আওয়ার ইসলাম: খুব সামান্য অসুস্থ হলেই আমরা আজকাল অ্যান্টিবায়োটিকের শরণাপন্ন হই। অথচ অ্যান্টিবায়োটিকের মারাত্মক ক্ষতির কথা অনেকেরই অজানা। গবেষকরা বলছেন, এর মাধ্যমে নিজের অজান্তেই আমরা ডেকে আনছি নিজেদের ভয়াবহ বিপদ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলছে, যখন-তখন অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার এই প্রবণতাই মানুষকে ঠেলে দিচ্ছে নিশ্চিত বিপদের দিকে। গবেষণার ফল দেখে শিউরে উঠেছেন বিজ্ঞানীরাও। বিশ্বজুড়ে তাই সচেতনতার ডাক দিয়েছেন অনেক চিকিৎসক ও চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের সংগঠন।
ভারতের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সুবর্ণ গোস্বামী বলছেন, এই অকারণ ও অত্যধিক অ্যান্টিবায়োটিকের কারণে মেদ তো বাড়ছেই, তার সঙ্গে শরীরে সুপারবাগসের উপস্থিতি সমস্যায় ফেলছে রোগী ও চিকিৎসককে। যখন-তখন ইচ্ছা মতো অ্যান্টিবায়োটিক নিতে নিতে শরীরে তৈরি হচ্ছে ‘অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স’ বা ‘অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স’ (এএমআর)। এটাই ডেকে আনছে আগামী দিনের গুরুতর বিপদ।
চিকিৎসকদের আশঙ্কা, সতর্ক না হলে এমন একটা সময় আসবে যখন অধিকাংশ সুপারবাগের সঙ্গে লড়ার মতো কোনো ওষুধই পাওয়া যাবে না। ফলে বহু রোগের চিকিৎসা মিলবে না।
এএমআর-এর ক্ষতির নিরিখে বিশ্বের প্রথম পাঁচের মধ্যে রয়েছে ভারত। ডব্লিউএইচও-এর সমীক্ষা অনুযায়ী, দেশটিতে পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের মৃত্যুর ২৫ শতাংশ ঘটছে নিউমোনিয়া থেকে। যা সারানো যাচ্ছে না এএমআর-এর কারণেই।
ফ্যাট, খিদে এসব সামলায় ঘ্রেনিল নামের হরমোন। শরীরের ভাল কিছু জীবাণুর উপস্থিতিতে এর কাজকর্মের গতি বাড়ে। কিন্তু অ্যান্টিবায়োটিকের ঘন ঘন ব্যবহার এই ভাল জীবাণুগুলোকে মেরে ফেলে। ফলে ওজন বাড়ে। এদের মৃত্যুতে পাকস্থলীতে ইস্ট সংক্রমণ বেড়ে শরীরে পানি যেমন জমে, তেমনই থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্যও নষ্ট করে।
কাজেই বিজ্ঞানীদের পরামর্শ হলো, কথায় কথায় অ্যান্টিবায়োটিক না খেয়ে ভাল খাওয়া–দাওয়া করে, পরিমিত ব্যায়াম করে ও নিয়ম মেনে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো দরকার৷ তাতে রোগ যেমন কম হবে, বশে থাকবে ওজনও৷ তাই সচেতনতার বিকল্প নেই।
-ওএএফ