আওয়ার ইসলাম: হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির ও দারুল উলুম হাটহাজারীর মহাপরিচালক শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ; আহমদ শফী বলেছেন, ইসলামের মৌলকি স্তম্ভ হলো পাঁচটি। যারা এ পাঁচ স্তম্ভ মেনে চলে তারা আস্তিক। যারা মানে না তারা নাস্তিক। এই নাস্তিকরাই ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। কাদিয়ানীরা খতমে নবুওয়ত স্বীকার করে না, তাই তারা কাফের। তারা নিজেদের আহমদীয়া মুসলিম পরিচয় দিয়ে জনগণকে ধোঁকা দিচ্ছে। এরা ইসলামের পরিভাষা ব্যবহার করতে পারে না।
আজ শুক্রবার জুমার পর চট্টগ্রাম জমিয়তুল ফালাহ ময়দানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের উদ্যোগে দু’দিনব্যাপী শানে রেসালত সম্মেলনের শেষ দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, কাদিয়ানী সম্প্রদায়কে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করুন। নাস্তিকদের শাস্তির আইন সংসদে পাশ করুন। অন্যথায় রাসূল সা. এর খতমে নবুওয়তের হেফাজতের জন্য আমরা কঠিন আন্দোলনের ডাক দিতে বাধ্য হবো।
তিনি বলেন, আল্লাহর কুরআনের বিধানেই জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। অন্য কোন তন্ত্র-মন্ত্রে শান্তি আশা করা যায়না। আমরা যদি রাসূল সা.এর প্রকৃত অনুসরণ করে চলি তাহলে সমাজে হানাহানি, রক্তপাত থাকবেনা। দেশের নেতৃত্ব যাদের হাতে তাদের অন্তরে আল্লাহর ভয় না থাকার কারণে যে কোনো অন্যায়, অনাচার, পাপাচার ও জুলুম নিপীড়ন করতে তারা কুণ্ঠাবোধ করছেনা। এটা দেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়। তাই মুসলমানদেরকে খোদাভীরু নেতৃত্ব সৃষ্টি করতে হবে।
আল্লামা আহমদ শফী তাওহিদী জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, শিরকমুক্ত স্বচ্ছ ঈমান-আকীদা ও আমলে সালেহ মুসলমানের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। মহান আল্লাহর দরবারে কবুল হওয়ার জন্য বিদআতমুক্ত আমল হতে হবে। কুরআন-হাদিসে হালাল হারাম, সত্য-মিথ্যা, হক-বাতিল, ঈমান-কুফর-শিরক বিদআত প্রতিটি বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে বিধৃত হয়েছে। নামাজ যাবতীয় অন্যায়, অশ্লীলতা থেকে মানুষকে মুক্ত রাখে। জিকির মানুষের কলব পরিশুদ্ধ করে। ইবাদতে বন্দেগীতে অগ্রহ তৈরী হয়। আল্লাহর রেজামন্দী লাভ হয়। তাই সবাইকে ইবাদ বন্দেগীতে মনোযোগী হওয়ার আহবান জানাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, নারীরা সমাজের অর্ধেক। তাদের নিরাপত্তার জন্য আল্লাহ পর্দার বিধান জারী করেছেন। পর্দা পালনেই তাদের নিরাপত্তার গ্যারান্টি। আল্লাহর আইন না মানলে খাঁটি মুমিন হওয়া যায় না।
এসময় তিনি উপস্থিত জনসাধরণকে বায়ত করা এবং সুদ. ঘুষ, দুর্নীতি, চুরি, ডাকাতি, খুন-রাহাজানী এবং মানুষের হক নষ্ট না করার অঙ্গিকার নেন।
শা’নে রেসালত সম্মেলনের সমাপনি দিবসে সভাপতিত্ব করেন, যথাক্রমে হেফাজত মহাসচিব আল্লামা হাফেজ জুনাইদ বাবুনগরী, মাওলানা সরোয়ার কামাল আজিজী, মাওলানা ফোরকানুল্লাহ খলিল, মাওলানা মোহাম্মদ শফী বাথুয়া।
এতে বক্তব্য রাখেন, আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়তের মহাসচিব মাওলানা হাফেজ নুরুল ইসলাম, মাওলানা আবদুল বাসেত খান, ড. এবিএম হিজবুল্লাহ, মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ ফয়জুল্লাহ, মাওলানা আজিজুল হক আল মাদানী, মাওলানা মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন, মুফতি রহিমুল্লাহ কাসেমী, মাওলানা ইয়াকুব ওসমানী, মুফতি মাহমুদ হাসান গুনবী, মাওলানা লোকমান হাকীম, মাওলানা মুফতি কুতুব উদ্দিন নানুপুরী, মাওলানা শামসুদ্দিন আফতাব প্রমূখ।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন, মাওলানা মঈনুদ্দিন রুহী, মাওলানা আনাস মাদানী, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, হাফেজ মোহাম্মদ ফায়সাল, আনম আহমদুল্লাহ।
সম্মেলনে দেশ ও মুসলিম উম্মাহর কল্যান কামনা করে দোয়া ও মুনাজাত পরিচালনা করেন শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী।
মাওলানা নুরুল ইসলাম বলেন, মুসলমানদের ঈমান-আক্বিদা বিনষ্ট করার বহুমুখী চক্রান্ত চলছে। কাদিয়ানীবাদ মুসলিম উম্মাহর জন্য জঘণ্যতম ফিতনা। এই ফিতনা প্রতিরোধে আলেমসমাজ ও ধর্মপ্রাণ জনগনকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
-এটি