আওয়ার ইসলাম: বাবরি মসজিদ মামলার রায়ের আগেই ওই জায়গা নিজেদের বলে দাবি এবং রায়ের পরে জমি মুসলমানদের হাতে গেলে তা আইনবিরুদ্ধ হবে জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি হলফনামা দাখিল করেছে হিন্দু ধর্মাবলম্বী গ্রুপগুলোর আইনজীবীরা।
সেই হলফনামায় বিরোধপূর্ণ জমি রাম মন্দির নির্মাণের জন্য হস্তান্তর করার দাবি করে তারা বলছেন, অযোধ্যায় মসজিদ পুননির্মাণ বিচারবিরুদ্ধ। যেহেতু বাবরি মসজিদ নেই, কাজেই মুসলিম আবেদনকারীরা জমি ও ন্যায়নির্ভরতার অধিকারী হবেন না।
তাদের দাবি, এটি ভগবান রামের জন্মস্থান। পবিত্র স্থান। জমিটি মুসলিমদের দেওয়া উচিত নয়। এমনটা করা হলে আইনবিরুদ্ধ হিসাবে বিবেচিত হতে পারে।
‘অযোধ্যা একটি পবিত্র তীর্থস্থান। সেখানে মন্দির বা প্রতিমা অনুপস্থিত থাকলেও এটি হিন্দুদের বিশ্বাস যে, অযোধ্যা ঐশ্বরিক ও আধ্যাত্মিকতার তাৎপর্য বহন করে’-হলফনামায় বলা হয়।
হলফনামায় তারা আরও জানায়, সেখানে মসজিদ পুননির্মাণ করা অন্যায়, অন্যায্য এবং হিন্দু ধর্ম, ন্যায়বিচার এমনকি ইসলামী আইনসহ সমস্ত নীতিগুলির পরিপন্থী হবে। যে অঞ্চলটি বিতর্কের মধ্যে রয়েছে, সেটি একটি অবিচ্ছেদ্য একক এবং অবিভাজ্য। তাই পুরো অঞ্চলটি রামের জন্মস্থান হিসেবে উপাসনার জন্য দিয়ে দেওয়া উচিত।।
গত বুধবার ভারতের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ কয়েক দশক ধরে চলা এই মামলায় চল্লিশ দিনের শুনানি শেষ করেছেন এবং আগামী ১৭ নভেম্বর এই মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছেন।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের সায় নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে নিযুক্ত মধ্যস্থ কমিটি বুধবার একটি রিপোর্ট জমা দেয়। যেখানে বলা হয় যে, সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড জমির দাবি ছাড়তে রাজি হয়েছে।
কিন্তু মুসলিম আরেক পক্ষ জানায়, জমির দাবি ছাড়ার প্রস্তাবে তাদের কোনো সায় নেই। সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড যে প্রস্তাব দিয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, তাতে তারা হতবাক।
অযোধ্যা মামলায় মুসলিম পক্ষের প্রধান মামলাকারী এম সিদ্দিকের আইনজীবী এজাজ মকবুল জানান, সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত মধ্যস্থ কমিটির সঙ্গে তাদের কোনও সমঝোতা হয়নি। যদি কোনও সমঝোতা হয়ে থাকে, তবে তা হয়েছে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের সঙ্গে।
এজাজ বলেছেন, সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হওয়া রিপোর্টে সমঝোতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু আমরা এই ধরণের কোনও প্রস্তাবে রাজি নই। যেভাবে মধ্যস্থতা হয়েছে এবং মীমাংসার মাধ্যমে জমির দাবি ত্যাগের কথা বলা হচ্ছে, তাতে আমরা সম্মত নই।
তার কথার পক্ষে যুক্তি দিয়ে এজাজ বলেন, মামলার প্রধান হিন্দু পক্ষ প্রথমেই জানিয়েছিল, তারা কোনও সমঝোতায় যেতে রাজি নয়। মীমাংসায় নারাজ ছিল মুসলিম পক্ষও। এক মাত্র ব্যতিক্রম ছিল সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড। এই পরিস্থিতিতে সমঝোতার ব্যাপারে কোনও প্রস্তাব গ্রহণ সম্ভব নয়।
তবে মধ্যস্থতা ও যৌথ বন্দোবস্তের পরিকল্পনাকে হিন্দু ও মুসলমান উভয়ের জন্য ‘জয়’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন সুন্নি পক্ষের আইনজীবী শহীদ রিজভী।
আরএম/