মাহমুদুল হাসান
বিশেষ প্রতিনিধি>
দেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় ইসলামি ব্যক্তিত্ব এবং কওমি অঙ্গনের শীর্ষ তিন মনীষী আল্লামা আশরাফ আলী রহ., আল্লামা আযহার আলী আনোয়ার শাহ রহ., আল্লামা তাফাজ্জুল হক হবিগঞ্জী রহ., এদের স্মরণে কিশোরগঞ্জের ভৈরবের ইমাম ও উলামা পরিষদের আয়োজনে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ভৈরবপুর উত্তর পারাস্থ ফাতেমা রমজান প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এ আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল বিকেল ৫টায় শুরু হয়ে রাত ৯টা ৩০ মিনিটে শেষ হয়েছে।
আলোচনা সভায় হাফেজ মাওলানা জামালুদ্দীনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসবে ছিলেন- কিশোরঞ্জ আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার মুহাদ্দিস মাওলানা ইমদাদুল্লাহ। প্রধান আলোচক হিসেবে ছিলেন- জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়ার সিনিয়র মুহাদ্দিস মাওলানা মামুনুল হক।
এতে বক্তারা বর্ষীয়ান এই তিন আলেমের নানান দিক সম্পর্কে আলোচনা করেন। তাদের কর্মযজ্ঞ ও কর্মতৎপরতার বিষয়গুলো এবং বাতিল বিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে তাদের কঠোর অবস্থানের কথাগুলো তুলে ধরেন।
[caption id="attachment_175956" align="aligncenter" width="300"] বই কিনতে ক্লিক করুন[/caption]
মাওলানা মামুনুল হক বলেন, আমাদের বড়রা একে একে চলে যাচ্ছেন তাই বলে আমাদের হতাশ হলে চলবে না বরং তারা যে আদর্শের বাস্তবায়ন করার জন্য, যে মিশন বাস্তবায়ন করার জন্য মৃত্যু পর্যন্ত চেষ্টা করে গেছেন। সে মিশন বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে নিজেকে প্রস্তুত রাখা, জীবন বাজি রেখে কাজ করে যাওয়া। এর দ্বারাই বড়রা কবরে শান্তি পাবেন, তাদের শ্রম সার্থক হবে।
এসময় আল্লামা আশরাফ আলী রহ. এর সাথে মহব্বতের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন আল্লামা মামুনুল হক।
এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশে কওমি মাদরাসা শিক্ষার হাতেখড়ি যাদের হাতে তারা ছিলেন তাদের অন্যতম। আমাদের মাথার উপর এক বিশাল ছায়াবৃক্ষ হিসাবে ছিলেন। তাদের চলে যাওয়া মানে ইলমের আকাশ থেকে কয়েকটি উজ্জল নক্ষত্র খসে পড়া।
আমরা যেভাবে জীবিত থাকতে তাদেরকে হাদিয়া পাঠাতাম এখনতো তারা মারা গেছেন তাদেরকে আমরা হাদিয়া পাঠাতে পারবো না। তবে তার চেয়ে বেশি মূল্যবান তাদের জন্য বেশি উপকারী অর্থাৎ আমরা তাদের জন্য দোয়া করতে পারি এটা আমাদের কর্তব্য।
তিনি আরও বলেন, আমরা মৃতদের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি না করি। আমাদের বাড়াবাড়ির কারণে ফেরেশতাদের নিকট তাদের জবাবদিহি করতে হয়। মৃতরা এ সমস্ত বাড়াবাড়ির জন্য কষ্টের সম্মুখীন হন।
পরিশেষে আশরাফ আলী রহ. এর শেষ ওসিয়ত হেফাজতে ইসলামের খতমে নবুওয়তের আন্দোলনের সমর্থের কথা বলে তার বক্তব্য সমাপ্ত করেন।
আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে আলোচক হিসবে উপস্থিত ছিলেন- জামিয়া ইমদাদিয়ার মুহমতামিম, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ এর সহ-সভাপতি মাওলানা শাব্বির আহমাদ রশিদ, জামিয়া বাইতুল ফালাহের নায়েবে মুহতামিম মাওলানা জালালুদ্দিন আহমাদ, আল্লামা তাফাজ্জুল হক হবিগঞ্জীর সাহেবজাদা মাওলানা তাফহিমুল হক, আলা জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার প্রধান মুফতি ওমর আহমাদ, বাংলাদেশ কওমি কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মাওলানা মোহাম্মদ আবদুস সামাদ,বাজিতপুরের ইমামা ও উলামা পরিষদের সভাপতি মাওলানা আব্দুল আহাদ।
জামিয়া রাহমানিয়া বি-বাড়িয়ার মুহতামিম মাওলানা মাওলানা মুহসিনুল হক, কুলিয়ারচর নূরুল উলুম মাদরাসার মুহতামিম মুফতি আব্দুল কাইয়ুম, আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকমের সম্পাদক মুফতি হুমায়ুন আইয়ুব, মাওলানা মুহাম্মদ ওমর ফারুক, মাওলানা মাহবুবুর রহমান, মুহাম্মদ আলী সোহাগ, মাওলানা আব্দুর রহিম কাসেমী, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা শাব্বির আহমাদ, হাফেজ মাওলানা নেয়ামাতুল্লাহ, হাফেজ মাওলানা যোবায়ের, মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুন নুর, মাওলানা গাজী সানাউল্লাহ রহমানী, মাওলানা উবায়দুল্লাহ আনোয়ার, মাওলানা নূর মুহাম্মদ, মাওলানা মোস্তফা কামাল প্রমুখ।
এ ছাড়াও আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে ভৈরব ও তার পার্শবর্তী এলাকা থেকে প্রায় কয়েক শতাধিক উলামায়ে কেরাম ও মুসল্লি উপস্থিত ছিলেন।
আলেমদের প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ দেখিয়ে দর্শক শ্রোতাদের সবান্ধব উপস্থিতিতে সন্তুষ প্রকাশ করেছেন ভৈরব ইমাম ও উলামা পরিষদের সভাপতি মাওলানা আব্দুল্লাহ আল আমিন।
দেশের তিন সর্বজন শ্রদ্ধেয় ইসলামি ব্যক্তিত্বের স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের সার্বিক পরিচালনায় ছিলেন ভৈরবের আল কুরআন একাডেমির প্রধান পরিচালক মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন।
-এএ