আওয়ার ইসলাম: শনিবার রাতে কাতারের রাজধানী দোহায় আফগান তালেবান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বহুল প্রতিক্ষিত শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের পরে, আশা করা হচ্ছে যে আফগান সরকার এবং তালেবানদের মধ্যে আলোচনার পরবর্তী পর্ব শুরু হবে।
এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্প বলেছেন, অদূর ভবিষ্যতে তিনি তালেবান নেতাদের সাথে বৈঠক করবেন, তবে বৈঠকটি কোথায় হবে তা বলেননি। তবে এ বছরের মে মাসের মধ্যে আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা মোতায়েনের সংখ্যা কমিয়ে ৫ হাজারে নামিয়ে আনা হবে।
ঐতিহাসিক এ চুক্তিতে যা আছে-
তালেবান এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সাই হওয়া চুক্তিতে চারটি মূল ক্যাটাগরি আছে বলে খবর প্রকাশ করেছে আল জাজিরা।
১. যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের বিরুদ্ধে কোন ব্যক্তি কিংবা গোষ্ঠীকে আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করতে দেয়া হবে বলে নিশ্চয়তা দিতে হবে।
২. আফগানিস্তান থেকে সব বিদেশি সেনা সরিয়ে নেয়ার টাইমলাইন ঘোষণার নিশ্চয়তা দিতে হবে।
৩. আন্তর্জাতিক সাক্ষীর উপস্থিতিতে আফগানিস্তানের মাটি থেকে সব বিদেশি সেনা সরিয়ে নেয়ার গ্যারান্টি এবং যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহৃত হতে না দেয়ার গ্যারান্টি দেয়ার পর আফগানিস্তান ইসলামিক প্রজাতন্ত্রকে (যুক্তরাষ্ট্র যাকে স্টেট হিসেবে স্বীকার করে না, বরং তালেবান হিসেবে বিবেচনা করে) আফগান সরকারের (তালেবান যাকে সরকার হিসেবে মানে না) সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে। এই আলোচনা হবে ১০ মার্চ ২০২০ থেকে; যা হিজরি ১৫ রাজ ১৪৪১।
৪. আফগানিস্তানের ভেতরকার দুই পক্ষের আলোচনায় একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা হবে। দুই পক্ষ যুদ্ধবিরতির তারিখ এবং প্রকারতা নিয়ে সিদ্ধান্তে আসবে। এছাড়া আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক রোডম্যাপ কি হবে তাও ঘোষণা করা হবে দুই পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে।
চুক্তি সই হওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্র এবং আফগান সরকারের যৌথ ঘোষণায় বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র-তালেবানের চুক্তি অনুযায়ী তালেবান যদি তাদের দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে, তাহলে আগামী ১৪ মাসের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে অবশিষ্ট সকল সৈন্য প্রত্যাহার করে নেবে যৌথবাহিনী।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১৮ বছরের যুদ্ধের ইতি টানতে শান্তিচুক্তির লক্ষ্যে সম্প্রতি সহিংসতা কমিয়ে আনতে সম্মত হয় তালেবান ও যুক্তরাষ্ট্র। ২০০১ সালে ৯/১১ হামলার পর আল কায়েদাকে উৎখাতে আফগানিস্তানে আগ্রাসন শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। এই যুদ্ধে দুই হাজার চারশোরও বেশি মার্কিন সেনা নিহত হয়েছে। দেশটিতে এখনও প্রায় ১২ হাজার সেনা রয়েছে।
আরএম/