শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


ভোলায় তৌহিদি জনতার উপর হামলার প্রতিবাদে কাতার প্রবাসিদের সংবাদ সম্মেলন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সুফিয়ান ফারাবী
বিশেষ প্রতিবেদক

ভোলার ঘটনার প্রতিবাদে কাতারের বাংলাদেশের প্রবাসীরা একটি প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে। বিভিন্ন টিভি চ্যানেল, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার উপস্থিতিতে এ প্রতিবাদ সভা আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে কাতারের স্থানীয় ইমাম ও খতিবদের বক্তব্যের শেষে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে কথা বলেন, কাতার সফররত বাংলাদেশের শীর্ষ আলেম, মজলিসে তালিমুস সুন্নাহর মহাসচিব, কওমী ফোরাম জৈষ্ঠ সমন্বয়ক, মারকাযুত তারবিয়াহ বাংলাদেশের প্রিন্সিপাল পীরে কামেল আল্লামা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী।

আল্লামা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ূবী বলেন, অনুষ্ঠানটির নাম দেয়া হয়েছে প্রতিবাদ সভা। কিন্তু আমি মনে করি এটি শুধু প্রতিবাদ সভা নয়, এটি রাসূলের স. প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ-এর সভাও বটে। অনলাইনে আমি নিউজগুলো দেখে নিরবে কেঁদেছি, অশ্রু ঝরিয়েছি।

মুসলমানদের রক্তের দাম কতটা কমে গেলে এমন চিত্র আমাদেরকে বারবার দেখতে হয় বিষয়টি নিয়ে ভাবা দরকার। এমন কুরবানি মুসলমানরা যুগে যুগেই দিয়ে এসেছেন। এটাই আসলে মুসলমানদের ঈমান।

যারা রক্ত দিয়েছেন তারা ঈমানি দায়িত্ব পালন করেছেন। আর যারা প্রতিবাদ করেছেন তারাও একত্ববাদ-রেসালাতের সাক্ষ্য দিচ্ছেন।

আগত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আজকে এখানে যেসকল সাংবাদিক ভাইয়েরা এসেছেন, তারা নিশ্চয়ই কোনো সরকারকে গদি থেকে নামানোর জন্য আসেননি। তারাও এসেছেন আল্লাহ ও তাঁর রসূলের ভালোবাসা বহিঃপ্রকাশে।

তারা তাদের ঈমানী দায়িত্ব পালনে এখানে এসেছেন বলে আমার বিশ্বাস। এজন্য প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ার যে সকল বন্ধুরা এসেছেন তাদেরকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আল্লাহ তায়ালা আপনাদের উত্তম প্রতিদান দান করুন।

সংবাদ সম্মেলনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে আল্লামা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ূবি বলেন, কিছু মৌলিক কথা মিডিয়ার মাধ্যমে আমাদের কথাগুলো প্রশাসন, পুলিশ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ সারা বিশ্বের সকল মানুষের কাছে পৌছে দিতে চাই।

তারপর আল্লামা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ূবি ইসলাম বিদ্বেষীদের উদ্দেশ্যে এসকল বার্তা প্রেরণ করেন- ১- রক্ত ঝরিয়ে আমাদেরকে দমানো যাবে না। আমরা সে’ জাতি নই। বদর থেকে শুরু করে উহুদ খন্দক এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু সালামের ইজ্জতের হেফাজতের উদ্দেশ্যে শাপলা চত্বরের রক্ত এবং পরিশেষে ভোলার বোরহানউদ্দিনে রক্ত শেষ রক্ত নয়।

আমরা রক্ত দিয়েই বিজয়ের ঝান্ড-কেতন বারবার উড়িয়েছি। এটা আমাদের অতিত ইতিহাস। শুধু ৬ জন নয় ৬ কোটি মানুষের রক্ত যদি যায় তবুও বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা রাসুলের ইজ্জত হেফাজত করবে।

২- আমরা মুসলমানরা দলে দলে বিভক্ত হলেও আমরা একটা শরীরের মতো। আমরা পরস্পরের রক্তের সম্মান ও মূল্য দিতে জানি। আমরা আমাদের চলার পথে হুদায়বিয়ার সেই সন্ধিকে কেয়ামত পর্যন্ত আমাদের সামনে রাখব। সুতরাং এর মাধ্যমে সকল কুফরি শক্তিকে সতর্ক বার্তা দেয়া হচ্ছে।

৩- যে সকল ভাইয়েরা রাসূল সা.-এর অবমাননাকারির শাস্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে শাহাদাত বরণ করেছেন তাদের রক্তের প্রতিশোধ নিতে সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করতেও আমরা প্রস্তুত থাকবো। যতক্ষণ পর্যন্ত সরকার তাদের ন্যায্য বিচার না করে।

৪- প্রবাসীরা শুধুমাত্র দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্যই শ্রম দেন না, বরং তারা মুসলমানদের রক্ষা করার জন্য পরিশ্রম করেন। দেশের মুসলমানদের ঈমানী লোকসান হবে এটা প্রবাসীরা বরদাশত করবে না।

৫-ইসকন সহ যে সকল সংগঠন মুসলমানদের ঈমান ধ্বংসের পাঁয়তারা করছে তাদেরকে মুসলমানদের ভোটে বিজয়ী সরকার প্রতিপালন করবে এটা আমরা সহ্য করব না।

তাদেরকে সরকার প্রতিপালন করবে আর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কাঠামোগত পরিবর্তন যারা আছে তারা চেয়ে চেয়ে দেখবে এমনটি হবে না। এর জন্য যদি কোন প্রকার কোরবানি দিতে হয় তাহলে প্রবাসে থাকা সকল মুসলমান সেই কোরবানি দিতে প্রস্তুত।

এরপর তিনি বাংলাদেশ সরকারের কাছে তিনটি দাবি তুলে ধরেন- ১. নবী অবমাননাকারীর মৃত্যুদণ্ড আইন নিশ্চিত করতে হবে। এটিই আমাদের মৌলিক ও প্রধান দাবি। ২. যারা শহিদ হয়েছেন তাদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে। ৩. এবং যারা আহত হয়েছেন তাদের সুচিকিৎসার দিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনের শেষ পর্যায়ে তিনি আবারো সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেন, আমাদেরকে দলে দলে বিভক্ত ভাবলে ভুল হবে। বিভিন্ন ইস্যুতে আমাদের মত পার্থক্য থাকলেও তাওহিদ-রেসালাত বিষয়ে আমরা এক এবং আমরা ঐক্যবদ্ধ। মনে রাখতে হবে আমরা যদি জেগে যাই তাহলে পৃথিবীর কোন পরাশক্তি আমাদেরকে দমাতে পারবে না।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ