আওয়ার ইসলাম: ‘‘একুশ শতকের পৃথিবী যে সব সংকট ও জটিলতায় আক্রান্ত, তা থেকে উত্তরণের কোনো গ্রহণযোগ্য আদর্শ তালাশ করছে বিশ্বমানবতা। বহু চটকদার শ্লোগান নিয়ে বহু মতবাদ ময়দানে এসেছে, কিন্তু মানুষের প্রত্যাশিত শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে পারে নাই। বরং বিজ্ঞান ও তথ্য-প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মানবতার দুর্দশা ও অবক্ষয়। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য বিশ্বনবী মুহাম্মদ সা. এর জীবনাদর্শ অনুসরণের বিকল্প নেই।”
৮ নভেম্বর (শুক্রবার) মাদানীনগরের মা’হাদুশ শাইখ আল ইসলামীয়ায় অনুষ্ঠিত একুশ শতকের পৃথিবী ও সীরাতে রাসূলের পয়গাম শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা উপরোক্ত কথাগুলো বলেছেন।
এ সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের মহাপরিচালক, মাওলানা যুবায়ের আহমদ চৌধুরী। মূখ্য আলোচক ছিলেন কবি মুসা আল হাফিজ।
মাওলানা আলাউদ্দীনের সভাপতিত্বে ও মাওলানা আরিফ বিল্লার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মাওলানা ওবায়দুল কাদির কাসেমী নদভী।
প্রধান অতিথির আলোচনায় মাওলানা অধ্যাপক যোবায়ের আহমদ চৌধুরী একুশ শতকে পৃথিবীতে বুদ্বিবৃত্তিক লড়াই ও পশ্চিমাবিশ্বের ইসলামবিরোধী অপপ্রচারের মোকাবেলায় ওলামায়ে কেরামকে গভীর অধ্যয়ন ও গবেষণায় রত হওয়ার প্রতি আহবান জানান ।
আলোচনায় মুসা আল হাফিজ বলেন, একুশ শতকের সমাজ ও রাষ্ট্রচিন্তায় ইতিবাচক যা কিছু আছে. মহানবী সা. এর মদীনা রাষ্ট্রে এর বাস্তব অনুশীলন ছিল। যেমন মানুষের মৌলিক অধিকার, আইনের শাসন, বহুত্ববাদ, উদারনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ইত্যাদি। সেখানে উন্নয়নের কেন্দ্রে ছিলো মানুষ ও মনুষত্য। মানবীয় মহান গুণাবলীর বিকাশ ও সুরক্ষায় সেই সমাজ ও রাষ্ট্র এমন সফলতা দেখিয়েছিলো, যার প্রভাবে গোটা মানব জাতির ইতিহাসে এসেছিলো মানবিক অভ্যুত্থান।
তিনি বলেন, আজকের পৃথিবীতে সবচে’ নিগৃহিত ও উপেক্ষিত বিষয়টি হচ্ছে মানবতা। বস্তুগত উন্নয়ন হলেও, যোগাযোগের উন্নয়ন হলেও মনুষত্ব ও মানুষের উন্নয়ন আজকের পৃথিবী প্রত্যক্ষ করছে না। ফলে জ্ঞান -বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি যেখানে আশীর্বাদ হবার কথা, সেখানে একে কাজে লাগিয়ে দুনিয়াকে ধ্বংসের উপকরণ তৈরী করা হচ্ছে।
“অস্ত্রপ্রতিযোগীতা, শক্তিবাজী, শোষণ-লুণ্ঠন, দুর্বল ব্যক্তি,সমাজ ও রাষ্ট্রের অধিকার হরণ, ইনসাফের চরম অভাব, মূল্যবোধের অবক্ষয়, জোর যার মুল্লুক তার ইত্যাদি আজকের পৃথিবীর স্বাভাবিক বাস্তবতা। বিশ্বায়নের নামে পৃথিবীকে গ্রাম বলে অভিহিত করা হলেও মানুষে মানুষে, জাতিতে জাতিতে বিভেদ, বৈষম্য, বর্ণবাদ ও হানাহানি কেবল বেড়েই চলছে।”
“এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য প্রিয় নবী সা. যে উন্নত ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র ও দুনিয়া গঠনের রূপরেখা দিয়ে গেছেন, তার অনুসরণের বিকল্প নেই।” যোগ করেন মুসা আল হাফিজ।
আরএম/