মাওলানা মাহবুবুর রহমান
অতিথি লেখক
ফজরের নামাজ পড়ার আদায়ের পর ঘুম দেয়া অনেকের নিত্য অভ্যাস। অথচ সুন্নত হচ্ছে, ফজরের পর না ঘুমানো।’ এ সময়ে কুরআন তেলাওয়াত করবে, কিতাব পড়বে, সম্ভব হলে ভোরের স্নিগ্ধ হাওয়া গায়ে মাখবে, নতবা কাজ থাকলে কাজে বের হয়ে পড়বে। যদিও শারীরিক প্রবণতা হলো, ফজরের পর চোখেতে আপনা-আপনি ঘুম জড়িয়ে আসে।
আমাদের প্রিয় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দোয়া করতেন-
ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺑَﺎﺭِﻙْ ﻷُﻣَّﺘِﻲ ﻓِﻲ ﺑُﻜُﻮﺭِﻫَ
‘হে আল্লাহ, আমার উম্মতের জন্য দিনের শুরু বরকতময় করুন।’
বর্ণনাকারী বলেন, ‘এ জন্যই রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোনো যুদ্ধ অভিযানে বাহিনী পাঠানোর সময় দিনের শুরুতে পাঠাতেন।’
সাখর রা. ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। তিনিও তাঁর ব্যবসায়িক কার্যক্রম ভোরবেলা শুরু করতেন। এতে তাঁর ব্যবসায় অনেক উন্নতি হয় এবং তিনি সীমাহীন প্রাচুর্য লাভ করেন।’ (১)
আমাদের আকাবিররা ফজরের পর ঘুমানোকে মাকরুহ মনে করেতেন। উরওয়া ইবনু যুবাইর রহ. বলেন, যুবাইর রা. তাঁর সন্তানদেরকে ভোরবেলা ঘুমানোর ব্যাপারে নিষেধ করতেন। উরওয়া রহ. বলেন-
ﺇِﻧِّﻲ ﻟَﺄَﺳْﻤَﻊُ ﺑِﺎﻟﺮَّﺟُﻞِ ﻳَﺘَﺼَﺒَّﺢُ ﻓَﺄَﺯْﻫَﺪُ ﻓِﻴﻪِ
‘আমি যখন কারো সম্পর্কে শুনি, সে ভোরবেলা ঘুমায় তখন তার প্রতি আমি আগ্রহ হারিয়ে ফেলি।’ (২)
আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস রা. তাঁর এক সন্তানকে ভোরবেলা ঘুমাতে দেখে বলেছিলেন-
ﺃﺗﻨﺎﻡ ﻓﻲ ﺍﻟﺴﺎﻋﺔ ﺍﻟﺘﻲ ﺗُﻘﺴَّﻢ ﻓﻴﻬﺎ ﺍﻷﺭﺯﺍﻕ؟
‘ওঠো, তুমি কি এমন সময়ে ঘুমিয়ে আছ, যখন রিজিক বণ্টন করা হচ্ছে?’ (৩)
আল্লাহ তা’য়ালা যখন বরকত দেন, সেই সময়টাতে আমরা ঘুমিয়ে থাকছি। যদি জীবনে প্রাচুর্য আনতে চান, তাহলে ফজরের পর আর ঘুমাবেন না।
মহান আল্লাহ প্রত্যেককে এই বরকতময় সময়টাকে সৎভাবে কাজে লাগানোর তাওফিক দিন ও আমাদেরকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতিটি সুন্নত সঠিকভাবে আদায় করার তওফিক দিন। আমিন।
তথ্যসূত্র :
(১) আবু দাউদ :২৬০৬
(২) মুসান্নাফ ইবনু আবি শাইবা, ৫/২২২
(৩) যাদুল মাআদ : ৪৪২
আরএম/