রফিকুল ইসলাম জসিম: প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দেশজুড়ে সব ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ করেছে সরকার। কিন্তু তা সত্ত্বেও জনসমাগম করেছেন মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের শমশেরনগর চা বাগানে নারী চা শ্রমিকদের জমায়েত করে ইউপি চেয়ারম্যান ও সম্ভাব্য এক সদস্য প্রাথী সহ সহস্রাধিক সাবান, মাস্ক ও তোয়াল বিতরণ করেছেন।
আজ বুধবার সকালে শমশেরনগর চা বাগানের একটি প্লান্টেশন এলাকায় ইউপি চেয়ারম্যান মো. জুয়েল আহমদ ও সম্ভাব্য সদস্য প্রার্থী দিপালী রেলী এসব সামগ্রী বিতরণ করেন। নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও এমন জনসমাগম নিয়ে অনেকেই বিরূপ মন্তব্য করেছেন। অনেকেই এটিকে অসচেতন কাণ্ড বলেও মন্তব্য করেছেন।
চা বাগানের ৩ নম্বর সেকশনের কর্মরত নারীদের জমায়েত করে আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সংরক্ষিত নারী আসনে সদস্য প্রার্থী দিপালী রেলী নিজ অর্থায়নে ৪০০ মাস্ক, তোয়ালে ও লাইফবয় সাবান বিতরণ করেন। একই সাথে শমশেরনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. জুয়েল আহমদও নিজ অর্থায়নে তার সহকর্মীদের নিয়ে জমায়েত করে ৮০০ নারী চা শ্রমিকদের লাইফবয় সাবান বিতরণ করেন। ইউপি চেয়ারম্যান জমায়াতে উপস্থিত নারী চা শ্রমিকদের উদ্দেশ্য্যে স্বাস্থ্য সচেতনতার্মূলক বক্তব্য দেন। এসময় শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির একজন উপ-পরিদর্শক উপস্থিত থেকে বিতরণ অনুষ্ঠানে সচেতনতামূলক বক্তব্য রাখেন।
আগামী ইউনিয়ন পরিষদে নারী সদস্য প্রার্থী দিপালী রেলী সাবান, মাস্ক ও তোয়ালে বিতরণের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, চা বাগানের নারী শ্রমিকরা স্বাস্থ্য অসেচতন। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় তারা কাজ করলেও নিজের স্বাস্থ্য সু-রক্ষা সম্পর্কে কিছুই জানে না। চলমান ভয়াবহ করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রাথমকিভাবে তাদের মাস্ক পরিধান করতে হবে, সাবান দিয়ে হাত মুখ ধৌত করতে হবে। ও পরিষ্কার তোয়ালে দ্বারা হাম মুখ মুছতে হবে। তাই তিনি ৪ শথাধিক নারী শ্রমিকের মাঝে সাবান, মাস্ক ও তোয়ালে বিতরণ করেছেন।
লোক সমাগম করে এসব বিতরণ সরকারি নির্দেশনার লঙ্গন স্বীকার করে দিপালী রেলী বলেন, তাদের বিতরণ অনুষ্ঠানে ইউপি চেয়ারম্যান ও একজন পুলিশ কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। তারাওতো এসব বিতরণ করেছেন।
সরকারি নির্দেশনা লঙ্গন করে নারী চা শ্রমিকদের জমায়েত করে সাবান বিতরণের সত্যতা স্বীকার করে গণ-মাধ্যমকর্মীদের ইউপি চেয়ারম্যান মো. জুয়েল আহমদ বলেন, আসলে এসময়ে নারী চা শ্রমিকরা প্লান্টেশন এলাকায় কাজে ছিলেন। এ সুযোগে সেখানে গিয়ে তাদের নিয়ে স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক বক্তব্য দিয়েই সাবান বিতরণ করেছেন। তবে নারী চা শ্রমিকদের সংখ্যা তিনি জানাননি। তিনি আরও বলেন, তাদের সাথে একজন পুলিশ কর্মকর্তাও ছিলেন।
শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ অরুপ কুমার চৌধুরী বলেন, আসলে নারী চা শ্রমিকদের সচেতন করতেই সাবান, মাস্ক ও তোয়ালে বিতরণ করা হয়েছে। এই বিতরণের কথা শুনে নারী চা শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতায় কিছু কথা বলা যাবে ভেবেই একজন উপ-পরিদর্শক সেখানে গিয়েছিলেন।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, এভাবে নারী শ্রমিকদের জমায়েত করে মাস্ক, সাবান ও তোয়ালে বিতরণ সরকারি নির্দেশনার লঙ্গন। এভাবে তিনজনের অধিক সমাগম করে সাবান, মাস্ত ও তোয়ালে বিতরণ করা উচিত নয়। প্রয়োজনে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিতরণ করতে পারতেন। বিষয়টি তিনি খতিয় দেখবেন বলেও জানান।
-এটি