জায়গায় লাখো শ্রমিক জড়ো হয়েছিল।
আল্লামা আরশাদ মাদানীর অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজ থেকে
-এটি