ইউসুফ মুলতান: সপ্তাহ দুয়েক আগে ছেলের (৬ বছর) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানাতে চাইলেন। বললেন, সে অন্য এক বাচ্চাকে মেরেছে। আমি জানতে চাইলাম, তারপর? বললেন, তিনি তাকে স্বীকার করতে বলেছেন, স্যরি বলে কোলাকুলি করতে বলেছেন।
আমি বললাম, ভালো তো, সে কি করেছে? তিনি বললেন, সে টেবিলের নিচে গিয়ে পালিয়েছে। পরে তিনি তাকে বলেছেন, তুমি ওভাবেই থাকো, আমরা চলে গেলাম। এটা শুনে সে বের হয়ে স্যরি বলেছে, ওই বাচ্চার সঙ্গে কোলাকুলি করেছে।
আমি ব্যাপারটায় মজা পেলাম, ধন্যবাদ দিলাম। জানতে চাইলাম, আমাদের এখন কী করণীয়?
তিনি বললেন, বাসায় অভ্যাস করাতে যেন ভাই-বোনের মধ্যে ঝগড়া হলে একে অপরকে স্যরি বলে, স্বীকার করে নেয় এবং মিলে যায়। এই বয়সে মন নরম থাকে। স্যরি বলা ও ভুল স্বীকার করার অভ্যাস না গড়ে তুললে বড় হয়ে মন শক্ত হয়ে যাবে, তখন আর হয়ে উঠবে না।
খুব গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। শৈশবে কিছু শেখানো পাথরে খোদাই করার মতোই।
বাসায় এসে বাচ্চাদের সঙ্গে আলাপে এই নতুন পলিসি ঘোষণা করা হলো। ঝগড়া করা যাবে, কিন্তু যে অন্যায় করবে, তাকে স্বীকার করতে হবে, স্যরি বলতে হবে, এবং কোলাকুলি করে মিলে যেতে হবে।
আলহামদুলিল্লাহ প্রায় সপ্তাহখানেক পর শিক্ষক জানালেন, সে এখন স্যরি বলে এবং স্বীকার করে।
আমাদের পরিবার, সমাজ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আমাদেরকে ভুল করে ক্ষমা না চাইতে শেখায়, ভুল স্বীকার করাকে লজ্জা হিসেবে দেখায়। এতে আমরা ক্রমান্বয়ে অহংকারী এবং উদ্ধত জাতিতে পরিণত হচ্ছি। নেতৃত্বের ওপর থেকে সমাজের নিচের শ্রেণী পর্যন্ত - প্রায় সব জায়গায় একই অবস্থা।
মানুষ হিসেবে আমাদের সৌন্দর্য বিনয়ী হওয়ার মাঝে। অহংকার আমাদের সৌন্দর্যকে নষ্ট করে দেয়। অহংকার তো কেবল আল্লাহ তায়ালারই সাজে, যিনি আমাদের মালিক, আমরা তো কেবল তার গোলাম।
-এটি