আওয়ার ইসলাম: মূলধারার গণমাধ্যমে ইসলামপন্থীদের অবস্থান সুদৃঢ় করার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন আলোচনা সভার বক্তারা। তারা বলেছেন, গণমাধ্যমের যে চরিত্র তা রাতারাতি পাল্টানো সম্ভব না। এজন্য পরিকল্পনা করে গণমাধ্যমের সঙ্গে ইসলামপন্থীদের সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। নিজস্ব মিডিয়া গড়ে তোলা এবং যোগ্য লোকদের বিভিন্ন গণমাধ্যমে ঢুকিয়ে দেয়ার দ্বারা এটা সম্ভব।
১৫ নভেম্বর (শুক্রবার) বাদ মাগরিব চট্টগ্রামের জাগৃতি লেখক ফোরাম নগরীর তালিমুল উম্মাহ গার্লস মাদরাসা মিলনায়তনে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। ‘একপেশে মিডিয়া: আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় লেখক, গবেষক ও সাংবাদিকরা বক্তব্য দেন। বাংলাদেশ ইসলামী লেখক ফোরামের দায়িত্বশীলদের সফর উপলক্ষে জাগৃতি লেখক ফোরাম এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আলোচকরা বলেন, গণমাধ্যমের নিজস্ব চরিত্র বলতে কিছু নেই। মূলত মালিকদের চরিত্রই সংবাদ মাধ্যমের চরিত্র হয়ে থাকে। আজকে যাদেরকে ইসলাম বিদ্বেষী মিডিয়া মনে করা হয় কালকে যদি তাদের মালিকানা আমরা গ্রহণ করতে পারি তাহলে তা ইসলামি মিডিয়ায় পরিণত হবে। মূলত শতকোটি টাকা ব্যয় করে একজন মালিক তার মিশন ও ভিশন বাস্তবায়নের জন্য মিডিয়ায় বিনিয়োগ করে থাকে। সুতরাং তার কাছ থেকে ইসলামের পক্ষের কিছু আশা করা সমীচীন নয়।
বক্তারা বলেন, বর্তমানে মিডিয়া অনেক শক্তিশালী। মিডিয়াকে বলা হয় দ্বিতীয় খোদা। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, এখন মিডিয়া তার যথাযথ ভূমিকা পালন করে না। এখন মিডিয়াতে যারা চাকরি করেন তাদেরকে মালিকের অনুগত হয়ে থাকতে হয়। মালিকপক্ষ যা চায় তার বিপক্ষে করার কোনো ক্ষমতা সাংবাদিকের থাকে না।
তারা বলেন, নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া বা একপেশে মিডিয়া থেকে মুক্তি পেতে হলে বাস্তবধর্মী কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষত দুটি পদক্ষেপ গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন। প্রথমত মিডিয়ার মালিকানা গ্রহণ করতে হবে। দ্বিতীয়ত মিডিয়াতে কাজ করার মতো যোগ্য লোক তৈরি করা। এজন্য আমাদেরকে যোগ্য লেখক ও সাংবাদিক তৈরির প্রতি মনোনিবেশ করতে হবে।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর, বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিক ফরিদুদ্দিন ফারুক। মুখ্য আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী লেখক ফোরামের সভাপতি এবং দৈনিক ঢাকা টাইমসের বার্তা সম্পাদক জহির উদ্দিন বাবর।
এছাড়া বার্তা২৪ ডটকমের আউটপুট এডিটর মুফতি এনায়েতুল্লাহ, বাংলাদেশ ইসলামী লেখক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মুনীরুল ইসলাম, সহসাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান খসরু প্রমুখ বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন জাগৃতি লেখক ফোরাম চট্টগ্রামের সভাপতি মাওলানা আবিদুর রহমান তালুকদার। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মাওলানা আবদুল্লাহ আল-মামুন।
আরও বক্তব্য দেন সার্দান ইউনিভার্সিটির প্রফেসর আলাউদ্দিন, জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়ার শিক্ষক মুফতি সলিমুদ্দিন মাহদি, মাওলানা কুতুবুদ্দিন, মাওলানা তানভীর সিরাজ প্রমূখ।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক মাওলানা মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ, তালিমুল উম্মাহ গার্লস মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা এনামুল হক, জামিয়া দারুল মা’রিফের সম্মানিত শিক্ষক মাওলানা মাহমুদ মুজিব, মাসিক আত-তাওহীদের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মাওলানা সগির চৌধুরী প্রমুখ।